Advertisement
Advertisement
Purbasthali

শুধু ঘরে নয়, শিশুমন জয়ে স্কুলেও শিক্ষিকা মায়েরাই! পূর্বস্থলীতে নয়া উদ্যোগ প্রশাসনের

'শিক্ষক যখন আপনজন' মডেলকে সামনে রেখে পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করছে পূর্বস্থলীর মিনাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়।

Mother of students are appointed as teachers in Purbasthali school
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:May 28, 2025 2:52 pm
  • Updated:May 28, 2025 2:58 pm   

অভিষেক চৌধুরী, কালনা: শুধু ঘরে নয়, স্কুলেও। শুধু নিজের মা নয়, সহপাঠীদের মায়েরাও যখন ‘দিদিমনি’, তখন পড়াশোনায় আনন্দ কয়েকগুণ বাড়ে বইকি! জন্মের পর শিশুর প্রথম পাঠ তো শুরু হয় মায়ের থেকেই। সে অর্থে মানুষের জীবনের প্রথম ‘শিক্ষক’ মা। জীবনে মায়েদের অবদানের কথা কে না জানে? তাই মায়ের মতো নয়, নিজের মা-ই যখন অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মতো স্কুলে এসে ক্লাস নেন, তখন ভীতি কেটে যায়। আনন্দ হয়, পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়ে, গর্বে ভরে ওঠে শিশুর মন।

Advertisement

‘শিক্ষক যখন আপনজন’ মডেলকে সামনে রেখে পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করছে পূর্বস্থলীর মিনাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। মায়েদের নেওয়া ক্লাসে কচিকাঁচা পড়ুয়াদের পড়াশোনায় যেমন আগ্রহ বাড়িয়েছে, তেমনই ব্যতিক্রমী এই ভাবনা পূর্ব বর্ধমান জেলায় অনন্য নজির গড়েছে পূর্বস্থলী ১ ব্লকের প্রান্তিক, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকার মিনাপুর নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়। এলাকায় অল্পবয়সি মেয়েদের বিয়ে আটকাতে শিক্ষকদের সহযোগিতায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি তৈরি করে বাল্যবিবাহ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে পড়ুয়ারা। কুসংস্কারমুক্ত সমাজ গড়তে বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছে। তাই এই স্কুল ‘নির্মল বিদ্যালয় (২০১৪)’ ‘শিশু মিত্র (২০১৯)’ পুরস্কার পেয়েছে।

‘শিক্ষক যখন আপনজন’ মডেল চালু পূর্বস্থলীর মিনাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। নিজস্ব ছবি।

এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ সরকার শিক্ষারত্ন (২০২৩) পুরস্কারও পেয়েছেন। এই স্কুলে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা ‘শিক্ষক যখন আপনজন’ কর্মসূচিও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সপ্তাহে সোম, বুধ ও শুক্রবার প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত নিজের ছেলেমেয়ে-সহ অন্য ছেলেমেয়েদের নিয়ে একটি করে ক্লাস নেন এলাকার ন্যূনতম মাধ্যমিক পাশ মায়েরা। যা পড়ুয়াদের শুধু স্কুলমুখীই করেনি, শিক্ষকদের মতো করে স্কুলে এসে পড়ানোর জন্য শিশুরাই মায়েদের হাত ধরে স্কুলে নিয়ে এসেছে।

বাড়িতে মা, স্কুলে ‘দিদিমনি’। খুশি স্কুলের কচিকাঁচারাও। নিজস্ব ছবি।

এদিকে প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ সরকার বলেন, “প্রত্যন্ত গ্রামের এই স্কুলে পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। হাতেনাতে তার ফলও মিলেছে। কচিকাঁচা পড়ুয়াদের নিয়ে যেকোনও ভাবনার সার্থক রূপায়ণে মায়েদেরই সবসময় এগিয়ে আনতে হয়। মাকে শিক্ষকের ভূমিকায় রাখায় পড়ুয়াদের স্কুল আসায় ভীতি কেটেছে, পড়াশোনায় আগ্রহ বেড়েছে। মায়েদের পাঠদান স্কুলের গ্রীষ্মকালীন ছুটি, পুজোর ছুটিতেও চালু রাখা হয়।” জেলা সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রিয়ব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের পড়াশোনার মানোন্নয়নে ও বছরভর বিভিন্নভাবে সামাজিক দায়িত্ব পালন করে চলেছে ওই স্কুল।”

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ