দেবব্রত মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: যুগ এগোচ্ছে, আধুনিক হচ্ছে সকলে৷ তা সত্ত্বেও মধ্যযুগীয় কুসংস্কারকে রোধ করা যাচ্ছে না৷ হাজারও প্রচার, সচেতনতায় লাভ হয়নি কিছুই৷ বরং বলি হচ্ছে বহু প্রাণ৷ আবারও সেই একই ঘটনার সাক্ষী রইল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির গরানকাঠি গ্রাম৷ এবার মধ্যযুগীয় কুসংস্কারে প্রাণ হারাল এক কিশোরী। সাপের কামড়ে গুরুতর অসুস্থ কিশোরীকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে, ওঝার কাছে গিয়ে সারাদিন ধরে পরানো হল নানা তাবিজ আর করা হল ঝাড়ফুঁক। বিকেলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় প্রতিবেশীদের চাপে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হল না।
মৃতা কিশোরীর বাড়ির লোকজনের বক্তব্য, রবিবার ভোরে তার পায়ে কিছু একটা কামড়ায়। কিন্তু তখনই বিষয়টি বুঝতে পারেননি তাঁরা। কিছুক্ষণ পরই অবস্থার অবনতি হয় কিশোরীর। পরে বোঝা যায় সাপে কামড়েছে তাকে৷ ওঝার কাছে নিয়ে গেলেই নাকি সুস্থ হয়ে যাবে মেয়ে! তাই হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মমতাজকে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই ওঝাই কিশোরীকে দিনভর ঝাড়ফুঁক করে। কয়েকটি তাবিজও বেঁধে দেয় মুমতাজের হাতে।
কিন্তু তাতেও সুস্থ হয়নি কিশোরী৷ দিনভর ঝাড়ফুঁকের পরেও ক্রমশই অসুস্থ হতে শুরু করে সে৷ সময় যত গড়াতে থাকে, ততই অসুস্থ হতে শুরু করে মমতাজ৷ ওঝার ঝাড়ফুঁক চলতে থাকলে মারা যাবে কিশোরী৷ এই আশঙ্কা করতে থাকেন প্রতিবেশীরা৷ যদিও কিশোরীর পরিবারের লোকজনের তখনও ভরসা ছিল ওঝার উপরেই৷ কিন্তু প্রতিবেশীদের চাপে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করা হয়৷ ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে বলেই ঠিক করা হয়৷ সেই মতো ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নিয়ে আসার পথেই মৃত্যু হয়েছে ওই কিশোরীর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.