এই সেই সুইচ গেট। নিজস্ব চিত্র
জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: প্রতি বছর বাংলাদেশের নদীর জল এসে ভারতের বিঘার পর বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়। এবার বর্ষার আগে সেই পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে এপাড়ে সুইচ গেট তৈরি হল। কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি নিয়ে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বাগদা প্রশাসন এই সুইচ গেট তৈরি করেছে। ফলে এবার কৃষিজমি জলে ডুবে যাবে না বলে মনে করা হচ্ছে। এই সুইচ গেট তৈরি করতে প্রাথমিকভাবে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছে। আরও তিন লক্ষ টাকা ব্যয় করে বাকি কাজ দ্রুত শেষ হবে বলে জানানো হয়েছে।
এলাকার পাশ দিয়ে বাংলাদেশের মধ্যে কপতাক্ষ নদী বয়ে গিয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার দিকে রয়েছে লক্ষ্মীপুর। অভিযোগ, প্রতি বছর বর্ষার সময় নদীর জল ভারতে ঢুকে বয়রা অঞ্চলের লক্ষ্মীপুর, মেহরানি-সহ একাধিক এলাকার প্রায় ৭০০ বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়। যে কারণে কয়েক দশক ধরে স্থানীয় কৃষকদের দাবি ছিল কপোতাক্ষর নদীর জল আটকানোর। গত বছর বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদল হয়। তারপর থেকে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা দেখা গিয়েছে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতিও হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে একের পর এক ভারতের প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য রাখা হয়েছে। ওই এলাকাতেও এখন কড়া নজরদারি চলছে।
সেই আবহে এবার এই সুইচ গেট তৈরি করা হল। মেহেরানির লাল মিয়া নামে এক কৃষকের কথায়, “বাংলাদেশ যা করছে, ওদের সঙ্গে কোনও বন্ধুত্ব নেই। কপোতাক্ষ নদীর পাশে সুইচ গেট হওয়ায় জলে ভাসবে ওদের চাষের মাঠ। এটাই উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া হল।” কৃষক সন্তোষ বিশ্বাস বলেন, “বাংলাদেশের চাষের জমিতে খুব একটা বেশি ক্ষতি হত না। এত দিন বাংলাদেশ বন্ধু হিসেবে ছিল। আমরা ক্ষতি মেনে নিতাম। এবার সুইচ গেট হওয়ায় আমাদের চাষের জমি বেঁচে যাবে।”
বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পরিতোষ সাহা বলেন, “কৃষকদের দাবি, স্বার্থ আমরা আগে দেখব। বাংলাদেশের ভারতবিরোধী মনোভাবের জন্য আমাদের কৃষকরা যথেষ্ট ক্ষুব্ধ।” বাগদার বিজেপি নেতা দেবব্রত ঢালি বলেন, “বাগদায় সুইসগেট করায় বাংলাদেশের কপোতাক্ষ নদীর জল বয়রা এলাকায় ঢুকতে পারবে না। জল আটকে যাওয়ায় বাংলাদেশের মধ্যেই প্লাবিত হয়ে বন্যার আকার নেবে। এটাই ওদের উপযুক্ত শিক্ষা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.