Advertisement
Advertisement
SSKM

‘আরও পাঁচজনের মধ্যে বেঁচে থাকবেন’, এসএসকেএমে মায়ের মরণোত্তর অঙ্গদান পুত্রের

রবিবার বাইক দুর্ঘটনায় মাকে হারিয়েছেন মেদিনীপুরের বছর ২৫-এর তন্ময়।

Man donates his mother's organ at SSKM

প্রতীকী ছবি

Published by: Subhankar Patra
  • Posted:January 21, 2025 1:39 pm
  • Updated:January 21, 2025 1:46 pm   

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একরাতের মধ্যে জীবন অনেক কিছু শিখিয়েছে বছর ২৫-এর তন্ময়কে। মেদিনীপুরের তন্ময় মণ্ডল। সদ্য মাতৃহারা। বাইক দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন মাকে। চিকিৎসকরা সব চেষ্টা করলেও রবিবার এসএসকেএমে তন্ময়ের মা সুজাতা মণ্ডলের ব্রেন ডেথ হয়েছে। কিন্তু সবার মধ্যে মাকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছেন যুবক। সুজাতাদেবীর দুটি কিডনি, লিভার এবং দুটি চোখ দান করা হয়। রবিবার রাতেই হয় অঙ্গ প্রতিস্থাপন। সোমবার ভোরে সুজাতাদেবীর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম মেদিনীপুরে সবংয়ে।

Advertisement

১৭ তারিখ স্থানীয় চিকিৎসককে দেখিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন বছর পঞ্চাশের সুজাতা মণ্ডল।  বাড়ি থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে রাস্তা পার হওয়া একটি ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে ব্রেক কষেন। তন্ময়ের কথায়, “ছেলেটিকে বাঁচাতে গিয়ে মা পড়ে গেলেন। সজোরে চোট লাগল মাথার পিছনে। রক্তে ভিজে গিয়েছিল জামা-কাপড়। সেই সময়ে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে। সেখান থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে জানানো হয় মস্তিষ্কের ক্ষত গভীর। রক্ত জমে আছে। এখানে চিকিৎসা হবেনা। কলকাতার পিজি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।” তড়িঘড়ি নিয়ে আসা হয় এসএসকেএমে। তবে বাঁচানো যায়নি সুজাতেদেবীকে। তন্ময়ের কথায়, “মেদিনীপুর থেকে মাকে পিজি হাসপাতালে আনা হল। ডাক্তারবাবুরা মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার করেন। তাঁরা অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মা তো আর এল না।” মোবাইলে কথা বলার সময় গলা আটকে গেল মাতৃ বিয়োগের ব্যথায়। মাকে হারিয়ে সবাইকে সতর্ক করে বলছেন, “বাইক নিয়ে বেরোলে যত কাছেই হোক, অবশ্য হেলমেট পড়ুন। যত পথ দুর্ঘটনা হয় বেশিরভাগ বাড়ির কাছে।”

সোমবারই সুজাতা মণ্ডলের দেহ সৎকার হয়েছে। তন্ময়ের কাছে পড়ে রয়েছে কেবল তাঁর মায়ের স্মৃতি। তবে তন্ময় বলছেন, “নিয়ম অনুযায়ী যাঁরা অঙ্গ পান তাঁদের পরিচয় গোপন রাখা হয়। কিন্তু যে বা যাঁরা মায়ের চোখ দিয়ে এই পৃথিবীকে দেখতে পাবে, তাঁদের কাছে একবার যদি যেতে পারি। হাত দিয়ে আমার মায়ের চোখ ছুঁয়ে দেখতে পারি। খুব ভালো লাগবে। কতদিন আর মানুষ বাঁচে। আজ মৃত্যুর পরে ও আমার মা আরও পাঁচজনের মধ্যে বেঁচে থাকবে। এটাই বড় প্রাপ্তি।” এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে নতুন বছরে এই নিয়ে দ্বিতীয় মরণোত্তর অঙ্গদান।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ