Advertisement
Advertisement
Nadia

ধীবরের জালে ‘ধরা’ দিয়েছিলেন মা! রানি ভবানীর হাতেই প্রতিষ্ঠিত হন কষ্টিপাথরের এই দুর্গা

৫০০ বছরের অধিক সময় ধরে পূজিত হয়ে আসছেন।

This durga idol was installed by rani bhabani in nadia, puja is going on
Published by: Kousik Sinha
  • Posted:September 28, 2025 5:34 pm
  • Updated:September 28, 2025 7:19 pm   

রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: থানারপাড়া থানার দোগাছি গ্রাম! প্রত্যন্ত একটি এলাকা। আর এখানেই মা দুর্গা ৫০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পূজিত হয়ে আসছেন কষ্টিপাথরে। এই পুজোকে ঘিরেই রয়েছে নানা গল্প কাহিনী। কথায় আছে, যা রটে তা কিছুটা হলেও তো সত্যি। তাই এই মূর্তিকে ঘিরেও রয়েছে এক সত্যি। পূজারী অম্লান চৌধুরীর কথায়, অধুনা নদিয়ার থানারপাড়া থানার দোগাছি গ্রামের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বয়ে গিয়েছে নদী। সেই নদীতে মাছ ধরার সময় এক ধীবর রাজবল্লভ দাসের মাছ ধরার জালে দুটি কষ্টিপাথরের মূর্তি উঠে আসে। তার একটি দশভূজা মহিষমর্দিনী অপরটি বিষ্ণুমূর্তি।

Advertisement

কথিত আছে, দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে ধীবর রাজবল্লভ পণ্ডিতের নির্দেশে মূর্তি দুটি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সময় অর্ধবঙ্গেশ্বরী হলেন মাতা রানি ভবানী। এলাকার মানুষের কাছে এই কষ্টি পাথরের কথা জানামাত্র তথ্য যাচাই করেন। এরপর দোগাছি গ্রামে দুটি মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন মাতা রানি ভবানী। এজন্য বিষ্ণুপুরের ঘরানার ধাঁচে ছোট্ট বাংলা ইট দিয়ে অপূর্ব টেরাকোটা মন্দিরও তৈরি করেন। সেখানেই প্রতিষ্ঠিত হয় ওই দুই মূর্তি।

শুধু তাই নয়, দুর্গাপুজোর উৎসব উপলক্ষে রাজকোষ থেকে দু’টাকা দশ আনা ও সারা বছরে নানা পুজোর খরচের জন্য চার টাকা পাঠাতেন। সেই সঙ্গে মন্দির সংস্কার ইত্যাদি নানা খরচের জন্য ১০০ বিঘা জমিও দান করেছিলেন। বর্তমানে মন্দির এলাকায় দুই কাঠা জমি ছাড়া বাকি সব জমি বেদখল হয়ে গিয়েছে! অতীতে এই পুজো ঘিরে বিশাল মেলার আয়োজন করা হতো। মায়ের মহিমা ছড়িয়ে পড়েছিল দূর-দূরান্তেও। আর তা জেনে বহু মানুষ আসতেন দেবীকে দর্শন করতে। মায়ের সেই মহিলার কথা লোকমুখে আজও প্রচলিত!

কথিত আছে ঘটনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এই পূজার নাম রাজবল্লভী পূজা নামেও খ্যাতি লাভ করে এলাকায়। মূল মন্দির কালের সঙ্গে সঙ্গে অবলুপ্ত! জানা যায়, বাংলা ১৩০৪ সালের প্রবল ভূমিকম্পে মূল মন্দির ধ্বংস হয়ে যায়। স্থানীয় মানুষরা একটি ঘরে মূর্তি দুটিকে নতুন করে প্রতিষ্ঠা করেন। সেই মন্দির ভেঙে যাওয়ার কারণে বাংলার ১৪২১ সালে এলাকার মানুষের সংগৃহীত অর্থে নতুন করে মন্দির তৈরি করে নতুন উদ্যোমে পুজো শুরু করেন।

গ্রামের বাসিন্দা বিজয় মণ্ডল জানান, কষ্টি পাথরের মূর্তি দুটি কতদিনের পুরনো তা বলা সম্ভব নয়। তবে বাপ ঠাকুরদার কাছে শুনে এসেছি দীর্ঘদিন ধরেই পুজো হয়ে আসছে। প্রত্যেকদিন নিয়ম করে এই মূর্তিতে পুজো হয়, তবে দুর্গাপূজার সময় আলাদা মাত্রা পায়।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ