সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাগরাকাটায় বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর হামলা হয়েছিল সোমবার বেলায়। সেই ঘটনায় নিন্দা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছিলেন। বাংলা ও ইংরাজিতে ওই পোস্ট ছিল। এক্স হ্যান্ডেলেই সেই বার্তার ‘জবাব’ দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও একইভাবে বাংলা ও ইংরাজি, দুই ভাষাতেই পালটা দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী রাজনীতি শুরু করেছেন। এমনই অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘সুবিধাবাদী রাজনৈতিক নাটক’ বলে কটাক্ষ মমতার।
মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, “এটা দুর্ভাগ্যজনক ও গভীরভাবে উদ্বেগজনক, যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী যথাযথ তদন্তের অপেক্ষা না করেই একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগকে রাজনীতিকরণের চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে যখন উত্তরবঙ্গের মানুষ ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস পরবর্তী পরিস্থিতির মোকাবিলা করছেন।” তিনি আরও লিখেছেন, “যখন স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে ব্যস্ত, তখন বিজেপি নেতারা কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় বিশাল কনভয় নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়েছেন। তাও আবার স্থানীয় পুলিশ এবং প্রশাসনকে কোনও তথ্য না দিয়েই। এই ঘটনার জন্য কীভাবে রাজ্য প্রশাসন, স্থানীয় পুলিশ বা তৃণমূল কংগ্রেসকে দোষ দেওয়া যেতে পারে?”
এটা খুবই দুর্ভাগ্যের এবং গভীর উদ্বেগের বিষয় যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ে রাজনীতি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কোনো উপযুক্ত অনুসন্ধানের জন্য অপেক্ষা না করেই – তা-ও আবার যখন উত্তরবঙ্গের মানুষ ভয়াবহ বন্যা ও ধসের সঙ্গে যুঝছেন।
যখন সমগ্র স্থানীয় প্রশাসন ও…
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial)
বিজেপি সাংসদ ও বিধায়ক আক্রান্তের ঘটনায় রাজ্য ও শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে বিঁধেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী পালটা দাবি করেছেন, “প্রধানমন্ত্রী কোনও যাচাই করা প্রমাণ, আইনি তদন্ত বা প্রশাসনিক প্রতিবেদন ছাড়াই সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেস এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে দোষারোপ করেছেন। এটি কেবল নিম্নমানের রাজনীতি নয়, বরং প্রধানমন্ত্রী যে সাংবিধানিক নীতিমালা বজায় রাখার শপথ নিয়েছেন তারও লঙ্ঘন।” মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “যে কোনও গণতন্ত্রে, আইন অবশ্যই তার নিজস্ব গতিতে চলবে। কেবল আইনি প্রক্রিয়াই দোষীদের চিহ্নিত করতে পারে। কোনও রাজনৈতিক মঞ্চের টুইট নয়।”
মণিপুরের হিংসার ৯৬৪ দিন পর কেন প্রধানমন্ত্রী সেখানে গিয়েছিলেন? সেই বিষয়েও এদিন প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্বেগ সুযোগসন্ধানী রাজনৈতিক নাটকের মতো মনে হচ্ছে বলেও কটাক্ষ করেছেন মমতা। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন, “নির্বাচিত রাজ্য সরকারের কথা শুনুন, কেবল আপনার দলের সহকর্মীদের কথা নয়। আপনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী, কেবল বিজেপির নয়। আপনার দায়িত্ব জাতি গঠনের, আখ্যান গঠনের নয়। এই সংকটময় মুহূর্তে, আসুন আমরা বিভেদ আরও গভীর না করি। আসুন আমরা দলীয় লাইনের বাইরে ঐক্যবদ্ধ হই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.