Advertisement
Advertisement
Durga Puja 2025

বন্দিদের উদ্যোগে প্রথম দুর্গাপুজো আসানসোলের জেলে, পুরোহিতের ভূমিকায় কারারক্ষী

ঢাকে বোল তুলছেন বন্দিরা, মহিলাদের দায়িত্ব প্রদীপ তৈরি, আলপনা দেওয়া।

Durga Puja 2025: Prisoners organise Durag Puja for the first time in Asansol jail
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:September 29, 2025 5:49 pm
  • Updated:September 29, 2025 6:02 pm   

শেখর চন্দ্র, আসানসোল: কারাগারের অন্ধকারে আলো নিয়ে এসেছেন উমা। আসানসোলের সংশোধনাগারে এই প্রথম দুর্গা আরাধনার আয়োজন করা হয়েছে। এখানকার ইতিহাসে যা খুবই উজ্জ্বল অধ্যায় হতে চলেছে। প্রথমবার জেলের ভিতরে পুজো, আনন্দে উদ্বেল বন্দিরা। খুব কম সময়ের মধ্যে এই আয়োজন করা হয়েছে। সংশোধনাগারের বাইরে এবং ভিতরে এখন আলো ঝলমল করছে। তিথি মেনে ষষ্ঠীতেই দেবী বোধন হয়েছে। পুরোহিতের ভূমিকায় রয়েছেন পুরোহিত। বন্দিরা ঢাক বাজাচ্ছেন। প্রদীপ তৈরি, আলপনা দেওয়ার দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন মহিলা আবাসিকরা।

Advertisement
ঢাকে বোল তুলছেন বন্দিরা। নিজস্ব ছবি।

জেল সুপার চান্দ্রেয়ী হাইত জানান, ”জেলে থাকা আবাসিকরা আবেদন করেছিলেন, ছোট করে হলেও পুজোর ব্যবস্থা যদি করা যায়। সেই মতো আবেদন করি আমাদের রাজ্য প্রশাসনের কাছে এবং কারাদপ্তর থেকে অনুমতি পাই। এটা ভেবে খুব ভালো লাগছে চাকরি জীবনের এটাই প্রথম পোস্টিং। এখানে সমস্ত নিয়ম মেনে একচালার সাবেকি প্রতিমায় পুজো হচ্ছে।” মহিলা আবাসিকদের জন্য সরকারিভাবেই নতুন শাড়ি দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। মূল পুরোহিত কারারক্ষী বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। পুরোহিতের সঙ্গে ব্রতী চারজনই জেলের আবাসিক। মহিলা বন্দিরা আলপনা দিয়েছেন। ১০৮ প্রদীপ ওঁরা নিজেরাই গড়েছেন। ওঁরা অত্যন্ত খুশি। বাইরে থেকে ঢাক আনা হয়েছে। সেই ঢাকে বোল তুলছেন আবাসিকরাই।

সপ্তমীতে নবপত্রিকা নিয়ে আসা থেকে পুজো – সবই হয়েছে নিষ্ঠা ভরে। অষ্টমীর পূজার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। সন্ধিপুজো হবে পঞ্জিকা মেনেই। আবাসিকদের পুষ্পাঞ্জলির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে একসঙ্গে অঞ্জলি নয়, ভাগ করে দেওয়া হবে। দশমীর দিন হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আবাসিকরা নাচগান, আবৃত্তি করবেন। মহিলারা অংশ নেবেন সিঁদুর খেলায়।

সপ্তমীতে রীতি মেনে হয়ে গেল কলাবউ স্নান। নিজস্ব ছবি।

এই মুহূর্তে এখানে বন্দির সংখ্যা চারশোর বেশি। তার মধ্যে প্রায় ৩৫ জন মহিলা। এছাড়া সাজাপ্রাপ্ত ডজন খানেক বন্দি রয়েছেন। পুজোর সময় প্রত্যেক দিন বিশেষ খাবারের মেনু থাকছে। সপ্তমীতে মাছের কালিয়া ভাত, অষ্টমীতে খিচুড়ি-লবড়া, নবমীতে মাংস-ভাত এবং দশমীতে খাসির মাংস। এছাড়াও নিরামিষাশীদের জন্য পনির-সহ নিরামিষ তরকারি। প্রতিদিন আলাদা করে মিষ্টি এবং টিফিনের ক্ষেত্রেও একটু আলাদা ব্যবস্থা। ঠাকুরের চিঁড়ে দই, নাড়ু থাকবেই। জেল সুপার বলেন, ”আমরা কর্মীরা সবাই মিলে ওদের সঙ্গে একসঙ্গে পুজোর ক’টা দিন আনন্দ করব। জেলের ভিতরে থেকেও যাতে ওরা বুঝতে পারেন উৎসব সবার জন্য।” পুরোহিতের কথায়, ”অনেকে মনস্কামনা করছেন। তাঁরা বলছেন, আমাদের জন্য একটু প্রার্থনা করুন, মাকে বলুন যেন আমারাও যেন দ্রুত মুক্তি পাই।”

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ