Advertisement
Advertisement
Jibantala

ক্লাসরুমে ঘুঘুর বাসা, খড়কুটো দিয়ে লাইটের উপর নিরাপদ আশ্রয়ে পাখিরা

পাখিদের যাতে ক্ষতি না হয়, সেজন্য নজর রাখছেন পড়ুয়া-অধ্যাপকরাও।

safe nest for birds in the classroom of Jibantala College

নিশ্চিন্তে ডিমে তা দিচ্ছে মা ঘুঘু। নিজস্ব চিত্র

Published by: Suhrid Das
  • Posted:March 4, 2025 5:56 pm
  • Updated:March 4, 2025 5:56 pm   

দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: কমেছে ঝোপঝাড়। গ্রামবাংলাও ঢাকছে কংক্রিটের জঙ্গলে। তাই বাসা হারাচ্ছে পাখি। নিশ্চিন্তে বংশবিস্তারের সুযোগও কম। এবার তাই নিশ্চিন্তে বাসা বানিয়ে ডিমে তা দেওয়ার জন্য ক্লাসরুমকে বেছে নিল ঘুঘু। একটি দুটি নয়, চারটি বাসা বানিয়েছে তারা। নিশ্চিন্তে সেখান থেকেই বাচ্চা লালনপালন করবে এই ভেবেই। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং ২ নম্বর ব্লকের জীবনতলা রোকেয়া মহাবিদ্যালয়। যে মহাবিদ্যালয়ের চারটি ক্লাসরুমে নিরাপদে বসে ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটানোর অপেক্ষায় ঘুঘুরা।

Advertisement

বেশ কয়েক বছর ধরেই এভাবেই ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে আসছে তারা। মূলত ব্ল্যাকবোর্ডের উপরে অথবা লাইটের উপরে তারা খড়কাঠি ও নরম জিনিসপত্র দিয়ে বাসা তৈরি করেছে। ইতিমধ্যেই কলেজে শুরু হয়েছে ন্যাক ভিজিটের প্রস্তুতি। চলছে ক্লাসরুম পরিষ্কার করার ও ঝাড়পোছ করার পর্ব। কিন্তু চারটি ঘুঘুর বাসা যাতে কোনওভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে নজর রেখেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী বসন্তকালেই ঘুঘু পাখির ডিম দেওয়ার সময়। এই সময় তারা ডিম দেওয়ার জন্য বাসা তৈরি করে। সাধারণত ছোট ছোট ঝোপঝাড়ে তারা বাসা বানাতে অভ্যস্ত। আর এই বাসা বানানোর জন্য ছোট ঝোপ তারা পছন্দ করে। কিন্তু বর্তমানে চারিদিকে সেভাবে ছোট ঝোপের অস্তিত্ব লুপ্তপ্রায়। ছোট ঝোপ কেটে উঠছে কংক্রিটের দেওয়াল। ফলে অবশেষে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে ক্লাস রুমকে বেছে নিচ্ছে পাখিরা।

কলেজেরই রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তথা প্রাণী বিশেষজ্ঞ নারায়ণ সামন্ত বলেন, “সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক ঘুঘু পাখি দুটো ডিম দেয়। একটি ডিম দেওয়ার পর মাঝে একদিন ডিম বন্ধ রেখে পরের দিন পুনরায় ডিম পাড়ে। ১৬ থেকে ১৭ দিনের মাথায় বাচ্চা ফুটতে শুরু করে। যতদিন না বাচ্চা ফুটে বের হচ্ছে ততদিন পুরুষ এবং মেয়ে ঘুঘু নিয়ম করেই ডিমে তা দিতে থাকে। তাছাড়া ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার পর আরও প্রায় ১৫ দিন সময় লাগে বাচ্চা বড় হতে। অর্থাৎ প্রায় এক মাস সময় লাগে ডিম পাড়া থেকে বাচ্চা বড় হওয়া পর্যন্ত।”

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অনুপ মাঝি বলেন, “প্রতি বছর বেশ কিছু পাখি কলেজের মধ্যেই তাদের প্রজনন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। প্রায় প্রতিটা ঘরেই দিনের পর দিন পাখিরা বাসা করে থাকে। আমরা সেগুলোকে যথেষ্ট যত্ন সহকারেই রাখি। যাতে কোনওভাবেই তারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটা নজরে রাখাই হল আমাদের কাজ। কারণ পরিবেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে এই সমস্ত পাখি। মূলত আমাদের কলেজের মধ্যে ঘুঘু-চড়াই বাসা বানায় এবং বাচ্চা তৈরি করে।” শত ছাত্রছাত্রীর কোলাহল। পরীক্ষার্থীদের নিস্তব্ধতা। কোনও কিছুই তাদের বাসাছাড়া করতে পারে না। নিয়ম করে ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফুটিয়ে চলেছে ঘুঘু।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ