Advertisement
Advertisement

মাদকাসক্তদের ছবি আঁকা শিখিয়ে মূলস্রোতে ফেরাচ্ছেন শিলিগুড়ির যুবক

নিজের ছবি বিক্রির আয় থেকে চলে বিনা পয়সার আঁকার স্কুল।

Siliguri youth launch anti-drug campaign
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:March 7, 2019 2:05 pm
  • Updated:March 7, 2019 9:55 pm  

সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: কেউ মাদকাসক্ত হয়ে এনজেপি স্টেশনে ইতস্তত ঘুরে বেড়াত। কেউ আবার জংশন স্টেশনে ভিক্ষে করে ক্ষুন্নিবৃত্তি করত। এমন প্রায় জনা কুড়ি ছেলে মেয়ের এখন নেশার সামগ্রী বদলে গিয়েছে। গাঁজা কিংবা ডেনড্রাইটের বদলে হাতে উঠেছে তুলি। এখন তাদের নেশা স্টেশনের দেওয়ালে ছবি এঁকে বেড়ানো। শুধু তাই নয়, রীতিমতো তালিম নিয়ে শহরের বিভিন্ন ছবি আঁকা প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে তারা। কেউ কেউ জিতেছে পুরস্কারও।

Advertisement

আর তাদের রোজনামচা আমূল বদলে দিয়েছেন যিনি, তাঁর নাম অভিজিৎ দাস। বাড়ি শিলিগুড়ির ঘোগোমালি। নেশা এবং পেশা ছবি আঁকা। তবে এক সময় এনজিও কর্মী হিসেবে কাজ করার সুবাদে সমাজসেবা ঢুকে গিয়েছে তাঁর রক্তে। তিনি শিলিগুড়ি জংশন, শিলিগুড়ি টাউন এবং নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে পথশিশুদের জোগাড় করে বিনা পয়সার স্কুল গড়ে আঁকা শেখাচ্ছেন। বাড়ি শিলিগুড়ির ঘোগোমালিতে। অভিজিৎবাবুর কথায়, ”ওদের তো কেউ নেই। এক সময় এনজিওতে কাজ করার সুবাদে খুব কাছ থেকে দেখেছি ওদের করুণ জীবনযাত্রা।” তাই পেশাগতভাবে এনজিওর চাকরি ছেড়ে দিলেও, কোনওভাবেই ওদের থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারেননি তিনি। “ওদের কচি ও করুণ মুখগুলি আমাকে বারবার টানে। তাই ওদের জন্য সামান্য কিছু করতে পারলে ভাল লাগে।” মন্তব্য তাঁর। সেই থেকেই এমন চিন্তাভাবনা। তাঁর আর্থিক সঙ্গতি নেই। তাই তাঁর সাধ্যের মধ্যে ছবি আঁকা শিখিয়ে ওদের সমাজের মূলস্রোতে ধরে রাখতে চান অভিজিৎবাবু।

[ছাত্রের বাচ্চাকে কোলে নিয়েই অঙ্ক শেখাচ্ছেন অধ্যাপক, কুর্নিশ নেটদুনিয়ার]

নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে ছবি এঁকেছেন অভিজিৎ। পাশাপাশি নানারকম অন্যান্য ছবিও। কোথাও কাঞ্চনজঙ্ঘা, কোথাও টয়ট্রেন, স্টেশনের দেওয়ালে কোথাও জাতীয় পতাকা এবং বিভিন্ন রাজ্যের সংস্কৃতিও তাঁর তুলিতে উঠে এসেছে। যারাই এনজেপিতে নামেন, তাঁর আঁকা ছবির তারিফ করেন। ছবি আঁকা থেকে যা রোজগার হয়, তার একটা অংশ তিনি খরচ করেন প্ল্যাটফর্মের এই শিশুদের পিছনে। তাঁর কাছে ছবি আঁকা শিখে অনেকেই এখন শিল্পী হতে চায়। জংশন স্টেশনের মিলন কিংবা এনজেপির মানু। ভবিষ্যতে কী হতে চায় জিজ্ঞাসা করায় নির্ভীক কন্ঠে জানায় ‘লিওনার্দো দা ভিঞ্চি’। তাঁর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রেল কর্তা থেকে বিভিন্ন স্তরের মানুষ। রাজ্য স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ও শিলিগুড়ি হাসপাতাল ও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ডঃ রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য এই উদ্যোগকে সামাজিক অনুপ্রেরণামূলক বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এই ধরনের উদ্যোগ যত বেশি উঠে আসবে, তত সামাজিক বৈষম্য কমবে। এনজেপি স্টেশন এর ম্যানেজার তপন সাহা এমন উদ্যোগ মানবকল্যাণের পক্ষে ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেন।

[বাঘ সংরক্ষণের বার্তা দিতে বাইকে চেপে বিশ্বভ্রমণে বাঙালি দম্পতি]

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement