আদালত চত্বরেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি। নিজস্ব চিত্র
ধীমান রায়, কাটোয়া: কয়েক মাস আগে স্বামী-স্ত্রী আলাদা হয়েছিলেন। অভিযোগ, সাত বছরের সন্তানকে কেড়ে স্বামী নির্যাতন করে তাড়িয়ে দেন স্ত্রীকে। সন্তানকে ফিরে পেতে ওই বধূ আদালতের কাছে আবেদন জানান। আর ওই শুনানির দিনেই ছেলের উপর অধিকার নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কার্যত হাতাহাতি চলল। ছেলেকে নিয়ে আদালত চত্বরে রীতিমতো টানাটানি চলল! ছেলে কার কাছে থাকবে? দু’জনেই ছেলের অধিকার ছাড়তে নারাজ। শুক্রবার হুলুস্থুল কাণ্ড বাঁধল কাটোয়া মহকুমা আদালত চত্বরে। অভিযোগ, শেষে স্বামীর কাছ থেকে একপ্রকার সন্তানকে ছিনিয়ে নিয়ে চলে গেলেন স্ত্রী। তবে গোটা ঘটনার সাক্ষী থাকলেন আদালত চত্বরে উপস্থিত থাকা আইনজীবী, ক্লার্ক-সহ সাধারণ মানুষ। ওই ব্যক্তি ছেলেকে ফিরে পেতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন।
কাটোয়ার মহকুমাশাসক অহিংসা জৈন বলেন, “আমার অফিসের মধ্যে কিছু ঘটেছি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার মসজিদ পাড়ায় বাপেরবাড়ি আমিনা খাতুন নামে বছর পচিশের ওই বধূর। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে তাঁর বিয়ে হয় মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা থানার সুন্দরপুর গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ আজিজুল রহমানের সঙ্গে। তাঁদের সাত বছরের একটি শিশুপুত্র রয়েছে। জানা গিয়েছে, সৈয়দ আজিজুল রহমান আগে কাতারে কাজ করতেন। দেশে ফেরার পর এখন ভিন রাজ্যে কাজ করেন। অভিযোগ, কয়েক বছর ধরেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আর বনিবনা হচ্ছিল না।
আমিনা খাতুনের অভিযোগ, স্বামী সন্দেহের বশে নির্যাতন করত। গত ২৭ জুন স্বামী তাঁকে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন! ছেলে থেকে যায় ওই বাড়িতেই। আমিনা খাতুন কাটোয়া মহকুমা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে ছেলেকে ফিরে পেতে আবেদন করেন। শিশুপুত্রকে জোর করে আটকে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে কাটোয়া মহকুমা শাসকের কোর্টে এদিন শুনানিতে দু’পক্ষকে ডাকা হয়।
ছেলের হাত ধরে আগেই আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ আজিজুল রহমান। হাজির হন আমিনা খাতুনও। দুপুর নাগাদ আদালত চত্বরে দেখা যায় আমিনা তাঁর শিশুপুত্রকে স্বামীর হাত থেকে আচমকা ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আজিজুল রহমানও তাঁদের ধরে ফেলেন। ছেলেকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শুরু হয় টানাহেঁচড়া। অভিযোগ, ছেলেকে নিয়ে গিয়েছেন মা। আমিনার কথায়,”ছেলেকে গর্ভে ধারণ করেছি। বড় করেছি। তাই সন্তান আমার কাছেই থাকবে৷” আজিজুলের দাবি,”আমি ছেলের বাবা। বাবার থেকে সন্তানকে আলাদা করা যাবে না৷ যতদূর আইনি লড়াইয়ের দরকার, চালিয়ে যাব।” বাবা-মার এই আচরণে হতচকিত শিশু। যাকে এত কিছু, সেই সন্তান কি চাইছে? ওই শিশুর কথায়, “বাবা ও মা একসঙ্গে থাকুক এটাই চাই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.