শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে ফের বাংলার শ্রমিকের রহস্যমৃত্যু! জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের বাসিন্দা দীপু দাস কাজ করতে গিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের পুণেতে। মঙ্গলবার তাঁর রহস্যমৃত্যুর খবর জানতে পেরেছে পরিবার। শ্রমিকের কাজ করার সময় তিনি ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছেন বলে পুণের থেকে জানানো হয়েছে। এদিকে বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, তাঁকে খুন করা হয়েছে। তাঁর শরীরের একাধিক জায়গায় গভীর ক্ষত, গলায় আঘাত রয়েছে বলে পরিবারের তরফে অভিযোগ। এর আগে মহারাষ্ট্রেই উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের এক পরিযায়ী শ্রমিক ‘খুন’ হয়েছিলেন।
বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলার শ্রমিকরা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। বাংলাদেশি অভিযোগে গ্রেপ্তার করে অনেককেই অত্যাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাষা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন। সেই আবহেই ফের পুণেতে শ্রমিকের রহস্যমৃত্যুর ঘটনা সামনে এল। তৃণমূলের তরফে এই বিষয়ে টুইটও করা হয়েছে। ওই শ্রমিক পরিবারের পাশে দাড়িয়েছে তৃণমূল। রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায় পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন। মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিধায়ক বলেন, “বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষীদের উপর যে ধরনের অত্যাচার হচ্ছে, তাতে এই ঘটনার পিছনে তেমন কোনও ঘটনা নেই, উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমরা পরিবারের পাশে আছি। দেহ যাতে নিয়ে আসা যায় সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছি আমরা।”
রাজগঞ্জের বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের আমবাড়ি ফালাকাটা গোকুলভিটা গ্রামের বাসিন্দা দীপু দাস(৩৬)। পরিবার জানায়, গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে শ্রমিকের কাজ করতেন দীপু। সোমবার তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়। দীপুর ভাই অপু বলেন, “মঙ্গলবার মায়ের মৃত্যুর খবর দিতে গিয়ে জানতে পারি কাজ করার সময় ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে দাদার। মায়ের মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাদার মৃত্যুর খবরে দিশাহীন হয়ে পড়ি। বুধবার ঠিকাদার সংস্থার থেকে বেশ কিছু ছবি পাঠানো হয়। ছবিতে দেখা যায় শরীরে চোট আঘাতের পাশাপাশি গলাতেও আঘাত রয়েছে দাদার।” পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ করা হচ্ছে।
A migrant worker from the Binnaguri area of Jalpaiguri has died under mysterious circumstances in Maharashtra. A blood-soaked photo of his body was sent to his family members by a contractor from Pune. His body bore multiple injury marks, including a deep wound on his neck…
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial)
বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সমিজুদ্দিন আহমেদ বলেন, “চোট আঘাতের ছবি দেখে মনে হচ্ছে মারধোর করে মেরে ফেলা হয়েছে। পরিবার যদি আইনি সাহায্য চায় আমরা পরিবারের পাশে থাকব।” আজ শুক্রবার পরিবারের সঙ্গে গিয়ে দেখা করেন রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়। সঙ্গে ছিলেন রাজগঞ্জের জয়েন বিডিও, জেলা পরিসদের সদস্য, বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে এদিনই দেহ আনতে পুণের উদ্দেশ্যে রওনা দেন দীপু রায়ের পরিবারের সদস্যরা। পরিবারকে সাহায্য করার জন্য একজন পুলিশ কর্মীকেও সঙ্গে পাঠানো হয়। বিধায়ক বলেন, “মৃত্যুর কারণ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। পরিবারকে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। সন্দেহজনক কিছু নজরে এলে আইনানুগ পদক্ষেপের পাশাপাশি জেলাজুড়ে আন্দোলনে নামা হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.