রাজা দাস, বালুরঘাট: বাইরের আলোর প্রবেশ নেই। তা আটকে প্রদীপের আলোতেই পূজিত হন দক্ষিণ দিনাজপুরের ভিকাহারের মন্দিরবাসিনী কালী। অন্তত ৬০০ বছরের প্রাচীন এই কালীপুজোয় নিয়ম আজও অটুট। এতকাল ধরে বাইরের কোনও আলো জ্বালানো হয় না। শুধুমাত্র কালী মূর্তির সামনে প্রদীপ জ্বালিয়ে পুজো হয়। ভক্তরাও সেই আলোতেই ঠাকুর প্রণাম থেকে পুজো, সবই করেন। এই নিয়মে এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যতিক্রম ঘটেনি। দেবী জাগ্রত, এই বিশ্বাসে প্রাচীন এই কালীপুজোয় ভিড় জমান ভিনজেলার ভক্তরাও।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে একাধিক প্রাচীন ও ইতিহাসের নানা নিদর্শন। এর মধ্যে রয়েছে তপন থানার অন্তর্গত ভিকাহারের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মন্দিরবাসিনী কালী মন্দির। কথিত রয়েছে, অন্তত ৬০০ বছর আগে তপন থানার অন্তর্গত ভিকাহার অঞ্চলের এই জঙ্গলে তপস্যা করতেন এক তান্ত্রিক। স্বপ্নাদেশে সেই তান্ত্রিক একটি মাটির মন্দির তৈরি করেন। সেখানে পঞ্চমুণ্ডির আসনে শুরু করেন কালীপুজো।
এই মন্দিরের ভেতরে মায়ের পুজোর সময় বাইরে থেকে কোনও আলো প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। এমনকী দরজা-জানালা বন্ধ করে, কাপড় বা পর্দাকে জলে ভিজিয়ে বাইরের আলো প্রবেশের সমস্ত ছিদ্র আটকে দেওয়া হয়। তবে পুজোর সময় মন্দিরের ভিতর জ্বালানো হয় প্রদীপ। কাঁচা মন্দিরটি পরবর্তীতে পাকা করা হয়েছিল বটে, কিন্ত সেটিও অত্যন্ত প্রাচীন। যা বটবৃক্ষের তলে প্রাচীন অস্ত্বিত্বের স্মৃতিবহণ করছে আজও। অতীতের সেই নিয়ম এখনও অটুট।
মন্দিরের সেবায়ত সুভাষ সমাজদার। তিনি জানান, ”এখানে জাগ্রত মা। তাঁর পুজো দিতে এই মন্দিরে শিলিগুড়ি, মালদহ-সহ বিভিন্ন জেলার ভক্ত ভিড় করেন। তাঁরা মানত করেন। প্রত্যেক দীপান্বিতা অমাবস্যায় মন্দির পরিষ্কার করে পুজোর আয়োজন হয়। বাইরের আলো ভিতরে প্রবেশ বন্ধ করে পুজো করা হয়। বর্তমান যুগের কোনও আলোকবাতিও লাগানো হয় না মন্দিরে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.