Advertisement
Advertisement
Royal Bengal Tiger

টোপ সুস্বাদু ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট’ও গিলল না জিনাত! বাঘিনীকে ধরতে ছদ্মবেশ বনকর্তাদের

পুরুলিয়ার রাইকা পাহাড়ের আশপাশ থেকে মিলল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের গোপনাঙ্গের পশম, বিষ্ঠা, পায়ের ছাপ।

Royal Bengal Tiger Zeenat almost plays hide and seek, forest guards cannot reach her yet
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:December 23, 2024 2:46 pm
  • Updated:December 23, 2024 3:43 pm   

সুমিত বিশ্বাস ও অমিত সিং দেও, পুরুলিয়া ও মানবাজার: মহিষ, শূকরের টোপ দিয়ে বাগে আনা যায়নি বাঘিনীকে। রবিবার গভীর রাতে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়ের চেক ড্যাম থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে আরেকটি জায়গায় টোপ হিসেবে দেওয়া হয়েছিল সুস্বাদু ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট’ বা বাংলার কালো ছাগল। কিন্তু তাও গেলেনি জিনাত। খাঁচাবন্দিও হয়নি সে। এদিকে বাঘের ভয়ে রাইকা পাহাড়তলির একের পর এক গ্রামের মানুষজন গৃহপালিত পশুদের আগলে রাখছেন, জঙ্গলে পাঠাচ্ছেন না।

Advertisement

বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়ে বাঘিনী জিনাতের খোঁজ করা সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিকদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, যেখানে ছাগলের টোপ দেওয়া হয়েছিল, তার পাশ দিয়ে চলে যায় জিনাত। কিন্তু টোপ দেখেছিল কিনা, সেই তথ্য নেই ওই ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিকদের কাছে। কারণ, বিধি অনুযায়ী এই টোপের পাশে বনদপ্তরের ট্র্যাপ ক্যামেরা লাগানো উচিত। যাতে সহজেই বোঝা যায় পাতা ফাঁদের কাছে বাঘিনী এসেছে কিনা। কিন্তু সেখানে ট্র্যাপ ক্যামেরা না থাকায় সেই তথ্য হাতে পায়নি কংসাবতী দক্ষিণ বন বিভাগ। রাইকা পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়ার পর সোমবার সকাল পর্যন্ত জিনাতকে কেউ দেখেননি। তবে রবিবার সকাল থেকে এই বনাঞ্চল এলাকায় জিনাতের একাধিক পায়ের ছাপ মিলেছে। দেখা গিয়েছে বিষ্ঠা, গোপনাঙ্গের পশমও।

বাঘিনীর পায়ের ছাপ রাইকা পাহাড় এলাকায়। ছবি: প্রতিবেদক।

বাঘিনীর ভয়ে রাইকা পাহাড় লাগোয়া গ্রাম রাহামদা, কেশরা, উদলবনি, লেদাশাল, বারুডি, কেন্দডি গ্রামের মানুষজন তাদের গবাদি পশুকে ঘরেই বন্দি করে রেখেছেন। বাঘিনীর পেটে চলে যাওয়ার আশঙ্কায় গরু, মহিষ, ছাগল রাইকা পাহাড়ের জঙ্গলে পাঠাচ্ছেন না তাঁরা। রাহমদা গ্রামের বাসিন্দা বেনুবালা মুর্মু, বাসন্তী টুডু বলেন, “রবিবারই বনদপ্তর ও পুলিশ মাইকিং করে জানিয়েছিল জঙ্গলে বাঘ রয়েছে। সতর্ক ও সচেতনভাবে চলাফেরা করতে বলেছে। তাই আমরা আর কোনও গবাদি পশুকে জঙ্গলে পাঠাইনি।” উদলবনি গ্রামের বাসিন্দা বাসুদেব মান্ডি বলেন, “গ্রামের গাছতলায়, ঘরে রেখেই গবাদি পশুদের পরিচর্যা করতে হচ্ছে। তাছাড়া আর কোনও উপায় নেই। কাঁচা জীবনকে তো আর বাঘের হাতে তুলে দিতে পারি না।”

ক্যামোফ্লেজ পোশাকে নজরদারি বনদপ্তরের আধিকারিকদের। ছবি: প্রতিবেদক।

তবে ভোর ৫টার পর আর ট্র্যাক করা যাচ্ছে না জিনাতকে। রাইকা পাহাড়ের একাধিক গুহায় আশ্রয় নিতে পারে, বলছে বনদপ্তর। তবে ‘শ্যাডো জোন’ হওয়াতেই বারংবার টাওয়ার বিচ্ছিন্ন। রেডিও সিগনালে সমস্যা। তবে হাল ছাড়ছে না সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিক থেকে কর্মীরা। তাদের র‌্যাপিড রেসপন্স টিমের জোড়া গাড়ি রাইকার পাহাড় জঙ্গল রীতিমতো চষে বেড়াচ্ছে। ক্যামোফ্লেজ পোশাকে নজরদারি চলছে ওড়িশার ওই আধিকারিকদের। তাঁদের তত্ত্বাবধানে কংসাবতী দক্ষিণ বন বিভাগের কর্মীদের টহলও চলছে। এদিকে চেক ড্যাম এলাকায় যে মহিষটিকে টোপ হিসাবে ব্যবহার করা হয় তাকে এদিন সকালে তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখান থেকে তিন কিমি দূরে বাংলার কালো ছাগলের টোপ এখনও রয়েছে। ওই এলাকায় কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। যৌথ বন পরিচালন কমিটির সদস্যরা কর্ডন করে রেখেছেন।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ