সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গ্রামের শান্ত পরিবেশে মা কালীর মন্দির। দেবীর সামনে তিনটি ঘট। একদিকে কালী, মাঝে শীতলা ও পাশে দেবী চণ্ডীর ঘট। ইছামতীর গলদা চিংড়ি ছাড়া হয় না দেবীর পুজো। এই মন্দির থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে কালীবাড়িতে থাকা দেবী সম্পর্কে বোন। তাঁদের এক মন্দির থেকে অন্য মন্দিরে যাতায়াতের গল্প প্রচলিত রয়েছে এলাকায়। বসিরহাটের ইটিন্ডার সিদ্ধেশ্বরী মায়ের পুজো ঘিরে রয়েছে একাধিক কাহিনি।
কথিত রয়েছে, আজ থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বন-জঙ্গল ঘেরা এলাকা দিয়ে নৌপথে শোহরের ধূমঘাট থেকে টাকি যাচ্ছিলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। দীর্ঘযাত্রা পথে ক্লান্ত হয়ে পড়েন তিনি। বসিরহাট শহরের উত্তর-পূর্ব দিকে ইছামতীর পাড়ে একটি জায়গায় রাতে বিশ্রাম নেওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। ভোরে ইছামতী নদীতে সূর্যোদয়ের রং দেখে মুগ্ধ হন রাজা। সিদ্ধান্ত নেন এই এলাকায় গঞ্জ তৈরি করবেন তিনি। নাম হবে ইটিন্ডা। পাশাপাশি টাকির জমিদার পরিবার রায়চৌধুরীদের কালীমন্দির তৈরির নির্দেশ দেন তিনি। তৈরি হয় মা সিদ্ধেশ্বরীর মন্দির। কৃষ্ণচন্দ্রের ইচ্ছায় এলাকা পরিষ্কার করে তৈরি হয় গঞ্জ। তালে তাল মিলিয়ে গড়ে উঠছিল সিদ্ধেশ্বরী মায়ের মন্দির। প্রথমে বাঁশ ও বিচুলি দিয়ে তৈরি হয়েছিল মন্দির। পরে তৈরি হয় পাকা মন্দির।
মায়ের পুজোতেও রয়েছে বিশেষ পদ্ধতি। দেবীর ভোগ অন্যান্য কালী ভোগের থেকে অনেক আলাদা। কালীপুজোর রাতে ইছামতী থেকে তোলা গলদা চিংড়ি। সেই দিয়েই হয় মায়ের ভোগ। সারারাত চলে মায়ের পুজো। ভিড় জমান গ্রামবাসীরা। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানাচ্ছেন, “এই মন্দির থেকে ৫ কিলোমিটার দূরের গ্রাম সংগ্রামপুর। সেখানে রয়েছে দক্ষিণা কালী মন্দির। তিনি ইটিন্ডার সিদ্ধেশ্বরী কালী মায়ের সম্পর্কে বোন হন। এক মন্দির থেকে অন্য মন্দিরে তাঁদের যাতায়াতের গল্পও প্রচলিত রয়েছে। দিনকাল বদলে গেলেও আজও পুরনো রীতিমেনেই পুজো হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.