Advertisement
Advertisement
Durga Puja News

বাংলার পুজোর উপভোগে হুগলির গ্রামে চিনা দূতাবাসের আধিকারিকরা, দিলেন আলপনা, বানালেন নাড়ু

একদিকে ঢাকের শব্দ অন্যদিকে মায়ের অপরূপ রূপে মুগ্ধ হয়ে যান চিনা কর্তারা।

Officers of Chinese consulate went to witness the Durga puja of bengal village
Published by: Kousik Sinha
  • Posted:September 28, 2025 10:19 pm
  • Updated:September 28, 2025 11:02 pm   

অর্ণব আইচ, সুমন করাতি: মহাষষ্ঠীর সকাল। চারপাশে পুজোর আমেজ! একেবারে শরতের আকাশ। এমন একটা দিনে কে আর নিজেকে বেঁধে রাখতে চান। তাই সকাল থেকেই চলছে প্যান্ডেল হপিং। অভাব নেই বিদেশি অতিথিরও। বাদ পড়লেন না চিনা দূতাবাসের শীর্ষ আধিকারিকরাও। পৌঁছে গেলেন বাংলার গ্রামের পুজো উপভোগ করতে। হুগলির পাণ্ডুয়ার ভূঁইপাড়া গ্রামের দুর্গাপুজো দেখতে গেলেন তাঁরা। ‘আড়ম্বর নেই, আছে প্রাণের পরশ। সরলতার ছোঁয়া।’ এই ভাবনা নিয়েই ভূঁইপাড়া গ্রামের এই পুজো। আর সেখানেই সামিল হলেন চাইনিজ কনস্যুলেট জেনারেলের আধিকারিকরা। ছিলেন ডেপুটি কনসাল জেনারেল ও ভারপ্রাপ্ত সিজি ছিন ইয়ং, কাউন্সিলর বাই আন এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা।

Advertisement

একদিকে মা দুর্গার মৃন্ময়ী রূপ থেকে চিন্ময়ী রূপে বরণ, অন্যদিকে বাংলার আচার এবং রীতিনীতি যাতে চিনা কনস্যুলেটের আধিকারিকরা চাক্ষুষ করতে পারেন, সেজন্য এই উদ্যোগ নেন সম্রাট চৌধুরী। তাঁর উদ্যোগেই এদিন ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট গাড়ি চড়ে ভূঁইপাড়া গ্রামে পৌঁছে যান চাইনিজ কনস্যুলেটের ১১ জন সদস্য। অতিথিদের বরণ করে নিতে আগে থেকে ছিল প্রস্তুতি। একদিকে ঢাকের বাদ্যি অন্যদিকে উলুর ধ্বনি! ছিলেন গ্রামের মানুষ থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কচিকাঁচারা। এছাড়াও অনিন্দিতা রায়, মধুমিতা কর্মকার-সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন সেখানে। সবাই মিলে চিনা কনস্যুলেটের আধিকারিকদের স্বাগত জানান এদিন।

একদিকে ঢাকের শব্দ অন্যদিকে মায়ের অপরূপ রূপে মুগ্ধ হয়ে যান চিনা কর্তারা। ঢাকের শব্দে রয়েছে এক অন্য মাদকতা। কনস্যুলেট জেনারেলের আধিকারিকদের মধ্যে কয়েকজন হাতে তুলে নেন ঢাকের কাঠি! নিজেরাই শুরু করে দেন ঢাক বাজাতে। এমনকী আলাপনা দিতেও দেখা যায় কয়েকজনকে। এখানেই শেষ নয়, আধিকারিকদের পরিবারের সদস্যদের কাউকে দেখা গেল ফুলের মালা গাঁথতে আবার কেউ বানাতে বসলেন নাড়ু। সে এক অন্য ছবি! মহাষষ্ঠীর তাৎপর্য কী তা পুরোহিত মশাইয়ের থেকে বুঝে নেন চিনা আধিকারিকরা। মণ্ডপ লাগোয়া ২৫০ বছরের প্রাচীন মুখার্জি বাড়ির কালী মায়ের মন্দির, দুর্গা দালান-সহ সবটাই ঘুরে দেখেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার গ্রামের বাচ্চাদের শিক্ষাকেন্দ্রও।

এতো গেল পুজোর কথা! আয়োজন ছিল বাঙালি খাবারেরও। একেবারে গরম গরম গরম লুচি, আলুর দম, ছোলার ডাল, সিঙ্গাড়া! আর মিষ্টি ছাড়া কি অতিথি বরণ চলে! তাই শেষ পাতে ছিল মিষ্টি। ডেপুটি কনসাল জেনারেল ও ভারপ্রাপ্ত সিজি ছিন ইয়ং বলেন, “আমরা সম্রাট বাবুকে অনুরোধ করি খুব সাধারণ গ্রামের পুজো দেখানোর জন্য। ভূঁইপাড়া গ্রামে এসে আমরা আজ কিছু ঐতিহ্য, কিছু আচার ও রীতিনীতির সাক্ষী হলাম। ষষ্ঠী পূজার মাহাত্ম্য শুনলাম। গ্রামের মানুষের উদ্দীপনা, চেষ্টা  আমার এবং আমার দলের  প্রত্যেকের খুব ভালো লেগেছে।” একইসঙ্গে দুর্গাপুজোর শুভেচ্ছাও জানান ছিন ইয়ং। 

সম্প্রতি গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের ৭৬ তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে একটি রিসেপশন পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল চিনা দূতাবাসের তরফে। সেখানে ভারপ্রাপ্ত চিনা কনসাল জেনারেল বলেন, ভারত ও চিনের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের ৭৫ বছর পার হল এবছর। আগামিদিনে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তিনি। 

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ