Advertisement
Advertisement
Alipurduar

বাঙালি ‘হেনস্তা’র পালটা বাংলার সৌজন্য, জঙ্গলে ‘অনুপ্রবেশকারী’ অসমের ৩৫ জনকে নিঃশর্তে মুক্তি

শিবমন্দিরে যাওয়ার নাম করে অভয়ারণ্যের ভিতরে তাঁরা ঢুকেছিলেন বলে অভিযোগ।

Thirty five from Assam allegedly entering into the forest area avoiding rules, freed by West Bengal forest department as courtsey
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:July 29, 2025 12:01 pm
  • Updated:July 29, 2025 12:29 pm  

রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: ভিনরাজ্যে বাঙালি ‘হেনস্তা’ যতই ঘটুক, বাংলা নিজের সংস্কৃতিতে অটল। এক মুহূর্তও নিজেদের সৌজন্যবোধ ভুলে যায়নি। তারই প্রতিফলন দেখা গেল আলিপুরদুয়ারে, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে। সোমবার রাতে জঙ্গলে অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক অসমের ৩৫ জন বাসিন্দাকে আজ নিঃশর্তে মুক্তি দিল বনদপ্তর। বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার মানবিক সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে এই ঘটনা। মুক্তির পর তাঁদের সুবিধার্থে রাজাভাতখাওয়া পর্যন্ত এগিয়ে দেন কালচিনির বিজেপি বিধায়ক বিশাল লামা।

Advertisement

ঘটনা সোমবারের। ওইদিন সকাল ৬টা নাগাদ অসম থেকে রাজাভাতখাওয়া গেট দিয়ে ৩৫ জন পুণ্যার্থীর একটি দল পৌঁছয় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকায়। রাজাভাতখাওয়া গেটের কাছে ২৮ মাইল এলাকায় একটি শিব মন্দির রয়েছে। সেখানে শ্রাবণের সোমবার শিবের মাথায় জল ঢালছিলেন পুণ্যার্থীরা। বনদপ্তর সূত্রে খবর, ওই মন্দিরে যাওয়ার নাম করে অসমের ৩৫ জন জঙ্গলে ঢুকে পড়েন। মন্দিরের কথা শুনে বনকর্মীরা তাঁদের আটকাননি। কিন্তু মন্দিরে যাওয়ার বদলে তাঁরা লুকিয়ে জয়ন্তী পাহাড়ের গুহায় থাকা প্রায় ৫০ কিলোমিটার ভিতরে মহাকাল মন্দিরে চলে যান। তার জন্য খরস্রোতা জয়ন্তী নদীও পেরতে হয়।

এরপর মন্দির থেকে ফিরতে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে যায়। ফেরার সময় রাত ৯টা নাগাদ জয়ন্তীতে অসমের বাসিন্দাদের আটক করে বনদপ্তর। বর্ষার মরশুমে প্রায় তিনমাস জঙ্গল বন্ধ থাকে, সেখানে ঢোকা যায় না। তাই বেআইনিভাবে জঙ্গলে ঢোকার কারণে তাঁদের আটক করা হয়। নির্দিষ্ট বন আইন অনুসারে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা। তাঁরা কী উদ্দেশ্য নিয়ে বনাঞ্চলে প্রবেশ করেছিলেন, তাও শুনে নেওয়া হয়। এই খবর চাউর হতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান কালচিনির বিধায়ক বিশাল লামা। খবর পৌঁছয় রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার কাছেও। মন্ত্রী বিধায়ক বিশাল লামাকে ফোন করে গোটা বিষয়টি জানতে চান। সব শোনার পর নির্দেশ দেন, ওই ৩৫ জনকে ছেড়ে দেওয়া হোক নি:শর্তে। বিশাল লামা নিজে তাঁদের রাজাভাতখাওয়া গেট পর্যন্ত এগিয়ে দেন।

সম্প্রতি বিভিন্ন রাজ্যে বাংলায় কথা বললেই এরাজ্যের বাসিন্দাদের ‘বাংলাদেশি’ বলে হয়রানির অভিযোগ উঠছে। এমনকী অসম থেকে বাঙালিদের নামে পরপর এনআরসি নোটিসও আসছে। তার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে শাসকদল তৃণমূল ও রাজ্য সরকার। কিন্তু এরই মধ্যে পড়শি রাজ্য অসমের ৩৫ পুণ্যার্থীকে নি:শর্তে মুক্তি দিয়ে কার্যত নজির তৈরি করল বাংলার বন প্রশাসন।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement