Advertisement
Advertisement

Breaking News

‘বাড়ি চলুন দাদা’, ঘনিষ্ঠের কথায় কান না দিয়ে প্রাণ খোয়ালেন বিধায়ক!

গুলি চালিয়েছে পঞ্চু নামে এক যুবক, দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের।

Satyajit Biswas was shot while watching programme
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:February 10, 2019 7:09 pm
  • Updated:February 10, 2019 7:09 pm   

পলাশ পাত্র, তেহট্ট: শনিবার মঞ্চে বসে ছোটদের নাচগান বেশ উপভোগ করছিলেন কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। ঘড়িতে সময় তখন প্রায় সন্ধে ৭টা ৪০। ছায়াসঙ্গী মিলন সাহা বারবার বলেছিলেন, ‘দাদা, ৮টা বাজতে চলল। এবার উঠুন, বাড়ি চলুন।’ তেমন আমল দেননি বিধায়ক। দু, তিনবার একই কথা শোনার পর উত্তর দিয়েছিলেন, ‘ছোটদের অনুষ্ঠানটা দেখেই বাড়ি চলে যাব।’ সেই উপভোগ্য সময়টুকুই হয়ে উঠল কাল। মঞ্চে নাচগান চলাকালীন আচমকা লোডশেডিং। সেই সুযোগে দুষ্কৃতীরা খুব কাছ থেকে গুলি চালিয়ে নিজেদের মিশন সফল করে চম্পট দেয়। সত্যজিৎ বিশ্বাসের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পরম্পরা বলতে গিয়ে আক্ষেপ আর চেপে রাখতে পারলেন না বিধায়কের ঘনিষ্ঠ মিলন সাহা। তাঁর কথা মেনে ওই সময় মঞ্চ ছেড়ে বিধায়ক চলে গেলে এমন পরিণতি ঘটত না বলে মনে করছেন মিলন।

Advertisement

দোষীদের রেয়াত নয়, নিহত বিধায়কের পরিবারকে আশ্বস্ত করলেন পার্থ

নদিয়ার হাঁসখালি থানার ফুলবাড়ি এলাকায় বাড়ি বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের। বাড়ি থেকে মাত্র দেড়শো মিটার দূরে ভাইয়ের তৈরি ক্লাব। সেখানেই শনিবার মহাসমারোহে সরস্বতী পুজোর আয়োজন করা হয়। ভাইয়ের অনুরোধে পুজোর মূল পৃষ্ঠপোষক ছিলেন বিধায়ক নিজে। তাই শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকভাবে ফিতে কেটে উদ্বোধনের দায়িত্ব পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাননি কাজ। জনপ্রিয় নেতা হিসেবে চেয়েছিলেন, বসে সবটা দেখেবুঝে নিতে। যাতে বোঝা যায়, তিনি পুজোর সঙ্গে ভালভাবেই জড়িত। তারই অনুসঙ্গে ছোটদের নাচগান দেখার উপভোগ করছিলেন মঞ্চে বসে। একই মঞ্চে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা চাকদহের বিধায়ক রত্না কর ঘোষও। অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ পর মন্ত্রী বিদায় নেন। তাঁকে গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আসেন সত্যজিৎ। ফিরে আবার মঞ্চে বসে অনুষ্ঠান দেখতে থাকেন। এই সময় তাঁর সর্বক্ষণের ছায়াসঙ্গী মিলন বারবার বাড়ি ফেরার জন্য তাঁকে ডাকতে থাকেন। কিন্তু তাতে কান না দিয়ে বিধায়ক জানান, অনুষ্ঠান দেখেই তিনি ফিরবেন। শনিবারের ভয়ংকর ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে এখানে এসেই বারবার থেমে যাচ্ছেন মিলন। বলছেন, ‘দাদা যদি তখনই মঞ্চে বসে না থেকে বাড়ি ফিরে যেতেন আমার সঙ্গে, তাহলে এমন অঘটন ঘটত না। কিন্তু কিছুতেই আমার কথা শুনলেন না।’

বেঙ্গালুরুতে প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী যোগেশ বর্মন

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ফুলবাড়ি এলাকারই এক কলেজ ছাত্র বিধায়ককে গুলি করে পালিয়েছে। বছর একুশের পঞ্চু ওরফে অভিজিৎ পুণ্ডারি নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠছে। তার বিরুদ্ধে হাঁসখালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মিলন সাহা। ঘটনার পর থেকে এলাকা ছেড়ে পলাতক পঞ্চু। জনপ্রিয় নেতাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে জনরোষ গিয়ে পড়েছে তার বাড়ির ওপর। শনিবার রাতেই পঞ্চুর বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে প্রতিবেশীদের একাংশের বিরুদ্ধে। এলাকার জনপ্রিয় বিধায়কের এহেন মর্মান্তিক পরিণতিতে স্থানীয়দের মনে পড়ে যাচ্ছে বছর দুই আগের এমনই এক ঘটনার কথা। ২০১৭ সালের এপ্রিলে সীমান্তবর্তী হাঁসখালিতেই খুন হয়েছিলেন সেখানকার দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা ব্লক সভাপতি দুলাল বিশ্বাস। সেদিনও তাঁর কার্যালয়ের সিসিটিভি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সঙ্গে ছিলেন না নিরাপত্তারক্ষী। এবার সত্যজিৎ বিশ্বাস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সেদিনের ঘটনার মিল পাচ্ছেন অনেকে। আর তাতেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি খুনিরা একই?

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ