প্রতীকী ছবি।
সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: জঙ্গলমহলের বনাঞ্চলের ঘনত্ব অনেকটাই বেড়েছে। পর্যাপ্ত খাবারও আছে বনের ভিতর। পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়ার জঙ্গল হাতির বংশবিস্তারের পছন্দের জায়গা হয়ে উঠছে। ভিনরাজ্য থেকে বাংলায় হাতিও চলে আসছে। তার জেরে বাড়ছে জঙ্গলমহলে হাতির সংখ্যা। এমনই জানিয়েছেন বনদপ্তরের কর্তারা। লোকালয়েও হানা দিচ্ছে হাতির দল।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাতিদের পছন্দের আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছে জঙ্গলমহল। বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের ঝাড়গ্রাম জেলার জঙ্গলগুলিতে সব থেকে বেশি হাতি রয়েছে। প্রতি বছর হাতির সংখ্যা বাড়ে চলছে। আর জঙ্গলগুলিতে অনুকুল পরিবেশে হাতি বংশবিস্তার করছে। পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশা থেকেও হাতি এসে নিশ্চিত সহায়ক পরিবেশে সন্তান প্রসব করছে বলে খবর। বনদপ্তর জানিয়েছে, সাধারণ মানুষ এখন আগের থেকে অনেক বেশি পরিবেশ এবং বন্যপ্রাণীদের বিষয়ে সচেতন। ফলে হাতির মতো বড় আকারের এবং বুদ্ধিমান প্রাণী প্রসবের ক্ষেত্রে বেছে নিচ্ছে ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন রেঞ্জের জঙ্গলগুলি।
বনদপ্তরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ১৭ শতাংশ জঙ্গল বেড়েছে। সেখানে জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে পাঁচ শতাংশ জঙ্গলের ঘনত্ব বেড়েছে। জঙ্গলগুলিতে রয়েছে জলের সংস্থানও। বর্তমানে হাতির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলে খাদ্যসঙ্কট কিছুটা দেখা দিয়েছে ঠিকই। তবে বিভিন্ন ফলের মরসুমে খাবারের যোগান থাকে। ফলে তেমন কোনও বড় সমস্যা দেখা যাচ্ছে না খাবার নিয়ে। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের চার জেলা ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ায় ২০১৭ সালে মোট হাতি ছিল ১৯৪টি। বর্তমানে ২০২৫ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২৪টি। অর্থাৎ এই আট বছরে ১৫ শতাংশ হাতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
উল্লেখযোগ্য বিষয়, এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ হাতি রয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলায়। ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে হাতি আছে ৪৪ টি। আর জেলার নয়াগ্রাম(৩৪) এবং সাঁকরাইল ব্লক(৬৬) মিলে হাতি আছে ১৪৪টি। বাকি ৮০টি হাতি ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন রেঞ্জে। বনদপ্তরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরে প্রায় ১০ শতাংশ করে হাতি বাড়ছে। জানা গিয়েছে, নয়াগ্রাম এবং সাঁকরাইল ব্লকে ১০টির কাছাকাছি পাঁচ বছরের নিচে শাবক রয়েছে। অন্য দিকে ঝাড়গ্রাম রেঞ্জে জঙ্গলে একটি ২০ থেকে ২৫টি হাতির দলে শাবক রয়েছে ছয় থেকে সাতটি। এর মধ্যে তিনটি রয়েছে তিন বছরের কম বয়স। ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, “হাতি এখানে সহায়ক পরিবেশ পাচ্ছে বলেই সন্তানের জন্ম দিচ্ছে। আমরা চাই মানুষ এবং হাতি দুই দিক সুরক্ষিত রাখতে। তাই নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.