Advertisement
Advertisement
পদ্মাপাড়ে অপেক্ষায় স্ত্রী

দু’পারে দুই জনা, জেলবন্দি স্বামীর পথ চেয়ে পদ্মার চরে অপেক্ষায় দিন কাটে স্ত্রীর

মাছ ধরতে গিয়ে ভুল করে জলসীমা অতিক্রম করে ফেলেছিল স্বামী।

Murshidabad resident Rekha still awaits for arrested husband
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:December 20, 2019 7:19 pm
  • Updated:December 20, 2019 7:19 pm   

অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল:  তিনি জানেন, পদ্মাপাড়ে গিয়ে দেখা মিলবে না স্বামীর। তবুও কাজের ফাঁকে একবার চর কাকমারি বিএসএফ ক্যাম্পের পাশে ছুটে যান রেখা মণ্ডল। পদ্মানদীর ওপারে বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে থাকেন। ওই পথেই যে বালাদেশের সীমান্তরক্ষীরা তাঁর স্বামী প্রণব মণ্ডলকে ধরে নিয়ে গিয়েছে। তাঁর অবস্থান এখন রাজশাহি জেলে। যদি কোনও মানুষ পদ্মা পেরিয়ে এপারে আসেন, যদি কেউ বলেন, ‘জেলে দেখে এলাম তোমার স্বামীকে’। সেই আশায় বার বার ছুটে যান তিনি। কিন্তু ‘প্রণবকে দেখে এলাম’ বলার লোক পান না। এভাবেই পদ্মাপাড়ে যাওয়া-আসা তাঁর নিয়ম হয়ে উঠেছে।

Advertisement

১৭ অক্টোবর জলঙ্গির চর কাকমারির পদ্মানদীতে মাছ ধরতে গিয়ে ভুল করে জলসীমা অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছিলেন শিরচরের মৎস্যজীবী প্রণব মন্ডল। তখনি বিজিবি’র জওয়ানরা তাঁকে ধরে ফেলে। খবর পেয়ে চর কাকমারী বিএসএফ ক্যাম্পের হেড কনস্টেবল বিজয়ভান সিং ঘটনাস্থলে গেলে বিজিবি’র গুলিতে তার প্রাণ যায়। পরে উদ্ভুত পরিস্থিতির আলোচনাপর্ব চলে যায় দু’দেশের উচ্চ পর্যায়ে। বাংলাদেশে ধরে নিয়ে যাওয়া প্রণবের বিরুদ্ধে সে দেশে আইনি কারবার শুরু হয়। সেখানকার বিচারক তাঁকে জেলে পাঠান।

[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী তো শাড়ি পরা হিটলার, আসানসোলে কটাক্ষ দিলীপের]

নিতান্তই গরিব মৎসজীবী প্রণব ফিরে না আসায় তাঁর পরিবার পরে যায় অথৈ জলে। বাড়ির একমাত্র উপার্জনের মানুষ ওপারে জেলবন্দি।  এপারে তিন ছেলেমেয়ে ও বৃদ্ধা শাশুড়িকে নিয়ে কেমনভাবে চলবে সংসার? চিন্তায় ভেঙে পড়েছেন প্রণব মণ্ডলের স্ত্রী রেখা। তাঁর কথায়, ঘটনার সময় পঞ্চায়েত সমিতি ও মৎসজীবী ফোরামের সদস্যরা চাল-ডাল, তরিতরকারি দিয়ে সাহায্য করেছিলেন। তাই দিয়েই চলল। কিন্তু এখন আর সাহায্য নেই। বিড়ি বাঁধার সামান্য টাকায় কোনওরকমে বেঁচে আছি।”

প্রণবের পরিবারের কথা ভেবে সাহেব নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তামান্না ইয়াসমিন জানান, “প্রণবকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে বার কয়েক বিএসএফ কর্তৃপক্ষকে বলেছি। তাঁদের সেই একই কথা, বিষয়টি তাদের এক্তিয়ারে নেই। তবে পরিবারের আর্থিক সংস্থানের জন্য নতুন বছরে প্রণবের স্ত্রীর হাতে একটি নৌকো তুলে দিতে চেয়েছে বিএসএফ। যা ভাড়া দিয়ে সংসারে আয়ের সংস্থান হবে।”

[আরও পড়ুন: ‘মুখ্যমন্ত্রী থাকার অধিকার হারিয়েছেন মমতা’, CAA নিয়ে তোপ দিলীপের ]

জলঙ্গির বিডিও কৌস্তভকান্তি দাস জানান, “বিষয়টি আমি শুনেছি। দু’তিন দিনের মধ্যেই নিজে সেখানে যাবে। প্রয়োজনে তাঁদের জন্য চাল-ডালের সংস্থান করা হবে। ওই পরিবারের কাউকে দিয়ে ‘দিদিকে বলো’তে যোগাযোগ করানো হবে।” বিডিও জানান, তাঁর বিশ্বাস, বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে এলে একটা সুরাহা হয়ে যাবে।” অন্যদিকে মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খান জানান, “বিষয়টি আমি জানি না। তবে নথিপত্র নিয়ে যোগাযোগ করলে বিষয়টি দেখব।”                   

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ