Advertisement
Advertisement
North Bengal

দুর্যোগে লক্ষ্মীলাভ! বন্যায় ভেসে আসা গাছের গুঁড়ি তুলে রাতারাতি লাখপতি

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রীতিমতো নদীর তীরে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বহু বাসিন্দা।

People collecting stems worth lakhs of rupees after landslide in North Bengal

নদীর তীরবর্তী কৃষি জমিতে জলের প্রবল স্রোতে ঢুকে পড়েছে বড় বড় কাঠের গুড়ি।

Published by: Kousik Sinha
  • Posted:October 8, 2025 1:55 pm
  • Updated:October 8, 2025 1:58 pm   

বিক্রম রায়, কোচবিহার: বিপর্যয় কারও জন্য অভিশাপ ডেকে এনেছে, আবার কারোর জন্য তা ভাগ্য পরিবর্তনের সুযোগ করে দিয়েছে। তোর্সা নদীতে আসা আচমকা বন্যায় বহু পরিবারের ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ভেঙে পড়েছে ঘর। সেই পরিবারগুলি অন্তত চাইছে আর কোনওদিন যাতে এই ধরনের বন্যা না হয়। আর ঠিক সেখানেই দাঁড়িয়ে এবারের বন্যা যেন তোর্সা পাড়ের বহু বাসিন্দাকে রাতারাতি কয়েক লক্ষ টাকার মালিক করে দিয়েছে। আর সেই বন্যার ফসল এখন ঘরে তুলতে মরিয়া সেই পরিবারগুলি।

Advertisement

তোর্সা নদীতে এবার একটি ‘বিরলতম’ ঘটনা বন্যার সময় লক্ষ্য করা যায়। ঠিক যেমনটা দক্ষিণ ভারতের ‘পুষ্পা’ সিনেমায় দেখা গিয়েছিল। একইভাবে নদীতে ভাসতে দেখা যায় বড় বড় গাছের গুড়ি। কোথাও পাইন গাছ, কোথাও আবার সেগুন বা বনের অন্যান্য মূল্যবান গাছ। কিলোমিটার পর কিলোমিটার সেই গাছ ভেসে আসছে। এই দৃশ্য সচরাচর দেখতে অভ্যস্ত নন কোচবিহারের বাসিন্দারা।

তবে সেই দৃশ্য দেখেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রীতিমতো নদীর তীরে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বহু বাসিন্দা। আবার কিছু ক্ষেত্রে নদীর তীরবর্তী কৃষি জমিতে জলের প্রবল স্রোতে ঢুকে পড়েছে বড় বড় কাঠের গুড়ি। আর সেখান থেকে সংগ্রহ করা গাছের গুড়িগুলির দাম এখন যেন কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। কিছু স্থানে রীতিমতো আর্থ মুভার দিয়ে কোথাও আবার ট্রাক্টর দিয়ে তোলা হচ্ছে বড়-বড় গাছের গুঁড়ি। কোচবিহার তো বটেই সীমান্ত পেরিয়ে ওপার বাংলাদেশে ও একই ধরনের দৃশ্য এখন সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ভাইরাল।

তবে কোথা থেকে এসেছে এত বিপুল পরিমাণের গাছের গুঁড়ি? সে বিষয় বনকর্তারা নিশ্চিত করে কিছু বলতে না পারলেও বন দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সচরাচরর ডুয়ার্সের বনাঞ্চলের যে সমস্ত গাছ রয়েছে বন্যাতে সেই ধরনের কাঠ খুব বেশি ছিল না। বরং পাহাড়ি গাছের সবচেয়ে বেশি পাইন গাছ ছিল। প্রাথমিকভাবে বনদপ্তর জানতে পেরেছে, ভুটানের ফুন্টশোলিং এলাকায় কাঠের গুড়ি রাখার জন্য বিশাল একটি গুদাম রয়েছে। আচমকা তোর্সা নদীর জলস্তর বৃদ্ধির ফলে সেই কাঠগুলি তলিয়ে যায় এবং সেটাই জলের স্রোতে ভেসে চলে এসেছে।

এই ভয়াবহ বন্যায় কাঠ সংগ্রহ করেছিলেন ঘুঘুমারির বাসিন্দা আমজাদ আলি, রফিকুল ইসলামরা। জানান, এত বেশি পরিমাণে কাঠ ভেসে আসবে তাঁরা ভাবতেও পারেননি। বহু বন্যা দেখেছেন, তবে এই ধরনের পরিস্থিতি কোনদিন দেখেননি। সেই কাঠ সংগ্রহ করতে বেশ কয়েকজন জলে তলিয়ে গিয়েছে। তবে যারা ওই কাঠ সংগ্রহ করতে পেরেছে, সেগুলোর এখন দাম বেশ ভালো বলেই জানা গিয়েছে। এবং কাঠের ব্যবসায়ীরা সেটা কিনতে রীতিমতো ভিড় জমিয়েছেন।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ