ঘটনার কথা জানার পরে দুশ্চিন্তায় যুবক। নিজস্ব চিত্র
অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: তিনি পেশায় কারখানার শ্রমিক। মাসে বেতন পান মাত্র সাড়ে ৯ হাজার টাকা। সেই টাকায় সংসার চালাতেই তিনি কার্যত হিমশিম খান। আর তাঁরই কিনা বকেয়া জিএসটির পরিমাণ সাত কোটি টাকা! শুধু তাই নয়, জিএসটি আধিকারিকরা তাঁর বাড়িতে হানাও দিয়েছেন বলে খবর। শেষপর্যন্ত উপায় না দেখে ওই যুবক পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার ডোমজুড়ে। ওই যুবকের নাম কার্তিক রুইদাস।
জানা গিয়েছে, ডোমজুড়ের নতিবপুরের বাসিন্দা কার্তিক রুইদাস মুম্বই রোডের ধারে জালান কমপ্লেক্সের একটি কারখানায় কাজ করেন। গত বৃহস্পতিবার তাঁর বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন রাজ্য জিএসটি দপ্তরের চার-পাঁচজন আধিকারিক। সেসময় কার্তিক কারখানায় কাজ করছিলেন। খবর পেয়ে দ্রুত তিনি বাড়ি যান। আধিকারিকরা জানান, তাঁর ৭ কোটি টাকা জিএসটি বাকি। কেডি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি কোম্পানির তরফে তাঁর ওই ৭ কোটি টাকা জিএসটি বাকি রয়েছে। কার্তিকের নামে থাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মাসে ৩৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়! তিনিই ওই সংস্থার মালিক! সেই কথা শুনেই হতবাক হয়ে যান ওই যুবক।
কার্তিক আধিকারিকদের জানান, এমন কিছুর সঙ্গে তিনি জড়িত নন। ব্যাঙ্কের পাশবই-সহ অন্যান্য কাগজপত্র দেখানো হয়। এই বিষয়ে বিন্দুবিসর্গ তিনি জানেন না বলেও আধিকারিকদের জানানো হয়। অভিযোগ, তাঁর ঠিকানা, প্যান কার্ড, আধার কার্ড ব্যবহার করে জিএসটি পোর্টালে নাম তুলে দেওয়া হয়েছে। বকেয়া জিএসটি আদায় করতে ওই যুবকের বাড়ি গিয়ে হতবাক হয়েছেন জিএসটি কর্তারাও। কার্তিকের কাগজপত্র নিয়ে জালিয়াতি হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। আধিকারিকরা তাঁকে আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথাও জানান। গোটা বিষয়টি জানার পরে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল কার্তিক রুইদাসের। শেষপর্যন্ত সোমবার রাতে তিনি হাওড়া সিটি পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনার পিছনে বড়সড় অপরাধচক্র কাজ করছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। রহস্য উদঘাটনের জন্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে পুলিশ।
কার্তিক বলেন, “সামান্য বেতনে জালান কমপ্লেক্সের একটি কারখানায় কাজ করি। কোনওদিন কোনও ব্যবসা করিনি। আমার ঠিকানা, প্যান কার্ড, আধার কার্ড ব্যবহার করে জিএসটি পোর্টালে নাম তুলে দেওয়া হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.