Advertisement
Advertisement
Konnagar

কোন্নগরে তৃণমূল নেতা খুনে গ্রেপ্তার কুখ্যাত গ্যাংস্টার বাঘা, আরও ‘মাথা’র খোঁজে পুলিশ

বাম আমলের 'ত্রাস' বাঘার সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে তৃণমূল নেতা খুন হন বলেই পুলিশ সূত্রে খবর।

Police arrest gangster Bagha in Konnagar TMC leader murder case

কুখ্যাত দুষ্কৃতী বাঘা

Published by: Sayani Sen
  • Posted:August 3, 2025 11:27 am
  • Updated:August 3, 2025 12:14 pm   

সুমন করাতি, হুগলি: কোন্নগরে তৃণমূল নেতা খুনে জারি ধরপাকড়। কুখ্যাত গ্যাংস্টার বাঘাকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। বাঁকুড়ার সোনামুখী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করা হল। বাম আমলের ‘ত্রাস’ বাঘার সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে তৃণমূল নেতা খুন হন বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। ফের এলাকায় বাঘার বাড়বাড়ন্তে আতঙ্কিত স্থানীয়রা। 

Advertisement

জানা গিয়েছে, এলাকার একটি সংস্থার জমি বিক্রি করে দেওয়া নিয়ে পঞ্চায়েতে মতানৈক্য তৈরি হয়েছিল। পঞ্চায়েতের প্রায় সকলেই জমি বিক্রির সপক্ষে থাকলেও এর বিরোধিতা করেন পিন্টু। ডানকুনির একটি জমি নিয়েও তাঁর সঙ্গে বাকি অংশীদারদের বিরোধ তৈরি হয়েছিল। বাধা হয়ে দাঁড়ানোই কাল হল কোন্নগরের কানাইপুরের নিহত তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য পিন্টু চক্রবর্তীর। জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই তৃণমূল নেতাকে খুন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। সেজন্য পথের কাঁটা সরাতে ভাড়াটে খুনি লাগিয়ে তাঁকে খুন করা হয়। কানাইপুরে তৃণমূল নেতার সেই নৃশংস খুনের ঘটনায় শনিবার তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে সেদিনের হাড়হিম করা দৃশ্য।

বুধবার সন্ধ্যা তখন সাড়ে সাতটা। কোন্নগরের কানাইপুরে তৃণমূল নেতার গ্যাস গোডাউনের উলটোদিকের রাস্তায় এসে হাজির হল দু’জন। বাইরে থেকে এমনি একঝলকদেখলে মনে হবে পথচলতি কেউ। এরপর কিছুক্ষণের অপেক্ষা। অফিস থেকে বেরিয়ে তৃণমূল নেতা দাঁড় করানো বাইকে উঠতেই কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই পিছন থেকে আচমকা কাটারি নিয়ে হামলা চালায় দুই দুষ্কৃতী। চলতে থাকে এলোপাথাড়ি কোপ। বাইক থেকে তৃণমূল নেতা মাটিতে পড়ে গেলেও একের পর এক কোপ মারতে থাকে দুষ্কৃতী। ভরসন্ধ্যায় চোখের সামনে ভয়াবহ এই ঘটনা দেখলেও ভয়ে কাছে আসতে পারেননি প্রত্যক্ষদর্শীরা কেউই। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যকে খুনের পর হেঁটেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করে দুই দুষ্কৃতী।

শনিবার এই ঘটনায় মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হল – বিশ্বনাথ দাস ওরফে বিশা, বিশ্বজিৎ প্রামাণিক ও দীপক মণ্ডল। এদের মধ্যে বিশ্বনাথ দাস ওরফে বিশা তৃণমূল নেতার ব্যবসায়িক পার্টনার। সে কানাইপুরের বাসিন্দা। বিশা বারাসত ও শাসনের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ ও দীপককে ৩ লক্ষ টাকা সুপারির বিনিময়ে ভাড়াটে খুনি হিসাবে নিয়োগ করেছিল। ঘটনার দু’দিন আগে দুই ভাড়াটে দুষ্কৃতী বিশার বাড়িতে আসে। সেখান থেকে তারা এলাকা রেকি করে। তারপর ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তৃণমূল নেতাকে খুনের পর দুষ্কৃতীরা কিছুটা হেঁটে যায়। সেখান থেকে তাদের স্কুটারে করে স্টেশনে পৌঁছে দেয় বিশা। তদন্তে নেমে প্রথমেই পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। সেই ফুটেজে ঘটনার আগে বিশ্বজিৎ ও দীপককে দিনের বেলায় এলাকা রেকি করতে দেখা যায়। সেখান থেকে উল্লেখযোগ্য সূত্র খুঁজে পায় পুলিশ। এলাকা রেকি করার সময় দুষ্কৃতীরা ফোন করছিল। তাদের ফোনের সেই সময়কার টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করা হয়। বর্তমানে দুষ্কৃতীদের ফোন বন্ধ থাকলেও পুলিশ জানতে পারে, তারা কোন এলাকায় আত্মগোপন করে রয়েছে। সেইমতো পুলিশ শুক্রবার রাতে অভিযান চালায়। বারাসত ও শাসন থেকে বিশ্বজিৎ ও দীপক নামে দুই ভাড়াটে খুনিকে গ্রেপ্তারের পর তাদের জেরা করে বিশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখনই সামনে আসে ৩ লক্ষ টাকা সুপারির বিনিময়ে তাদের খুনের বরাত দিয়েছিল বিশা। রবিবার কুখ্যাত দুষ্কৃতী বাঘাকেও গ্রেপ্তার করল পুলিশ।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ