শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: জ্বলছে নেপাল। জনমানসে আতঙ্ক। ফরাক্কা থেকে গাড়ি চালিয়ে নেপালের বিরাটনগর চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য দুই ব্যক্তিকে নিয়ে গিয়েছিলেন ফরাক্কার পলাশির গাড়িচালক সত্যেন ঘোষ। নেহাতই ভাড়ার বিনিময়ে গাড়ি নিয়ে তাঁর নেপালযাত্রা। কিন্তু রাজনৈতিক অশান্তির সম্মুখীন হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফরাক্কার ফিরে এলেন গাড়িচালক সত্যেনবাবু। বাড়ি ফিরেও সেই আতঙ্কের ঘোর এখনও কাটছে না। তিনি জানাচ্ছেন, জীবনে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হননি। প্রাণ হাতে নিয়ে মঙ্গলবার ভোররাতে পরিবারের কাছে ফিরে আসতে পারায় ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
ফরাক্কা ব্লকের বেওয়া-১ নম্বর গ্রামপঞ্চায়েতের পলাশি গ্রামের বছর বাহান্নের সত্যেন ঘোষ। পেশায় গাড়ি চালক। সোমবার ফরাক্কা ব্যারেজ আবাসনের দুই ব্যক্তিকে নিয়ে সত্যেন ঘোষ তাঁর স্করপিও গাড়িতে করে নেপালের উদ্দেশে পাড়ি দেন। দুই ব্যক্তিকে নিয়ে গাড়ি করে ভারত-নেপাল পানিট্যাঙ্কি সীমান্ত পেরিয়ে মঙ্গলবার সকালে পৌঁছন তাঁরা বিরাটনগরে। মোরাং জেলার, লহানবালা বিরাটনগর চক্ষু হাসপাতালে দুই ফরাক্কার বাসিন্দার চিকিৎসার কথা ছিল। অশান্ত নেপালের পরিস্থিতির কোনওরকম আঁচ তারা তখনও অনুভব করেননি। হাসপাতালের সামনে পৌঁছতেই তাঁদের সন্দেহ জাগে। চারিদিকে এত জটলা। কোলাহল। আচমকা কিছু লোক তাঁদের গাড়ি দেখে ছুটে আসতে দেখে বিপদের সম্মুখীন হওয়ায় আশঙ্কা আঁচ বুঝতে পারেন গাড়ি চালক। তৎক্ষণাৎ গাড়ি ঘুরিয়ে দ্রুত গতিতে পানিট্যাঙ্কি সীমান্তের দিকে আসতে থাকেন।
সীমান্তে এসে তাঁরা জানতে পারেন নেপালের অশান্তির কারণ। বুধবার সকালে সত্যেন ঘোষ জানান, ফরাক্কা ব্যারেজের বাসিন্দা দুই ভায়ের চোখের চিকিৎসা করাতে নেপালের বিরাটনগর যাওয়ার জন্য সোমবার স্করপিও গাড়িতে রওনা হন। মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ তাঁরা যখন বিরাটনগর চক্ষু হাসপাতালের কাছে তাঁরা পৌঁছতেই দেখেন, কিছু দূরে রাস্তায় প্রচুর লোক জমায়েত। সত্যেনবাবুর কথায়, “হাসপাতালের গেটের সামনের এক গার্ড ছুটে এসে বলেন, জলদি বাঁদিকের রাস্তা ধরে চলে যান। তার কথা শুনে বিপদের আশঙ্কায় দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে ভারত-নেপাল সীমান্তে এসে পৌঁছই। মাত্র পনেরো মিনিট নেপালে ছিলাম।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.