Advertisement
Advertisement

Breaking News

Suti

রাস্তার বেহাল দশা, সুতিতে খাটিয়ায় চড়ে হাসপাতালে অন্তঃসত্ত্বা

দ্রুত ওই এলাকায় রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরুর আশ্বাস স্থানীয় বিডিওর।

Pregnant woman carried to hospital by her family members in Suti
Published by: Sayani Sen
  • Posted:July 11, 2025 6:52 pm
  • Updated:July 11, 2025 6:52 pm  

শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: দু’বার রাস্তা তৈরির কাজের উদ্বোধন হলেও গ্রামে নেই রাস্তা। গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ যাতে ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের রাস্তা ব্যবহার করে উপকৃত হতে পারেন সেই উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকার প্রায় দেড় বছর আগে সুতি-১ ব্লকের হাড়োয়া গ্রামপঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত পারাইপুর গ্রামে প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির জন্য ৩৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল। স্থানীয় বিডিও অফিস থেকে রাস্তা নির্মাণের কাজের ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ পাওয়ার পর আজ পর্যন্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা ওই গ্রামে রাস্তা তৈরীর কাজ শুরু করেনি বলে অভিযোগ। তার ফলে আজও অসুবিধার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা। খাটিয়া করে প্রসূতিকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হচ্ছে হাসপাতালে। ভাইরাল হওয়া হাড়োয়া গ্রামের একটি ভিডিওতে দেখতে পাওয়া গিয়েছে, গ্রামের রাস্তা কাদায় ভর্তি থাকায় অন্তঃসত্ত্বাকে তাঁর পরিবারের সদস্যরা খাটিয়ায় চাপিয়ে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেন সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল।

Advertisement

২০২৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পারাইপুর গ্রামে দক্ষিণপাড়া এবং পূর্বপাড়ার মধ্যে রাস্তা তৈরির জন্য এটি সংস্থাকে ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রায় দেড় বছরে সেই সংস্থা গ্রামে এক মিটার রাস্তাও তৈরি করেনি বলে অভিযোগ। তার জেরে অল্প বৃষ্টিতে গ্রামের রাস্তা এক হাঁটু কাদায় ডুবে থাকে। গ্রামের কোনও মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে সেখানে অ্যাম্বুল্যান্স বা অন্য কোনও গাড়ি ঢুকতে পারে না। ফলে অনেক সময় গ্রামের লোকজন খাটিয়া করে পরিবারের অসুস্থ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধ্য হন। সুতি -১ পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাধ্যক্ষের প্রতিনিধি তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা আসগার আলী বলেন,’ এই রাস্তাটি নির্মাণ কাজের ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ বার হওয়ার পর স্থানীয় বিডিও এবং সুতির বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস পৃথকভাবে দু’বার রাস্তাটির কাজ শুরুর উদ্বোধন করেছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত গ্রামে ১ মিটার রাস্তাও তৈরি হয়নি। গোটা বিষয়টি বহুবার বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস এবং সাংসদ খলিলুর রহমানকে জানানো হয়েছে।’

গ্রামবাসীরা জানান, এলাকায় একটি স্কুল ছাড়াও ছোটখাটো প্রচুর দোকান রয়েছে। রাস্তা খারাপ থাকার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদেরকে স্কুলে যেতে গেলেও এক হাঁটু কাদা পার হয়ে যেতে হয়।
স্হানীয় গ্রামবাসী বেলাল হোসেন বলেন,”গ্রামের রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ আমাদেরকে নিজেদের মোটরসাইকেল অন্যের বাড়িতে রেখে এক কিলোমিটার কাদা রাস্তা হেঁটে বাড়িতে ঢুকতে হয়। কারণ রাস্তা দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। মাত্র এক কিলোমিটার রাস্তা তৈরী হয়ে গেলেই আমরা কাদা থেকে মুক্তি পাব।” স্থানীয় আশাকর্মী সাবিনা খাতুন জানান,’ সম্প্রতি শিউলি খাতুন নামে এক অন্তঃসত্ত্বা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য খাটিয়া করে বাড়ির লোক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে এসেছিল। গ্রামে পাকা রাস্তা না থাকার জন্য হঠাৎ করে প্রসব যন্ত্রণা উঠলে অনেক সময় প্রসূতি মাকে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসা সম্ভব হয় না,বাড়িতেই প্রসব হয়ে যায়।’

এপ্রসঙ্গে সুতির বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস বলেন,’ ওই রাস্তার ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ বার হওয়ার পর আমি কাজ শুরুর শিলান্যাস করেছিলাম। কিন্তু তারপরে জানতে পেরেছি দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা রাস্তার কাজ করেনি। বিডিও কেন ওই ঠিকাদার সংস্থাকে ‘শোকজ’ করেনি তা আমি বলতে পারব না। ‘ সুতি-১ ব্লকের বিডিও অরূপ কুমার সাহা বলেন, “রাস্তা তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা সময়মতো কাজ না করায় তাকে দু’বার শোকজ করা হয়েছে। তবে ওই এলাকায় ‘হিউম পাইপ’ পড়েছিল। তাই রাস্তা নির্মাণ করার মত অবস্থা ওই গ্রামে ছিল না। সম্প্রতি সমস্ত বাধা সরানো হয়েছে এবং রাস্তা নির্মাণ করার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এলাকায় ফেলা হয়েছে। দ্রুত ওই এলাকায় রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে যাবে।”

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement