Advertisement
Advertisement
Maoist Leader

শোভা ঘরে ফিরলেও জেলেই ‘কমরেড’ যমুনা, আরেক মাও নেত্রীর মুক্তির অপেক্ষায় পরিবার

১৫ বছর ধরে জামশেদপুরের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি যমুনা।

Maoist leader Sobha Munda gets out of jail but family of her collegue, Jamuna Sing's family awaits coming back of the daughter in Jhargram
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:July 25, 2025 5:29 pm
  • Updated:July 25, 2025 5:32 pm   

প্রতিম মৈত্র, ঝাড়গ্রাম: সমাজ বদলের স্বপ্নে বুঁদ হয়ে একসময়ের সশস্ত্র বিপ্লবের রাস্তা বেছে নিয়েছিলেন। বহু রক্তাক্ত সংগ্রামের সাক্ষী হতে হয়েছে। সেই কৃতকর্মের জন্য বছর ১৫ আগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর দীর্ঘ বন্দিদশা শুরু হয় মাওবাদী নেত্রী যমুনা, শোভা মুন্ডা ওরফে চন্দনা সিংদের। সাজার মেয়াদ শেষে বৃহস্পতিবার গারদের অন্ধকার থেকে মুক্তির আলোয় এসেছেন চন্দনা ওরফে শোভা মুন্ডা। কিন্তু এখনও জেলবন্দি ঝাড়গ্রামের আরেক মাও নেত্রী যমুনা। জামশেদপুরের ঘাঘিডি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে তাঁর মুক্তি কবে? শোভার মুক্তিতে এখন সেই প্রশ্নেরই জবাব খুঁজছে পরিবার। দু’চোখে অধীর অপেক্ষা নিয়ে মেয়ের পথপানে চেয়ে বৃদ্ধ বাবা, তরুণ ভাই।

Advertisement

ঝাড়খণ্ডের ঘাটশিলায় ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণকাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন শোভা ওরফে চন্দনা। বেলপাহাড়ির মেয়ে চন্দনা সিং মাওবাদী স্কোয়াডে যোগ দেওয়ার পর হয়ে যান শোভা। বিপ্লবের পথে থাকার সময়ে ঘাটশিলার বাসিন্দা, স্কোয়াডের অন্যতম সক্রিয় সদস্য রাজেশ মুন্ডাকে বিয়ে করেন। ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় শোভার পাশাপাশি রাজেশও গ্রেপ্তার হন। তিনি এখনও বন্দি মুর্শিদাবাদের সংশোধনাগারে।

এদিকে, বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অবশেষে শোভাকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করে দেয় রাঁচির হাই কোর্ট। ১৫ বছর পর মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে নতুন করে আলো দেখেছেন শোভা। এরপর জীবন কোন পথে চলবে? এ প্রশ্নের জবাবে শোভা ওরফে চন্দনা বলছেন, ”ভাবার অবকাশ পাইনি এখনও। আরও দু, তিনদিন সময় লাগবে।” নিজের গাঁয়ে ফিরে কোনও বদল দেখছেন? শোভার জবাব, ”এসে থেকে বাড়িতেই আছি, বাইরে বেরইনি। বাইরে না বেরলে বুঝব কীভাবে যে চারপাশে কোনও বদল হয়েছে?”

ঝাড়গ্রামের মাজুগেড়া গ্রামে শোভার পরিবারে আনন্দ। নিজস্ব ছবি।

চারপাশ বদল না হোক, এত বছর পর শোভা ওরফে চন্দনার পরিবারে বদল এসেছে। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে মেয়ে ফেরার আনন্দ পরিবারের সদস্যদের চোখেমুখে। আর এখানেই প্রদীপের নিচে অন্ধকারের মতো আঁধার এখনও জমাট বেঁধে রয়েছে শোভারই সহকর্মী ‘কমরেড’ যমুনা সিংয়ের পরিবারে। ঝাড়গ্রামের ভুলাভেদার বাসিন্দা যমুনারও জেলযাত্রা হয়েছিল শোভার সঙ্গে। একযাত্রায় পৃথক ফল নাকি হয় না। কিন্তু হল, শোভা আর চন্দনার জীবনে। একজন মুক্তি পেলেন, অপরজনের বন্দিদশা কাটল না। যমুনার বাবা শশধর সিং ক্ষীণ কণ্ঠে বলছেন, ”ওই চন্দনার (শোভা) সঙ্গেই তো আমার মেয়েটাও জেলে গিয়েছিল। ১৪,১৫ বছর হয়ে গেল এখনও সে ঘাঘিডি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি। মেয়েটা যে কবে ফিরবে…।” একা শশধর নন, জঙ্গলমহলের প্রান্তিক গ্রামের প্রতি বাঁক যেন যমুনার ফেরার অপেক্ষায়।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ