ফাইল ছবি।
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ভিনরাজ্যে ‘বাঙালি হেনস্তা’র চরম পরিণতি। মহারাষ্ট্র থেকে ফেরার পর অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হল হাবড়ার এক পরিযায়ী শ্রমিকের। তাঁর নাম গোলাম মণ্ডল। বাংলায় কথা বলার কারণে মুম্বইতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। জেলে তাঁর উপর অত্যাচার হয় বলে অভিযোগ। এরপর ‘দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ’ নামে একটি সংগঠনের সাহায্যে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে হাবড়ার বাড়িতে ফিরেছিলেন গোলাম। কিন্তু তারপর থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসাও চলছিল। তবে শেষরক্ষা হল না। সোমবার সকালে হাবড়ার বাড়িতেও গোলাম মণ্ডলের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। তাঁর বাড়ি যাচ্ছে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল।
জানা গিয়েছে, হাবড়ার বাসিন্দা গোলাম মণ্ডল কাজের সূত্রে মহারাষ্ট্রে যান। মুম্বইতে তিনি পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। বাংলায় কথা বলায় সম্প্রতি তাঁকে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে, গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগ, জেলে রেখে তাঁর উপর অত্যাচার করা হত। শুধু তাই নয়, জেলমুক্তির পরও বম্বে মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের একটি ফাঁকা অফিসে রাখা হয়েছিল গোলাম মণ্ডলকে। সেখানে কয়েকদিন পরপর তাঁকে বিভিন্ন ঘরে রাখা হতো। খাবার বলতে স্রেফ ভাত দেওয়া হতো। অন্য সময় জল খেতে বলা হতে গোলামকে। আতঙ্কে খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি।
পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করে ‘দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ’ নামে একটি সংগঠন। তাঁরাই গোলাম মণ্ডলকে বন্দিদশা থেকে উদ্ধার করে। গণমঞ্চের সদস্যদের সাহায্যে সাংবাদিক সম্মেলন করে গোলাম নিজের হেনস্তার কথা বর্ণনা করেছিলেন। জানিয়েছিলেন মহারাষ্ট্র পুলিশের অত্যাচারের কথাও। শেষমেশ হাবড়ার বাড়িতে ফিরেও এসেছিলেন। কিন্তু আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন গোলাম মণ্ডল। খাওয়াদাওয়াও করছিলেন না। রবিবার তাঁর শারীরিক অবস্থায় বেশ খারাপ হয়ে ওঠে।
খবর পেয়ে তৃণমূলের তরফে রাজ্যসভার সাংসদ তথা শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী দোলা সেন তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করার কথা বলেন। সোমবারই সেই ব্যবস্থা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই মৃত্যুমুখে ঢলে পড়লেন ‘অত্যাচারিত’ বাঙালি শ্রমিক গোলাম মণ্ডল। দুপুরে তৃণমূল প্রতিনিধিরা তাঁর বাড়ি যাচ্ছেন বলে খবর। ‘বাঙালি হেনস্তা’ নিয়ে প্রতিবাদের আগুনে গোলাম মণ্ডলের মৃত্যু ঘি ঢালল, তা বলাই বাহুল্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.