অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: ‘পশ্চাতে রেখেছ যারে সে তোমারে পশ্চাতে টানিছে’, সমাজে অবহেলিতদের এগিয়ে নিয়ে যেতে লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর সেই পংক্তিটিকে পাথেয় করে হাওড়ার একটি প্রাথমিক স্কুলের ক্লাসরুম থেকেও তুলে দেওয়া হল ব্যাকবেঞ্চ। আন্দুল মৌড়িগ্রামের মহিয়াড়ি রাণীবালা কুণ্ড চৌধুরী প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ে চালু করা হল ‘নো ব্যাকবেঞ্চার, জয়ফুল লার্নিং’ মডেল। হাওড়ায় প্রথম এই স্কুলেই এই ব্যবস্থা করা হল। কী এই মডেল?
ক্লাসরুমের বেঞ্চগুলিকে ইংরেজির ‘ইউ’ অক্ষরের মতো সাজানো হয়েছে। সেই বেঞ্চে পড়ুয়ারা পরপর বসতে পারছে। থাকছে না কোনও লাস্ট বা প্রথম বেঞ্চ। শিক্ষক ও শিক্ষিকারা ক্লাসরুমের মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়াচ্ছেন। ক্লাসে কোনও লাস্ট বেঞ্চ না থাকায় শিক্ষক-শিক্ষিকারা সব ছাত্রীকেই পড়ানোর সময় দেখতে পাচ্ছেন। স্কুলে ৫৫৬ জন পড়ুয়া রয়েছে। ১২টি ঘরে ক্লাস হয়। আপাতত ৬টি ক্লাসরুমে এই সিস্টেম চালু করা হয়েছে। বাকি ক্লাসরুমগুলিতেও একই মডেল চালু করার ইচ্ছা রয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের এই স্কুল থেকে ব্যাকবেঞ্চের ধারণা উঠে যাওয়ায় স্কুলের ছাত্রী ও অভিভাবকরা সকলেই খুশি।
কিন্তু হঠাৎ কেন এই মডেল চালু হল স্কুলে? স্কুলের প্রধান শিক্ষক ধ্রুবজ্যোতি সেন বললেন, “শিক্ষকতা করতে গিয়ে আমি দেখেছি লাস্ট বেঞ্চে বসা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে একটা হীনমন্যতা তৈরি হয়। তাতে পড়ুয়ারা পড়াশোনায় উৎসাহ হারায়। তাছাড়া শিক্ষক-শিক্ষিকারাও লাস্ট বেঞ্চের ছাত্রছাত্রীদের অনেকসময় নজরে রাখতে পারেন না। লাস্ট বেঞ্চের ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকদের কাছে গুরুত্ব হারায়। ফলে তাদের পড়াশোনায় আগ্রহ কমে যায়। রাজস্থানের একটি স্কুলে এই মডেল চালু আছে তা দেখেই আমি আমাদের স্কুলেও এই মডেল চালু করলাম।” উল্লেখ্য, একটি মালায়ালম সিনেমায় ‘নো ব্যাকবেঞ্চার, জয়ফুল লার্নিং’-এর মডেল দেখানো হয়। এই সিনেমা দেখার পর ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় আগ্রহী করে তুলতে সারা দেশের বিভিন্ন স্কুল এই মডেল ফলো করতে শুরু করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.