সুবীর দাস, কল্যাণী: বাজারে ঋণ! গাড়ির ব্যবসায়ে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে বচসা। সাংসারিক জীবনে অশান্তি! নদিয়ার হরিণঘাটার তৃণমূল নেতা রাকেশ পাড়ুইয়ের মৃত্যুতে প্রাথমিকভাবে এই তথ্যগুলিই উঠে আসছে। মৃত কাউন্সিলরের মায়ের অভিযোগ, পাঁচ-ছটা ছেলে এসে হুমকি দিত। এবং রাকেশকে কোনও চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হরিণঘাটায় দলীয় কার্যালয় থেকে হরিণঘাটা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা জেলা তৃণমূল ছাত্রনেতা রাকেশ পাড়ুইয়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃত তৃণমূল নেতার মা শিবানী পাড়ুই দাবি করেছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছেলেকে ফোন করলে রাকেশ বলেন একটি সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। পরে ফোন করবে। তিনি পার্টি অফিসে রয়েছেন। তাতেই সন্দেহ হওয়াতে কিছু সময়ের মধ্যেই তার বাবাকে পার্টি অফিসে পাঠানো হয়। সেখানে গিয়ে দরজা খুলে ছেলের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পারেন বাবা। তবে কী কারণে তিনি আত্মঘাতী হলেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তাঁর সাংসারিক জীবনও ভালো ছিল না। স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি ছিল বলে জানা গিয়েছে।
রাকেশের প্রতিবেশী চাকদহ বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ বলেন, “ছাত্রনেতা ও কাউন্সিলর ছিলেন রাকেশ। যেকোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। তবে আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছিল রাকেশ। বিগত দিনে অনেক টাকা তুলেছিলেন রাকেশ। ঋণে ঝড়িয়ে পড়েছিলেন। পাওনাদাররা চাপ দিচ্ছিল। আমি বেশি কিছু বলতে চাই না। অল্প বয়সে রাজনীতির সুনাম অর্জন করেছিল রাকেশ। তাঁর মৃত্যুর সঠিক তদন্ত হবে বলে আমি আশাবাদী।” পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে রহস্য সামনে আনুক সেই দাবি জানিয়েছেন তিনি। হরিণঘাটা পুরসভার পুরপ্রধান দেবাশিস জানান, “দুঃখজনক ঘটনা। আমরা পরিবারের পাশে আছি। এলাকার মানুষ যেকোনও সমস্যায় পড়লে ছুটে যেত। ভালো ছেলে ছিল রাকেশ।”
বাজারে ঋণ, স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্য, পাওনাদারদের লাগাতার চাপ সবকিছুর জেরে আত্মঘাতী হয়েছেন তৃণমূল ছাত্রনেতা! নাকি অন্য কোনও কারণ রয়েছে। পুলিশ এখনও কিছু বলেনি। শুক্রবার সকালে তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট আসার পরই মৃত্যু কারণ স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.