Advertisement
Advertisement
Magrahat

করোনাকালে স্কুলছুটদের ক্লাসে ফেরানো, বাল্যবিবাহ রোধ, শিক্ষারত্ন পাচ্ছেন মগরাহাট স্কুলের প্রধান শিক্ষক

শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে তাঁকে এবছর শিক্ষারত্ন পুরস্কারে ভূষিত করবে রাজ্য সরকার।

Magrahat School's Head teacher will get sikharatna on this year
Published by: Subhankar Patra
  • Posted:September 3, 2025 6:24 pm
  • Updated:September 3, 2025 6:24 pm   

সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: কোভিড কাল। স্কুল বন্ধ। বাড়িতে আর্থিক অনটন। পেটের খিদের কাছে পড়াশোনা বিলাসিতা মনে হয়েছিল ওদের। কেউ করছিল পরিচারিকার কাজ। কারও পরিবার মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কোভিডের শিকলের বাঁধন কিছুটা কমতেই ভিন রাজ্যে পাড়ি দেন, ছেলেরা। ছাত্রছাত্রীদের স্কুলছুটের কারণ জানতে পেরেই এগিয়ে আসেন মগরাহাটের মড়াপাই সেন্ট প্যাট্রিকস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মতিন স্যর। শিক্ষক ও কর্মী, স্থানীয় ক্লাব সংগঠন, অভিভাবক, পঞ্চায়েত ও পুলিশ প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় বৈঠক করেন। রুখে দেন অনেক বাল্যবিবাহ। স্কুলছুটদের ফিরিয়ে আনেন বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে। এবার শিক্ষক দিবসে শিক্ষারত্ন পাচ্ছেন সেই প্রধান শিক্ষক আবদুল মতিন মল্লিক।

Advertisement

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মগরাহাটের মড়াপাই সেন্ট প্যাট্রিকস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুলবাবু। শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে তাঁর কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ধনধান্য অডিটোরিয়ামে রাজ্য সরকার তাঁকে এবছর শিক্ষারত্ন পুরস্কারে ভূষিত করবে।

করোনা কালে তাঁর স্কুলে ক্রমেই বাড়ছিল ড্রপ-আউটের সংখ্যা। নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির প্রায় ১০০ জনেরও বেশি ছাত্রছাত্রী স্কুল ছেড়ে দেয়। পারিবারিক আর্থিক সংকটের কারণে ছাত্ররা গোয়া, দমন, দিউ ও অসমের বিভিন্ন হোটেলে কাজে যোগ দেয়। ছাত্রীরা পরিচারিকার কাজও শুরু করে। এছাড়াও স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে গিয়ে বেশ কিছু অভিভাবক নাবালিকা ছাত্রীদের বিয়েরও বন্দোবস্ত করেন। এই কথা জানতে পেরে স্কুলছুটদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার জন্য উদ্যোগী হন আবদুলবাবু।

স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক ও কর্মী, স্থানীয় ক্লাব সংগঠন, অভিভাবক, পঞ্চায়েত ও পুলিশ প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় বৈঠক করেন। অভিভাবকদের সঙ্গে লাগাতার আলোচনা করে তাঁদের বোঝান উচ্চশিক্ষার গুরুত্ব। প্রধান শিক্ষকের কথায় অভিভাবকরা ছাত্রদের ভিনরাজ্য থেকে ফিরিয়ে এনে ফের বিদ্যালয়ে পাঠান। ছাত্রীদের পরিচারিকার কাজ থেকে বিরত করে ও বাল্যবিবাহ রুখে দিয়ে স্কুলছুট ছাত্রীদেরও স্কুলে ফিরিয়ে আনেন প্রধানশিক্ষক। এই প্রচেষ্টা ৭০ শতাংশ স্কুলছুট পড়ুয়াকে নতুন করে স্কুলে নিয়ে আসেন।

পুরস্কার পাওয়ার বিষয়ে তিনি জানান, আবদুল মতিন জানিয়েছেন, ২৮ তারিখ শিক্ষাদপ্তর থেকে একটি মেইল পান তাঁকে এবছর শিক্ষারত্ন পুরস্কারে ভূষিত করা হবে। পরের দিন ডিআই অফিস থেকেও তাঁকে এবিষয়ে জানানো হয়। তাঁর কথায়, “স্কুলছুট ও বাল্যবিবাহ রুখতে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করেছি। সমাজের জন্য কিছু করতে পেরে ভালোই লেগেছে। আমার কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করব ভেবে দারুণ খুশি।”

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ