Advertisement
Advertisement
Krishnanagar Murder

প্রথমে দাদুর ঘর, পরে ঈশিতার ঘরের মেঝেতে বসে গুলি! কৃষ্ণনগর কাণ্ডের পুনর্নির্মাণে দেখালো দেশরাজ

গত ২৫ আগস্ট কৃষ্ণনগরের মানিকপাড়ার বাসিন্দা ঈশিতাকে খুন করে প্রেমিক দেশরাজ।

Reconstruction of krishna nagar murder case by accused deshraj

দেশরাজকে নিয়ে ঈশিতার বাড়িতে পুলিশ।

Published by: Kousik Sinha
  • Posted:September 9, 2025 8:20 pm
  • Updated:September 9, 2025 8:58 pm   

সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা। একেবারে টানটান উত্তেজনা। পাড়া প্রতিবেশীদের কৌতূহলী মুখ! ছাই রঙের পোশাক পরে ঈশিতা মল্লিকের বাড়িতে ঢুকল দেশরাজ। তবে এবার পুলিশের গাড়িতে! বাড়িতে ঢুকেই প্রথমে নীচের তলায় দাদুর ঘরের দিকে এগিয়ে যেতে গিয়েও থেমে গেল। এরপর সেখান থেকে বাড়ির ডান পাশের সিঁড়ি ধরে সটান ঈশিতার দোতলার ঘরে। সেখানে মেঝেতে বসা অবস্থায় পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে পরপর দুটো গুলি। রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে ‘লুটিয়ে’ পড়লেন ঈশিতা।’ কীভাবে খুন বান্ধবীকে? এভাবেই এদিন পুলিশকে দেখিয়ে দিলেন ধৃত দেশরাজ।

Advertisement

গত ২৫ আগস্ট কৃষ্ণনগরের মানিকপাড়ার বাসিন্দা ঈশিতা মল্লিককে খুন করে তাঁর প্রেমিক দেশরাজ সিং। তদন্তকারীদের অনুমান, প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে অভিযুক্ত। কিন্তু কীভাবে এই ঘটনা ঘটান অভিযুক্ত দেশরাজ? আজ মঙ্গলবার ধৃতকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে পুলিশ। দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশের একটি দল অভিযুক্তকে সঙ্গে নিয়ে কোতোয়ালি থানা এলাকার মানিক পাড়ার বাসিন্দা ঈশিতার বাড়িতে নিয়ে আসে। সেখানে মিনিট দশেকের মধ্যে গোটা ঘটনা পুনঃ নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। এরপর ফের দেশরাজকে পুলিশ ভ্যানে চাপিয়ে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিন ঘটনার পুনর্নির্মাণ চলাকালীন অভিযুক্ত দেশরাজ দেখায়, ঈশিতা রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়লে সে তাঁর মায়ের জন্য অপেক্ষা করছিল। তাঁর মা, কুসুম মল্লিক এবং ভাইকে লক্ষ্য করেও সে গুলি চালায় বলে দাবি। যদিও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্দুকের ব্যারেলেই আটকে যায় সেই গুলি। এরপর ঈশিতার মা এবং ভাইকে ঘরে আটকে রেখেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে সরাসরি কৃষ্ণনগর স্টেশন, সেখান থেকে ট্রেন ধরে নৈহাটি পৌঁছে যান অভিযুক্ত দেশরাজ।

আগে থেকেই এদিন কৃষ্ণনগরের ছাত্রী ঈশিতা মল্লিককে খুনের ঘটনা পুনর্নির্মাণের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল জেলা পুলিশ। সকাল থেকে বাড়ির পাশাপাশি এলাকায় মোতায়েন করা হয় বাড়তি পুলিশকর্মী। নির্ধারিত সময়ের কিছুটা পরে পুলিশকে দু’জন আধিকারিক এবং চার কর্মী অভিযুক্ত দেশরাজকে মৃতের বাড়িতে নিয়ে আসেন। নিরাপত্তার কথা ভেবে একেবারে বাড়ির ঢুকে যায় পুলিশের ভ্যান। গাড়ি থেকে নেমেই কীভাবে বাড়ির উপরে ঢুকে ঈশিতাকে খুন করেন তা পুলিশকে দেখিয়ে দেয় দেশরাজ। জানা গিয়েছে, ঘটনার পুনঃ নির্মাণ চলাকালীন ঘরের মেঝেতেই বান্ধবীকে সে গুলি করেছিল তা স্বীকার করে নিয়েছেন দেশরাজ।

গোটা ঘটনার যখন পুনর্নির্মাণ চলছে, তখন বাড়িতে ছিলেন না বাবা দুলাল মল্লিক। ভাইও ছিলেন স্কুলে। একমাত্র দিদি বর্তমানে ওড়িশার কলেজে পড়াশোনা করছেন। গোটা বাড়িতে একমাত্র পাশের ঘরে নিজেকে ঘরবন্দি রেখেছিলেন মা, যিনি সেদিনের নৃশংস ঘটনা প্রথম চাক্ষুষ করেছিলেন। পুলিশের নির্দেশে তিনি নিজেকে ঘরবন্দি রেখেছিলেন বলে জানিয়েছেন কুসুম মল্লিক। সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে দেশরাজের বয়ানের সঙ্গে, ঈশিতার মা ও ভাই-এর বয়ান যাচাই করে দেখতে চান তদন্তকারীরা

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ