নিজস্ব সংবাদদাতা, নদিয়া: ব্যবসায়ে লোকসান। তার উপর বিপুল আর্থিক দেনা। একেবারে বিপর্যস্ত অবস্থা নদিয়ার ধানতলা থানা এলাকার হালালপুর গ্রামের বাসিন্দা দম্পতির। কোনও উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে তাঁরা নিজেদের কিডনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্বারস্থ হলেন প্রশাসনের। ঘটনা জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ওই দম্পতিকে বুঝিয়ে নিরস্ত করার চেষ্টা চলছে। তাঁরা সরকারি জনকল্যাণমূলক সামাজিক প্রকল্পগুলির সুবিধা পান কি না, না পেলেও তাঁদের তা দেওয়া যায় কি না, সেই ভাবনাচিন্তা চলছে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে।
নদিয়ার হালালপুর গ্রামের বাসিন্দা ওই দম্পতির বাড়িতে রয়েছে এক মেয়ে ও বৃদ্ধ বাবা-মা। তাঁরা নিজের হাতে রূপোর গয়না তৈরি করে বিক্রি করতেন। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা এই ব্যবসা করেন। গত কয়েক বছরে ব্যবসা লোকসানের সম্মুখীন হওয়ায় তাঁদের বাজারে বেশ কিছুটা দেনা হয়ে যায়। তা মেটাতে মেটাতে ফের দেনার জেরে আর্থিক অনটন চরমে ওঠে। বাড়িতে নিত্য পাওনাদারদের আনাগোনা লেগেই থাকত। পাওনাদারদের চাপ এতটাই অসহনীয় হয়ে ওঠে যে, একসময় আত্মহত্যার কথাও ভাবতে শুরু করেন এই দম্পতি।
কিন্তু তাঁদের একমাত্র নয় বছরের কন্যার মুখ চেয়ে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন তাঁরা। শেষমেশ উপায়ান্তর না দেখে নিজেদের একটি করে কিডনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন স্বামী-স্ত্রী। এই মর্মে তাঁরা রানাঘাট ২ নম্বর ব্লকের বিডিও শুভজিৎ জানার কাছে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়ে সরকারি সহায়তার আবেদন জানান। বিডিও জানান, কিডনি বিক্রি আইনত অপরাধ এবং অমানবিক। সরকারের পক্ষ থেকে সাহায্যের দরজা খোলা রয়েছে। প্রয়োজনে স্বনির্ভর গোষ্ঠী বা অন্যান্য সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়া যেতে পারে। বিষয়টি জানাজানি হতেই হইচই শুরু হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনে। খোকনবাবুর কথায়, “আমরা আর পারছি না। আত্মসম্মান তো দূরের কথা, এখন দু’মুঠো ভাত জোটানোও কঠিন। পাওনাদারদের চাপে বাড়ির মধ্যেও নিরাপদে থাকা সম্ভব হচ্ছে না।” বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে কেউই মন্তব্য করতে চাননি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.