সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: খনি এলাকার সবুজায়নে অভিনব উদ্যোগ। লাখ টাকার সরকারি প্রকল্পের কাজ করলেই কোলিয়ারি এলাকায় ওই ঠিকাদারি সংস্থাকে রোপণ করতে হবে পাঁচটি গাছ। তারপর ছ’মাস ধরে পরিচর্যা করতে হবে সেগুলির। ছ’মাসের আগে সেই গাছ মরে গেলে বা ক্ষতি হলে সরকারি প্রকল্পের কাজের জন্য প্রশাসনের ঘরে জমা থাকা সিকিউরিটি মানি ফেরত পাবে না ওই ঠিকাদার সংস্থা।
খনি অঞ্চলকে সুবজ করে তুলতে পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া ব্লকের শালতোড় গ্রাম পঞ্চায়েত এই উদ্যোগ নিয়েছে। যাকে মডেল করে সমগ্র নিতুড়িয়া ব্লকেই এই প্রকল্প কার্যকর করতে চায় নিতুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতি। পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল ঘেঁষা পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া ব্লক যেন খটখটে শুকনো। চারদিকে খনি। কয়লার ধুলো ওড়ে চারপাশে। সেই খনি এলাকাকেই সবুজায়ন করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে শালতোড় গ্রাম পঞ্চায়েত। তারা বৃক্ষরোপণের মাধ্যমেই সজীব প্রাণের জাগরণ ঘটাতে চান। যেভাবে ক্রমেই আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে তাতে একটি গাছই পারে এই বিপদ থেকে বাঁচাতে। তাই তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত শালতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুমিত সাগর প্রসাদ যাদব বলেন, “এই খনি এলাকাকে সবুজ করার স্বপ্ন আমাদের সকলের। তাই সরকারি প্রকল্পের কাজের সঙ্গেই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। এক লাখ টাকার সরকারি কাজ করলেই পাঁচটি গাছ লাগাতে হবে সেই ঠিকাদার সংস্থাকে। কাজের জন্য অর্থের পরিমাণ বাড়লেই গাছের সংখ্যা বাড়বে। অর্থাৎ কোন ঠিকাদার সংস্থা দশ লাখ টাকার কাজ করলে তাকে পঞ্চাশটি গাছ লাগাতে হবে।” সম্প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতের সাধারণ সভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, ওই গাছের চারা দেবে গ্রাম পঞ্চায়েতই। শুধু তাই নয়, গাছের পরিচর্যায় একশ দিনের কাজের প্রকল্প থেকে ওই গাছে জল দেওয়ার জন্য মজুরেরও ব্যবস্থাও করে দেবে পঞ্চায়েত। শুধু ঠিকাদার সংস্থাকে গাছ লাগিয়ে জাল-সহ বেড়া দিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে ছ’মাস। কারণ, একটি গাছকে সাধারণভাবে ছ’মাস পরির্চযা করলে তার বৃদ্ধিতে আর সেভাবে কোনও সমস্যা হবে না। ঠিকাদার সংস্থা কাজ শুরু বা কাজ শেষের পরেও এই গাছ লাগাতে পারবে। কোথায় গাছ লাগানো হবে সেই সরকারি খাসজমির কথা বলে দেবে গ্রাম পঞ্চায়েতই। আপাতত শালতোড় গ্রাম পঞ্চায়েত সিদ্ধান্ত নিয়েছে দামোদরের ধারে সরকারি খাসজমিতে এই গাছ লাগানো হবে। পাশাপাশি, পথের দু’পাশেও গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সাধারণভাবে গ্রাম পঞ্চায়েতে বছরে এক কোটি টাকার কাজ হয়। ফলে এই কাজেই পাঁচশ গাছ রোপণ হবে। নিতুড়িয়া পঞ্চায়েতসমিতির সহ-সভাপতি শান্তিভূষণ প্রসাদ যাদব বলেন, “শালতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতেরএই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। এই কাজ যাতে আমরা সমগ্র নিতুড়িয়া ব্লকে করতে পারি সেই চিন্তাভাবনা শুরু করেছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.