Advertisement
Advertisement

অযোধ্যা পাহাড়ে বিদায়ী সভাধিপতির ছেলের নির্মীয়মাণ রিসর্টের কাজ বন্ধ করল প্রশাসন

পঞ্চায়েত ভোটে খারাপ ফলের জের!

Purulia: District Administration stops Resort work atop Ayodhya Hill
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 5, 2018 8:16 pm
  • Updated:June 5, 2018 8:17 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বিদায়ী সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতোর ছেলের নির্মীয়মান রিসর্টের কাজ বন্ধ করে দিল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। অযোধ্যা পাহাড়ের মাথায় বনদপ্তরের অযোধ্যা বনাঞ্চল কার্যালয়ের পাশে ওই নির্মীয়মান রিসর্টের কাজ পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সম্প্রতি বন্ধ করে দেয়। ওই রিসর্ট গড়তে যে সমস্ত সরকারি ছাড়পত্র দরকার তা মেনে ওই কাজ করা হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতেই ওই কাজ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। মঙ্গলবার দুপুরে পুরুলিয়ার জেলাশাসক অলোকেশপ্রসাদ রায় বলেন, “ওই কাজ বিধি মেনে হচ্ছে কিনা তা জানতে নথিপত্র চেয়েছি আমরা। তাই কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।”

Advertisement

অভিযোগ, পুরুলিয়া শহরের পিএন ঘোষ স্ট্রিটের বাসিন্দা তথা ব্যবসায়ী অনুপ বাজাজের কাছ থেকে বছর দেড়েক আগে পুরুলিয়া জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো তার প্রভাব খাটিয়ে ওই রিসর্টের জমি মাত্র ৩২ লক্ষ টাকায় কেনেন। তারপর তার বড় ছেলে সন্দীপ মাহাতোর নামে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নেন। সম্প্রতি এই জেলায় দলের সাংগঠনিক সভা করতে এসে যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা দলের তরফে এই জেলার পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গত ১ জুন রাতে জেলার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠকে সভাধিপতির এই রিসর্ট নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারপরই পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসে বলে জেলার রাজনৈতিক মহলের ধারনা। সভাধিপতি এবার পুরুলিয়া জেলা পরিষদের বলরামপুর ব্লকের এগারো নম্বর আসনে দাঁড়িয়ে ৯,১৪০ ভোটে হেরে যান। সেই সঙ্গে তাঁর ‘গড়’ও হাতছাড়া হয়। এই ব্লকের সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েত, সমিতি ও দুটি জেলা পরিষদের আসনে হারতে হয় শাসক দলকে। স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এক একর ৩৬ ডেসিমেল জমির ওপর এই নির্মীয়মান রিসর্ট গড়ার কাজ গত দেড় বছর আগে শুরু হয়। শহর পুরুলিয়ার ব্যবসায়ী অনুপ বাজাজের কাছ থেকে যখন সভাধিপতি এই জমি কেনেন তখন সেখানে একটি মাত্র নির্মীয়মান ঘর ছিল।

অযোধ্যা হিলটপের ওই এলাকার বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই জমির এখন বাজার দর প্রায় কোটি টাকা। ওই ব্যবসায়ী তার জমির দাম রেখেছিলেন প্রায় আশি লক্ষ টাকা। অভিযোগ নিজের সভাধিপতির পদের প্রভাব খাটিয়ে একটি ঘর সমেত ওই জমি নির্দিষ্ট দামের অর্ধেকের চেয়ে কমে কিনে নেন। এদিন এই বিষয়ে সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতোর প্রতিক্রিয়া জানতে গেলে তিনি চটে লাল হয়ে যান। ফোন কেটে দেন। তারপর আবার ফোন করে তাঁকে প্রতিক্রিয়া নিতে একের পর এক তথ্য দিয়ে বলতেই তিনি ভাঙতে শুরু করেন। তাঁর কথায়, “ওই জমি তিরিশ থেকে বত্রিশ লাখ টাকায় কেনা হয়েছে। জমির পরিমান এক একর ৩৬ ডেসিমেল। তবে ওই কাজ বন্ধের প্রশাসনের কোন লিখিত নির্দেশ আমার কাছে আসেনি।” অথচ ভোটের আগেই এই রিসর্টের কাজ চলছিল রমরমিয়ে। এখন সেখানে কোন শ্রমিকই নেই। নির্মীয়মান রিসর্টের চারদিক ফাঁকা। অথচ সেখানে তাঁর অনুগামীদের প্রায়শই খাটিয়া পেতে শুয়ে-বসে থাকতে দেখা যেত। প্রশাসন এই রিসর্টের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার পর তদন্তে নেমে জানতে পারে শহর পুরুলিয়ার ব্যবসায়ী অনুপ বাজাজ ওয়েস্ট বেঙ্গল ফিনান্স করপোরেশন লিমিটেডের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করতে পারছিলেন না। তাই ওই সমস্যার সমাধানে শহরের ওই ব্যবসায়ী সভাধিপতির দ্বারস্থ হন। তখনই তিনি তাঁর সভাধিপতির প্রভাব খাটিয়ে ব্যবসায়ীর ঘোষনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট দামের অর্ধেকের কমে কিনে নেন বলে অভিযোগ।

তবে এই বিষয়টি মানতে চাননি সভাধিপতি। তাঁর ঘনিষ্ট মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রিসর্ট তিনি অযোধ্যা পাহাড়ে ট্যুরিজমের ব্যবসার কাজে লাগাতেন। তাই রিসর্টের ঘরের ভাড়া নির্ধারন করতে কাজকর্মও শুরু হয়।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement