ছবি: প্রতীকী।
স্টাফ রিপোর্টার, কোচবিহার: ৭ আগস্টের পর কোনও বাঙালি হরিয়ানার ধানকোটে থাকতে পারবে না! অঘোষিত এই নির্দেশের পর তড়িঘড়ি যা হাতের কাছে পাওয়া যায় সেটুকু নিয়েই এক কাপড়ে হরিয়ানা ছেড়ে তুফানগঞ্জ পৌঁছল বাংলাভাষী শ্রমিকের দল। মোট ১০৩ জন বাংলাভাষী শ্রমিক হরিয়ানার ধানকোট ১০২ নম্বর সেক্টর থেকে ঘরে ফিরেছেন। আড়াই লক্ষ টাকা বাস ভাড়া দিয়ে ঘরে ফিরেও শ্রমিকদের চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট।
তুফানগঞ্জের নাককাটিগাছ গ্রাম পঞ্চায়েতের ধাদিয়াল এলাকার বাসিন্দা মফিজুল হক বলেন, প্রায় ছয় বছর আগে হরিয়ানার সেক্টর ১০২-এ তিনি গিয়েছিলেন। সেখানে আত্মীয়-স্বজন মিলে প্রায় সাতজন ছিলেন। ছেলেরা দিনমজুরি বা গাড়ি ধোয়ার কাজ করত। মহিলারা বিভিন্ন বাড়িতে গৃহ-সহায়িকার কাজ করে রোজগার করতেন। হঠাৎ করে দেখা যায় একের পর এক বাসিন্দাকে বাংলায় কথা বলার জন্য তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রাতে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে এবং তারপর মুক্তিপণ চাওয়া হচ্ছে। ফলে তারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে সেখানে মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে ৭ আগস্টের পর কোনও বাঙালিকে থাকতে দেওয়া হবে না। তাই একটি বাস তাঁরা প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা দিয়ে ভাড়া করেন। মোট ১০৩ জন তাঁরা কোচবিহারে ফিরে এসেছেন। বাসের ভাড়া চোকাতে পরিবারের প্রধানদের এখন নাকের জলে চোখের জলে অবস্থা।
মহম্মদ সুমন শেখ নামে হরিয়ানা থেকে বাসে ফিরে আসা এক বাংলাভাষী শ্রমিক বলেন, ‘‘কোনওমতে আমরা টিনের চালা করে হরিয়ানার গ্রামটিতে বসবাস করছিলাম। এখানে আমাদের কৃষিজমি নেই। অন্য রোজগারও তেমন কিছু ছিল না। সেই কারণেই কিছুটা ভালো রোজগারের আশায় যাওয়া। কিন্তু হরিয়ানার বিজেপি সরকার যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে, তাতে ফিরে না এলে আমাদের মার খেয়ে হাসপাতালে পড়ে থাকতে হত।’’বাসে তুফানগঞ্জ ছাড়াও কোচবিহারের অন্যান্য এলাকার কয়েকজন বাংলাভাষী শ্রমিক ছিলেন। ভবিষ্যতে এঁরা আর কেউ রাজ্যের বাইরে যেতে রাজি নন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.