অর্ণব দাস, বারাসত: হাতে কয়েকটা মাস! বছর ঘুরলেই বঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনে বারাসত শহরে তৃণমূলের হার কীভাবে? আর তা নিয়েই অভিযোগ পালটা অভিযোগ বিজয়া সম্মিলনীতে। এমনকী লোকসভা ভোটে বারাসত শহরে নিজের পিছিয়ে থাকা নিয়েও এদিন প্রকাশ্যে মুখ খোলেন সাংসদ ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। আজ সোমবার বারাসত শহর তৃণমূলের উদ্যোগে রবীন্দ্র ভবনে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হয়। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী থেকে সাংসদ ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি সকলেই। সবার বক্তব্যেই এদিন উঠে আসে তৃণমূলের পিছিয়ে থাকার বিষয়টি।
এদিন সাংসদ ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, “আমার কাছে অবাক করা বিষয়, এদিনের প্রেক্ষাগৃহ কানায় কানায় ভর্তি। এখানের মহিলা সংগঠন ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছে। সেখানে আমরা পরাজিত হই কি করে।” শুধু তিনিই নন, সরব হন খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষও। সাংসদের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনেই খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, ”বারাসত শহরে আমরা ২২ থেকে ২৩ হাজার ভোটে হেরেছিলাম। সেটাকে ফিরিয়ে আনতে গেলে কি করতে হবে আপনার ভাববেন না! দল যদি কলা গাছকে দাঁড় করায়, তাকেও জেতানোর দায়িত্ব আমাদের। কারোর উপর কারোর রাগ থাকতে পারে। কিন্তু তার প্রতিফলন যেন দলে না পড়ে।”
শুধু তাই নয়, কর্মীদের সতর্ক করে মন্ত্রী বলেন, ”আমাদের মনে রাখতে হবে দল থাকলে আমার আছি, না থাকলে আমাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।” জেলা পরিষদের সভাধিপতির তথা অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী বলেন, “কাউন্সিলরদের বলব, আপনাদের ভোটে আপনারা অপেক্ষাকৃত বেশি ভোটে জেতেন। তত ভোটে বিধায়ক কেন জেতে না? ঘটনাটা কি? এটা বলার কারণ, আগামী বিধানসভা নিবাচন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করার ভোট।”
প্রসঙ্গত সম্প্রতি বারাসতে একটি অনুষ্ঠানে এসে পুরসভার নাগরিক পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। নারায়ণ গোস্বামীর মুখেও এদিন এক সুর শোনা যায়। তিনি বলেন, “স্থানীয় সরকারের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা থাকে। বারাসতের বাসিন্দা হিসাবে আমি বলতে চাই, মাঝেমধ্যে কান পাতলে শোনা যায় নাগরিক পরিষেবা নিয়ে মানুষ আমাদের উপর ক্ষুব্ধ। আমি কোনো ব্যক্তিকে দায় দিচ্ছি না। আমরা সবাই আছি। পুরসভার সবার মিলে এই খামতি দ্রুত দূর করতে হবে।”
কাকলিদেবীর বক্তব্য পক্ষান্তরে উঠে আসে এই প্রসঙ্গ। তাঁর কথায়, “সারা বছর আপনাদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। আর কোনো জনপ্রতিনিধির আছে কি না আমার জানা নেই। বিগত ছয়-আট মাসে জঞ্জাল পরিষ্কার, রাস্তা সংস্কারের ও লাইট না জ্বলার নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে আপনাদের সঙ্গে আমার জবাব চালাচালি হয়েছে।” যদিও এদিন কারোর বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ না করলেও রাজনৈতিকমহলে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। একাংশের মতে, বারাসতের তারকা বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তীর বিরুদ্ধেই এই আক্রমণ। মঞ্চে উপস্থিত হয়ে প্রত্যেক নেতৃত্বের এই বক্তব্য শুনেছিলেন চিরঞ্জিত। এরপর নিজের বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমি চাই সরে যেতে। একথা মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছি। উনি বলেছেন, অনেক দেরি আছে ভোটের। ভোট এলে ভাববো। তাই অস্থির অবস্থায় রইলাম।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.