Advertisement
Advertisement
Darjeeling

দার্জিলিংয়ের সুদান গুরুংকে নেপালের বলে সমাজমাধ্যমে অপপ্রচারের ঝড়! ক্ষোভ পাহাড়ে

এক্স হ্যান্ডেলে দার্জিলিংয়ের সুদান ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন।

Social media misrepresents Sudan Gurung from Darjeeling as Nepali
Published by: Suhrid Das
  • Posted:September 13, 2025 7:07 pm
  • Updated:September 13, 2025 7:41 pm   

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: দুই ব্যক্তির একই নাম। দু’জনই অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। সমাজকর্মী ও দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনের মুখ। একজন নেপালের বাসিন্দা। ‘জেনারেশন জি’ অথবা ‘জেন জি’ আন্দোলনের পুরোধা। অন্যজন দার্জিলিং পাহাড়ের বাসিন্দা। শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে সরব। দুই সুদান গুরুংকে এক করে সমাজমাধ্যমে শুরু হয়েছে বিভ্রান্তিকর প্রচার। এমনকী অভিযোগ তোলা হচ্ছে দার্জিলিংয়ে বসে সুদান নেপালে অভ্যুত্থানের সলতে পাকিয়েছেন। নিজস্ব এক্স হ্যান্ডেলে দার্জিলিংয়ের সুদান ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন।

Advertisement

নেপালে ছাত্র-যুবদের দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিনতিতে অভ্যুত্থান, কমিউনিস্ট সরকারের পতনের পর বিশ্বজুড়ে একটি নাম চর্চায় এসেছে। তিনি ‘হামি নেপাল’ নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্ণধার সুদান গুরুং। জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালের ভূমিকম্পে এক সন্তানকে হারানোর পর ডিসকো জকি হিসেবে জনপ্রিয় বছর ছত্রিশের তরুণ সুদান ছাত্র-যুবদের নিয়ে গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষা প্রসারের জন্য ‘হামি নেপাল’ সংস্থাটি পরিচালনা করছিলেন। পাশাপাশি নেপালে বেড়ে চলা আর্থিক বৈষম্য, সরকারি স্তরে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের বিরুদ্ধে সরব হয়ে ভুক্তভোগী নতুন প্রজন্মের মধ্যে সুদানের জনপ্রিয়তা এবং সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। সরকার সমাজমাধ্যমের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে ছাত্র-যুবদের ক্ষোভ গণ বিস্ফোরণে পরিনত হয়। সরকারের পতন ঘটে।

নেপালের ‘হামি নেপাল’ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্ণধার সুদানের সমাজ সেবা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদেই যত গোল পেকেছে। কারণ, দার্জিলিং পাহাড়েও রয়েছে একই চরিত্রের অন্য এক সুদান গুরুং। তাকদাহ লামাহাট্টার ওই সামাজসেবী যুবক অনীত থাপার কট্টর বিরোধী। তিনি পাহাড়ের শিক্ষা ব্যবস্থায় দুর্নীতির প্রতিবাদে নেমে নতুন প্রজন্মের মধ্যে জনপ্রিয় হয়েছেন। কয়েক মাস আগে সুদানের উপর প্রাণঘাতী হামলা চালায় দুষ্কৃতিরা। ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়ে ওঠে গোটা পাহাড়। সুদান পাহাড়ে হয়ে ওঠেন দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনের মুখ। নেপালে অভ্যুত্থানের পর দার্জিলিংয়ের সুদান-ই নেপালের সুদান বলে চালিয়ে সমাজমাধ্যমে শুরু হয় বিভ্রান্তিকর প্রচার।

বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, বিশেষত অভ্যুত্থানের জন্য দায়ী করে ভারত বিদ্বেষ চাগিয়ে তুলতে ওই বিভ্রান্তিকর প্রচার হাতিয়ার করেন মাওবাদী কমিউনিস্ট ইউটিউবারদের একাংশ। অস্বস্তিতে পড়ে দার্জিলিংয়ের সুদান জবাব দিয়েছেন তার এক্স হ্যান্ডেলে। তিনি লিখেছেন, “নেপালের প্রিয় মানুষ দার্জিলিংয়ের সুদান গুরুং এবং নেপালের সুদান গুরুং এক নয়। মনে হচ্ছে নেপাল ও ভারতের মধ্যে সুসম্পর্ক নষ্ট করার জন্য কিছু মানুষ দার্জিলিংয়ের সুদান গুরুংয়ের মুখ ব্যবহার করে দাবি করছেন নেপালের সুদান গুরুং আদতে ভারতের। কিন্তু তারা দু’জন ভিন্ন মানুষ।” এখানেই শেষ নয়। তিনি আরও লিখেছেন, “আমার নজরে এসেছে কিছু সংবাদমাধ্যম প্রতিবেশী নেপালে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিক্ষোভের সঙ্গে আমার ছবি প্রচার করেছে। আমি বলছি ওই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী ‘সুদান গুরুং’ একজন নেপালের নাগরিক এবং সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যক্তি। আমার সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই। ঘটনাক্রমে আমাদের দুজনের একই নাম এবং এখানেই শেষ। আমি ভারত প্রজাতন্ত্রের একজন দায়িত্বশীল নাগরিক। দার্জিলিংয়ের বাসিন্দা।” কিন্তু অপপ্রচারের বিরাম নেই। ভারতকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে বিভ্রান্তি ছড়ানো চলছেই।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ