স্টাফ রিপোর্টার, কাটোয়া: টানা বর্ষণ। ভাগীরথী নদী কানায় কানায় পূর্ণ। গ্রামীণ এলাকার ছোট নদী-নালাগুলিও ভরে রয়েছে। অতিরিক্ত বর্ষণে সবজি চাষে ক্ষতি হলেও এবছর মুখে হাসি পাটচাষিদের। কারণ পর্যাপ্ত জলের কারণে পাট জাঁক দেওয়ায় চিন্তা নেই। উপরন্তু অতিরিক্ত জলের জন্যই পাটের গুনগত মান এবছর খুব ভালো হবে। তাতে লাভও হবে প্রায় দ্বিগুণ। এমনটাই আশা করছেন কাটোয়ার পাটচাষিরা।
পাটের গুণগত মান নির্ভর করে পাটের রঙের উপর। উন্নতমানের পাট পেতে হলে জাঁক দেওয়ার সময় প্রয়োজন হয় পর্যাপ্ত জলের। কিন্তু বিগত দু’বছরে সেভাবে বৃষ্টি হয়নি। খালবিল, নালা, গ্রামীণ এলাকার জলাশয়গুলিতে সেভাবে জল ছিল না। তাই পাটের জাঁক দেওয়ার সময় চাষিদের প্রচণ্ড বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়েছিল। এমনকি কৃষিজমিতে খাল কেটে সাবমার্সিবল পাম্পের জল কিনে কোনও কোনও চাষিকে পাট জাঁক দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়েছিল। জলের সংকটের কারণে বিগত দু’বছর ভালো মানের পাট পাননি তাঁরা। এবছর উল্টো ছবি। তাতেই মুখে হাসি পাট চাষিদের। ভাগীরথীর তীরবর্তী এলাকায় অনেক পাটচাষ হয়। নদীর জল অনেক বেড়েছে। ছাড়িগঙ্গা থেকে নিচু জমিগুলিতে জল জমে রয়েছে। তাই জাঁক দেওয়ায় কোনও সমস্যা নেই।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া মহকুমা এলাকায় গড়ে ৯৭৫-৯৮০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়। তার মধ্যে কাটোয়া ১ ব্লকে প্রায় ১৭০ হেক্টর, কাটোয়া ২ ব্লকে ৪৬৫ হেক্টর, কেতুগ্রাম ১ ব্লকে প্রায় ৬৫-৭০ হেক্টর, কেতুগ্রাম ২ ব্লকে ২১৫ ও মঙ্গলকোটে ৬০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়। এছাড়া পূর্বস্থলী -২ ব্লকে উল্লেখ্যযোগ্য হারে পাট চাষ হয়। প্রায় ৪০০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয় পূর্বস্থলী ২ ব্লকে।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পাটগাছ তৈরি হতে সময় লাগে প্রায় ১২০ দিন। এরপর পাটগাছকে তুলে জলে জাঁক দিতে হয়। ১২০ দিনের বেশি পেরিয়ে গেলে তন্তুর মান ও রং খারাপ হয়ে যেতে পারে। আর পাট জাঁক দিতে লাগে প্রচুর জল। বিশেষ করে যেখানে জলের অল্প স্রোত থাকে সেই জলাশয় হল সবচেয়ে উৎকৃষ্ট। তাতে পাটের মান খুব ভালো হয়।
কাটোয়া এলাকায় সাধারণত পাট বিক্রির কোনও সমস্যা নেই। জুট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেডের কাটোয়া আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে পাট ক্রয় করা হয়। গুনগত মান অনুযায়ী দাম পাওয়া যায়। ২০২৪-’২৫ বর্ষে কাটোয়াতে চাষিদের থেকে এক হাজার কুইন্টাল পাট সংগ্রহ করেছিল জুট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া। এবছর সেই পরিমাণ বাড়বে বলেই অনুমান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.