Advertisement
Advertisement

Breaking News

Mekhliganj

মেখলিগঞ্জে মুক্তি বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ শ্রমিকদের, মুখ‌্যমন্ত্রীকে ধন‌্যবাদ জানাল পরিবার

আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের।

Workers stranded in Bangladesh return to Mekhliganj
Published by: Suhrid Das
  • Posted:June 17, 2025 9:46 am
  • Updated:June 17, 2025 9:46 am  

নিজস্ব সংবাদদাতা, মেখলিগঞ্জ ও লালবাগ: মুক্তির স্বাদ পাওয়া ওঁরা চারজন। যাঁরা মুম্বইয়ে স্রেফ বাংলায় কথা বলার জন‌্য সেখানকার পুলিশের কাছে ‘বাংলাদেশি’ চিহ্নিত হয়ে পুশব‌্যাকের শিকার হয়েছিলেন। বিএসএফের মদতেই। শেষে রাজ‌্য সরকারের হস্তক্ষেপে ঘরে ফিরছেন সকলেই। ভগবানগোলা থানার হোসেননগর পূর্বপাড়ার মেহববু শেখ ফিরছেন উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ হয়ে। আর বাকিরা কোচবিহার পুলিশের সাহায্যে।

Advertisement

সেখানে মেখলিগঞ্জে থানার বাইরে বেরিয়েই পুশব‌্যাকের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনজন। মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহরপাড়া থানা এলাকার নাজিমুদ্দিন মণ্ডল, বেলডাঙার মিনারুল শেখ, পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার মুস্তফা কামাল ভেবেছিলেন বাংলাদেশের জেলে পচেই মরতে হবে। আর ভগবানগোলার বাসিন্দা সোমবার তাঁরা বলেন, ‘‘পুশব‌্যাকের রাতটার ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। বিএসএফের মারে সারা শরীরে ব‌্যথা। পড়ে রয়েছি সীমান্তে। বিএসএফ বলছে আমরা ভারতীয় নই, আর বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীরা বলছে, একটু এগোলেই গুলি করবে বা জেলে ভরবে। কেঁদে কূল পাচ্ছিলাম না। ভাগ্যিস মুখ‌্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায়কে আবেদন জানানো আমাদের ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল।’’ তাঁরা জানান, ‘‘কোচবিহার জেলা পুলিশ এবং মেখলিগঞ্জ থানার তৎপরতায় দেশের মাটিতে পা রাখার পরেই শরীর খুব হালকা লাগছিল। মনে হল সব যন্ত্রণা দূর হয়ে গিয়ে শান্তির জায়গায় পৌঁছে গেলাম।’’ সোমবার কোচবিহারের মাথাভাঙায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্দীপ গড়াইয়ের দপ্তরে বাইরে এসে তাঁরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ধন্যবাদ জানান।

মুম্বইয়ে বাংলাদেশিদের ধরপাকড়ের সময় ওই তিনজনকেও আটক করা হয়। তাঁরা ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসাবে একাধিক নথি দেখালেও বাংলাদেশিদের সঙ্গেও পুশব‌্যাক করার জন‌্য প্রথমে পুণেতে বিএসএফের দপ্তরে তারপর সোজা আগরতলা নিয়ে যাওয়া হয়, কারণ একজনের মোবাইলে এক বাংলাদেশির ফোন নম্বর সেভ করা ছিল। সেখান থেকে ওই তিনজনকে কোচবিহারের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশব‌্যাকের চেষ্টা হয়। কিন্তু বিজিবি বাধা দিলে তাঁরা সীমান্তে আটকে থাকেন ‘না ঘর কা, না ঘাট কা’ হয়ে। তিনজনের কথায়, আগরতলা থেকেই কয়েকটি ছোট দলে ভাগ করে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছিল। তাদের মেখলিগঞ্জ সীমান্তে নিয়ে আসা হয়েছিল। সীমান্তে ওই তিনজনকে আটক করার পর বিজিবি ও বিএসএফের ফ্ল‌্যাগ মিটিং হয়। তারপর তিনজনকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়।

সোমবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্দীপ গড়াই বলেন, ‘‘তিনজন ভারতীয় নাগরিক বিজিবির হাতে আটকে রয়েছেন খবর পেয়েই জেলা পুলিশ দ্রুত খোঁজখবর নেওয়া শুরু করে। তাঁদের সম্পর্কে বিভিন্ন নথি জোগাড় করে সেই অনুযায়ী পুর্ব বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশের সঙ্গে যোগযোগ করা হয়। এরপর রবিবার মেখলিগঞ্জের রতনপুর সীমান্তে ১৫৬ ব্যাটালিয়ন বিএসএফের তরফে বিজিবির সঙ্গে পতাকা বৈঠক করা হয়। তারপর তাঁদের নিয়ে এসে মেখলিগঞ্জ পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়। সোমবার তাঁদের বাড়ি পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” ভগবানগোলা থানার হোসেন নগরের বাসিন্দা মেহবুব শেখকে মঙ্গলবার তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছে উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশ। সোমবার রায়গঞ্জ থানায় যান তার পরিবারের লোকজন। তাঁর দাদা মুজিবুর শেখ বলেন,“ ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করেছি। ও ভাল আছে।’’

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement