অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: ফের আইআইটি, খড়গপুর ক্যাম্পাসে পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যু। শনিবার দুপুরে হস্টেলের ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় ভিনরাজ্যের এক ছাত্রের দেহ। তাঁর নাম হর্ষ কুমার পাণ্ডে বলে জানা গিয়েছে, বয়স ২৭ বছর। তিনি ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। মৃত ছাত্র গবেষণা করতেন। এদিন দুপুরে আইআইটি-র বি.আর আম্বেদকর হস্টেলের বি ব্লকের ঘর থেকে মৃতদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় খড়গপুর থানার অধীনস্থ হিজলি ফাঁড়ির পুলিশ। দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্ত। খবর পাঠানো হয়েছে মৃতের পরিবারে। এনিয়ে চলতি বছর খড়গপুর আইআইটি-তে মোট ৬ জন পড়ুয়ার এমন রহস্যমৃত্যু ঘটল। এর মধ্যে পাঁচজনেরই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে।
শনিবার আইআইটি, খড়গপুরে ছুটিই থাকে। ফলে হস্টেলের আবাসিকরা সাধারণত ঘরেই থাকেন। এদিন দুপুর দেড়টার সময় বি ব্লকের আবাসিকদের নজরে পড়ে, ৫৫৭ নং ঘরটির দরজা বন্ধ। এই ঘরে একাই থাকেন গবেষক-পড়ুয়া হর্ষ কুমার পাণ্ডে। তখন অন্যান্য আবাসিকরা দরজা ধাক্কা দিয়ে ডাকাডাকি করেন। সাড়া না পেয়ে হস্টেলের নিরাপত্তারক্ষীকে ডাকা হয়। তিনিও কোনও সাড়া পাননি। সন্দেহ বাড়তে থাকে। এরপর ওই নিরাপত্তারক্ষীই খবর দেন হিজলি ফাঁড়িতে। সেখান থেকে পুলিশ আইআইটি ক্যাম্পাসে গিয়ে হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার করে হর্ষের দেহ। পুলিশ সূত্রে খবর, তোয়ালে দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো ছিল তাঁর, তবে পা মাটিতে স্পর্শ করা ছিল। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
আইআইটি সূত্রে খবর, মৃত হর্ষের বাড়ি রাঁচি শহরের কৃষ্ণমূর্তি মার্গ রানিবাগানে। ২০২৪ সালে মতিলাল নেহরু ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে এম টেক শেষ করার পর ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে আইআইটি, খড়গপুরে গবেষণার জন্য আসেন। কোনও অস্বাভাবিকত্ব ছিল না বলেই জানাচ্ছেন তাঁর সহকর্মীরা। কিন্তু কী কারণে তাঁর এহেন সিদ্ধান্ত, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গবেষকের মৃত্যু নিয়ে এখনও মুখে কুলুপ আইআইটি কর্তৃপক্ষের। জেলা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে নির্দেশ মেনে এফআইআর দায়ের করা হবে।
উল্লেখ্য, এনিয়ে আইআইটি খড়গপুরে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৬জন ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ৫ জনই আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর। বাকি একজনের মৃত্যু হয় গলায় ওষুধ আটকে। ধারাবাহিক এসব ঘটনার পর আইআইটি-র ডিরেক্টর পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ‘সেতু’ নামে একটি অ্যাপের মাধ্যমে পডুয়াদের সমস্যার কথা শোনার চেষ্টা করেছিলেন। দুটি আলাদা টিমও তৈরি হয় নিয়মিত কাউন্সেলিংয়ের জন্য। কিন্তু তারপরও এই ঘটনা এড়ানো গেল না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.