Advertisement
Advertisement

Breaking News

TMC

দলবিরোধী কাজ, পূর্ব বর্ধমানের যুব সহ সভাপতিকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করল তৃণমূল

কাটোয়ার রাজুয়া গ্রামে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় এনআইএ তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন ওই নেতা।

TMC expels leader Suvendu Das
Published by: Sayani Sen
  • Posted:July 23, 2025 10:18 pm
  • Updated:July 23, 2025 10:51 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার রাজুয়া গ্রামে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় এনআইএ তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন যুব তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলার সহ সভাপতি শুভেন্দু দাস। বুধবার সন্ধেয় পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে জানালেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শুভেন্দুকে আজীবনের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হল। এদিকে, রাজুয়া বিস্ফোরণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তুফান চৌধুরীকে হেফাজতে নিয়ে তার বাড়ি থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র,গুলি এবং দুকেজি বোমার মশলা উদ্ধার করল পুলিশ। এদিন ধৃতকে কাটোয়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। কাটোয়ার রাজুয়া গ্রামে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় এন আই এ তদন্ত চেয়ে কলকাতা উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন যুব তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সহ সভাপতি আইনজীবী শুভেন্দু দাস। এই ঘটনা ঘিরে এদিন দিনভর রাজনৈতিক চাপানউতোর ছড়ায়। রাতে সাংবাদিক বৈঠক করেন কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

গত ৪ জুলাই রাতে কাটোয়া থানার রাজুয়া গ্রামে একটি বাড়িতে বসে বোমা বাঁধার সময় বিস্ফোরণ ঘটে। বেশকিছু বোমা একসাথে ফেটে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বীরভূম জেলার নানুর থানা এলাকার বাসিন্দা বরকত কারিগর নামে এক দুষ্কৃতীর। জখম হয় রাজুয়া গ্রামের বাসিন্দা তুফান চৌধুরী সহ তিনজন। তুফানকে পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। বাকি দু’জন পালিয়ে গিয়েছিল। পরে তুফান সহ মোট ১৩ জনকে রাজুয়া বিস্ফোরণকাণ্ডে গ্রেপ্তার করা হয়। তুফান চিকিৎসাধীন ছিল। সুস্থ হলে গত সপ্তাহে তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে টানা জেরা করে ধৃত তুফান চৌধুরীর বাড়ি থেকে দুটি দেশি পাইপগান,তিন রাউন্ড গুলি এবং দুকেজি বোমার মশলা উদ্ধার করেছে।

পুলিশ জানতে পেরেছে বড় ধরনের কোনও অপারেশনের উদ্দেশ্যে তুফান চৌধুরী বিপুল পরিমাণ মশলা কিনে এনে ভাড়া করা দুষ্কৃতীদের দিয়ে বোমা বাঁধাচ্ছিল। তবে কি উদ্দেশ্যে বা কোথায় সেই অপারেশনের ছক ছিল তদন্তের স্বার্থে পুলিশ এখনও প্রকাশ করতে রাজি হয়নি। রাজুয়া গ্রামে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পরেই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কাটোয়ার বিধায়ক তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ তুলেছিলেন, জঙ্গল শেখের পরিকল্পনায় বালিঘাটের দখল নেওয়ার উদ্দেশ্যে এবং তারপরে কাটোয়া শহরে ঢুকে রবীন্দ্রনাথ ঘনিষ্ঠ কোনও তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলার উদ্দেশ্যে ওই দুস্কৃতীরা বোমা মজুত করছিল। কাটোয়া শহরে ঢুকে সন্ত্রাস সৃষ্টির পরিকল্পনা ছিল বলে অভিযোগ তোলেন রবীন্দ্রনাথবাবু।

জানা গিয়েছে, কাটোয়ার দাঁইহাট শহরের বাসিন্দা যুব তৃণমূলের সহ সভাপতি কাটোয়া আদালতের আইনজীবী শুভেন্দু দাস রাজুয়া বিস্ফোরণের ঘটনায় এন আই এ তদন্ত চেয়ে কলকাতা উচ্চ আদালতে একটি জনস্বার্থে মামলা করেছেন। শুভেন্দু বলেন,” যেখানে বিধায়ক নিজেই আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।দুস্কৃতীদের দ্বারা কাটোয়া শহরে দলীয় কার্যালয় দখল হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন তাই কাটোয়া এলাকার সাধারণ মানুষ আদৌও নিরাপদ কিনা সন্দেহ রয়েছে। বিধায়কের এই আশঙ্কার পর আর পুলিশের প্রতি আস্থা রাখা যায় না। তাই এলাকার সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে আমি জনস্বার্থে উচ্চ আদালতের কাছে রাজুয়ার বিস্ফোরণের ঘটনায় এন আই এ তদন্ত চেয়ে আবেদন রেখেছি। সেখানে খুব বড় ধরনের বিস্ফোরণ হয়েছিল। একজন মানুষ মারা যায়। একাধিক আহত হন । একটা বাড়ি উড়ে যায়। আমি মনে করি এটা ছোটখাটো ঘটনা নয়।”

যদিও রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ওই প্রসঙ্গে দুপুরে বলেন,” শুনেছি যুব তৃণমূলের সহ সভাপতি এন আই এ তদন্ত চেয়ে মামলা করেছেন। কিন্তু আমার পুলিশের প্রতি পূর্ণ আস্থা রয়েছে। পুলিশ ঠিকঠাক কাজ করছে। উনি কেন এই ধরনের মামলা করলেন জানি না। আমি দলকে জানাব।” তারপর রাতে সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। বিজেপির সাংগঠনিক কাটোয়া জেলার সম্পাদক সীমা ভট্টাচার্য বলেন,”এর থেকে বোঝাই যাচ্ছে শাসকদলের নেতাদেরই পুলিশের উপর ভরসা নেই। তাই এন আই এ তদন্ত চাইছেন। তাহলে সাধারণ মানুষ পুলিশের উপর কি করে ভরসা রাখবে। আমরা বারবার বলে আসছি পুলিশ শুধু মাননীয়াকে খুশি করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের স্বার্থে কাজ করছে না।”

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement