ফাইল চিত্র
শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ২০২৩ সালে সিকিমের প্রবল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অনেক জায়গাতেই তিস্তার গতিপথ বদল হয়েছে। ভূমিধসের কারণে নাব্যতা কমেছে খরস্রোতা এই নদীর। এবার জলপাইগুড়িতে তিস্তা নদীর পলি তোলা হবে। এর মাধ্যমে পুরনো নদীপথে তিস্তাকে প্রবাহিত করার চেষ্টাও হবে। এমনই প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, সেই মাটি, বালি বিক্রি করা হবে। এতে সরকারের রাজস্বও আদায় হবে। সেই কথাও জানা গিয়েছে। এই কাজের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে রাজ্য সরকার। সেচ দপ্তরের তত্বাবধানে তিস্তা নদী খননের কাজ করবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এমডিটিসিএল (মিনারেল ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রাডিং কর্পোরেশন লিমিটেড)।
উত্তরবঙ্গে বর্ষা চলে এসেছে। সেজন্য এই মুহূর্তে আর এই কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। বর্ষা শেষ হলেই খননের কাজ দ্রুত শুরু হবে বলেই জানা গিয়েছে। এই কাজ শেষ হলে আগামী বর্ষায় তিস্তাকে পুরনো পথে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। জানা গিয়েছে, তিস্তা নদীর সেবক পাহাড়ের পাদদেশ থেকে শুরু করে মাল, রাজগঞ্জ, সদর ব্লক হয়ে ময়নাগুড়ি পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে ৬০ কিলোমিটার নদী খননের জন্য এমডিটিসিএল-কে দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। সেচ দপ্তরের উত্তর পূর্ব বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক জানান, তিস্তা নদীখাত এক থেকে দেড় মিটার খনন করা হবে। কোথায় কোন অংশে খনন করতে হবে, সেই ব্যাপারে সমস্ত রকমের সহযোগিতা করবেন তাঁরা। তিস্তার থেকে বিপুল পরিমাণে বালি, মাটি তোলা হবে। সেসব বিক্রি করে বিপুল পরিমাণে রাজস্ব পাওয়া যাবে। সেই আশাও করা হচ্ছে।
২০২৩ সালে সিকিমে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রভাব পড়ে তিস্তায়। পাহাড় থেকে নেমে আসা বালি, পলি, পাথরের আস্তরণে গভীরতা কমে গিয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠে নদী। জলপাইগুড়ির নদীর পাড়ের লালটং বস্তি ও চমকডাঙি গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। তারপর থেকে বন্যা পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে ওইসব এলাকায়। শুধু তাই নয়, নদীপথেও অনেক জায়গায় পরিবর্তন হয়েছে। পলি তোলা হলে, সেসব সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। নদীকে পুরনো গতিপথে ফিরিয়ে আনা যাবে বলেও মনে করা হচ্ছে। বাঁধ রক্ষা পাবে। এমনই মনে করছে সেচ দপ্তর। তিস্তাপাড়ের এলাকার বাসিন্দাদের অনেককেই গত বর্ষায় উদ্ধার ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছিল প্রশাসন। বেপরোয়া হয়ে ওঠা নদীকে নিজস্ব গতিপথে ফেরাতে গত বছরই তিস্তা নদী খনের প্রস্তাব রাজ্য সরকারকে পাঠায় সেচ দপ্তর। নদী বিশেষজ্ঞদের নিয়ে দীর্ঘ সমীক্ষার পর পরিকল্পনা অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। এবার অনুমোদন পেল সেই পরিকল্পনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.