Advertisement
Advertisement
Nagrakata

‘৫০ বছরে এমন দুর্যোগ দেখিনি’, উত্তরবঙ্গের বন্যায় সর্বহারা হয়ে পথে বহু পরিবার

যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ পরিষেবা ও পানীয় জলের ঘাটতি মধ্যে চরম দুর্ভোগে ফেলেছে এলাকাবাসীকে।

Nagrakata people have not seen such devastation in long time

নিজস্ব ছবি

Published by: Anustup Roy Barman
  • Posted:October 6, 2025 7:51 pm
  • Updated:October 6, 2025 7:51 pm   

অরূপ বসাক, মালবাজার: ৫০ বছরের মধ্যে এমন দুর্যোগ দেখেননি স্থানীয় বাসিন্দারা। গত রবিবার ভোররাতে নাগরাকাটা ব্লকে শুরু হয় অতি বৃষ্টি। সেই বৃষ্টিতে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে নদী ও খালের জল বেড়ে গিয়ে একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সোমবার জল কমলেও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমেনি।

Advertisement

নাগরাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্জয় কুজুর জানান, “এত বড় দুর্যোগ গত ৫০ বছরে আমরা দেখিনি। এখনও পর্যন্ত পাঁচজন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে। গরু, ছাগল, মহিষ সহ প্রায় শতাধিক গৃহপালিত পশুর মৃত্যু হয়েছে। বামনডাঙ্গায় বহু বাড়ি ভেসে গিয়েছে। সব হারিয়ে পথে বসেছেন বহু মানুষ। বামনডাঙ্গার মডেল ভিলেজ, ১৮ নম্বর লাইন, বিছ লাইন, হাতি লাইন মিলিয়ে অন্তত ৫০০ শ্রমিক পরিবারের ঘরবাড়ি ভেসে গিয়েছে। তাঁরা সবাই রাত থেকেই ফ্যাক্টরির ভেতরে আশ্রয় নিয়েছেন। নাগরাকাটার জিতি চা বাগানের নয়া লাইন নামে একটি শ্রমিক মহল্লায় ঢোকার একমাত্র রাস্তার কালভার্ট ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ৭০টি পরিবার। কালভার্ট দু’টুকরো হয়ে গিয়ে একই পরিস্থিতি সেখানকার গাঠিয়া লাইনের ৬০টি পরিবারের।

প্রবল জলের স্রোতে ভেঙে গিয়েছে নাগরাকাটার সঙ্গে বামনডাঙ্গার সংযোগকারী রাস্তা। একই চিত্র সুখানি বস্তিতে। সেখানে জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে প্রধান সড়ক। লোকসান থেকে চ্যাংমারি যাওয়ার রাস্তাও সম্পূর্ণভাবে ভেঙে গেছে। ১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের কালিখোলা সেতু ভেঙে পড়ায় রবিবার সকাল থেকেই নাগরাকাটার সঙ্গে বানারহাটের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুলকাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ছাড়টন্ডু, খয়েরবাড়ি এক নম্বর গ্রাম এবং শুল্কাপাড়া থেকে বামনডাঙ্গা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চল। টানাটানি সেতুর পাশের রাস্তা সম্পূর্ণ ভেঙে যাওয়ায় এলাকাটি সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো সব এলাকায় সাহায্য পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক পরিবার জানিয়েছেন, “বাড়িতে খাবার নেই। রবিবার শুধুমাত্র বিস্কুট ও জল পেয়েছি। রাস্তা একেবারে খারাপ, জল নেই, বিদ্যুৎ নেই। আমরা সবাইকে জানিয়েছি, কিন্তু এখনও পর্যাপ্ত সাহায্য আসেনি।”

মালবাজারের মহকুমা শাসক শুভম কুন্দল জানান, “সরকারি তরফ থেকে ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে, ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে দুর্গত এলাকায়। সবাই ত্রান পাবে।” কিন্তু প্রচণ্ড জলের তোড় ও রাস্তার ক্ষতি উদ্ধার কাজে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।” নাগরাকাটা ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস ব্লক সভাপতি প্রেম ছেত্রী বলেন, “বিশেষ করে চাম্পাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু বাড়ি ভেঙে গেছে, পানীয় জলের তীব্র অভাব তৈরি হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর।” মন্ত্রী বুলুচিক বড়াইক বলেন, রাত থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। সব দপ্তরে একসঙ্গে কাজ করছে।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ