সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: কৃষ্ণনগর কাণ্ডের পর কেটে গিয়েছে পাঁচ দিন। এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত দেশরাজ। এর মধ্যেই অভিযুক্ত দেশরাজের ফাঁসি চাইলেন মৃত ঈশিতার বাবা-মা। ঘটনার পর থেকে শোকে বিহ্বল বাবা দুলাল এবং মা কুসুম মল্লিক। কথা বলার সমস্ত ভাষা হারিয়েছেন তাঁরা। মেয়ের কথা উঠলেই চোখ ভিজে যাচ্ছে জলে। ঘটনার প্রায় পাঁচদিনের মাথায় আজ শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তাঁরা। বলেন, ”মেয়ে খুবই শান্ত স্বভাবের ছিল। কিছুই জানায়নি। অভিযুক্তের ফাঁসি চাই।” তবে অভিযুক্ত এখনও ধরা না পড়লেও পুলিশের তদন্তেই আস্থা রাখছে পরিবার।
গত সোমবার কৃষ্ণনগরে ভরদুপুরে বাড়িতে ঢুকে ঈশিতা মল্লিককে খুন করে অভিযুক্ত দেশরাজ। এমনকী তাঁর মা কুসুম মল্লিকের দিকেও বন্দুক তাক করে গুলি চালায় সে। কিন্তু বন্দুকে গুলি না থাকায় কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে যান বলে দাবি মৃত ঈশিতার মায়ের। একদিকে মেয়ে হারানোর যন্ত্রণা, অন্যদিকে ঘটনার পর থেকে আতঙ্কের মধ্যে কার্যত দিন কাটাচ্ছেন দুলাল এবং কুসুম মল্লিক। তাঁদের আরও দুই সন্তান আছে। যদিও ঘটনার পর থেকে পুলিশ সবসময় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলেই জানিয়েছে পরিবার।
তবে আক্ষেপ একটাই, মেয়ের সম্পর্কের বিষয়ে কিছুই জানতেন না তাঁরা। এদিন কুসুম মল্লিক বলেন, ”মেয়ে ছোট থেকে শান্ত স্বভাবের ছিল। সন্দেহের জায়গাই কোনওরকম তৈরি হয়নি। এই বিষয়ে কিছু জানতাম না।” অন্যদিকে দুলালবাবু বলেন , ” সবসময় সন্তানদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। আগে জানলে বাবা হিসাবে অবশ্যই যা করার তা করতাম।” এমনকী অভিযুক্ত দেশরাজের নাম কোনওদিন তাঁরা শোনেননি বলেও এদিন জানান দুলাল মল্লিক। অন্যদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। এমনকী উত্তরপ্রদেশে, দেশরাজের বাড়িতেও একটি টিম গিয়েছে বলে খবর।
অন্যদিকে তদন্তে বেশ কিছু চ্যাট, ই-মেল কৃষ্ণনগরের পুলিশের হাতে এসেছে। একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেশরাজের একটি মেসেজ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সেই গ্রুপে একটি বন্দুকের ছবি পোস্ট করে ‘ডেডবডি সুন’ ক্যাপশন দিয়েছিল দেশরাজ! কিন্তু কেন? সেটাই এখন খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। শুধু তাই নয়, পুলিশ জানিয়েছে, সম্পর্ক বাঁচাতে দেশরাজ ঈশিতাকে নানাভাবে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল করেছিল। কখনও নিজের হাত কাটা, গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার ভিডিও দেশরাজ তাঁকে পাঠিয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রের খবর। কিন্তু তাতেও মন গলেনি ঈশিতার। আর সেই কারণেই এই খুন? সেই সূত্রেই পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন এখন তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.