Advertisement
Advertisement
Ahmedabad Plane Crash

রাখে হরি মারে কে! মৃত্যুঞ্জয়ী বিশ্বাসকুমার রমেশ ও ভূমি চৌহান

কাকে কৃতজ্ঞতা জানাবেন ভূমি? নিয়তি, শিশুসন্তান, না কি যানজট?

Ahmedabad plane crash Biswas Kumar Ramesh and Bhumi Chouhan
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:June 15, 2025 8:57 pm
  • Updated:June 15, 2025 8:57 pm  

বিশ্বাসকুমার রমেশ এবং ভূমি চৌহান– দু’জনেই ফিরে এলেন মৃত্যুমুখ থেকে। একেই বলে রাখে হরি মারে কে! বিধির বিধান হয়তো এটাই!

আহমেদাবাদ এয়ারপোর্ট থেকে লন্ডনের পথে ওড়ার ৩২ সেকেন্ডের মধ্যে ভেঙে পড়ল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। প্রথমে শোনা গেল বিমানে যে, ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন, প্রত্যেকে নিহত। তারপর এল এই অবিশ্বাস‌্য সংবাদ– নিহত ২৪১ জন। একজন বেঁচে গিয়েছেন! শুধু বেঁচে গিয়েছেন নয়। তিনি সেই ছারখার মৃত্যুস্তূপ থেকে বেরিয়ে এসে অ‌্যাম্বুলেন্সে উঠলেন। হাসপাতালে ঢুকলেন হুইলচেয়ারে বসে। এবং বললেন, ‘বেঁচে আছি, বিশ্বাস করতে পারছি না।’ তিনি বিশ্বাসকুমার রমেশ। তিনি ইতিমধ্যে চিকেন স্ট্যু চেয়ে খেয়েছেন। ডাক্তারদের জানিয়েছেন, গান শুনতে চান। এবং কীভাবে বাঁচলেন তার বর্ণনাও করেছেন– উড়ান শুরু হতেই তিনি সিটবেল্ট খুলে দিয়েছিলেন। তীব্র ধাক্কায় সিটটা খুলে এসেছিল। তারপরেই ঘটে বিস্ফোরণ। ‘এ-যেন কোথা হতে কী হইল, শত্রুর সমস্ত অস্ত্র দস্যুমোহনের হাতে, সে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ হইতে বাঁচিয়া গেল’-র মতো মিরাক্‌ল। এভাবে সিনেমায় একাধিকবার আমরা জেমস বন্ড-কেও নিশ্চিত লুপ্তির একচুল দূরত্ব থেকে ফিরে আসতে দেখেছি।

নিয়তি শুধু কি ডেকে আনে নির্ধারিত সময়ে অমোঘ, অনিরুদ্ধ মৃত্যু? ‘নিয়তি’ শব্দের আক্ষরিক অর্থ, ‘বিধাতার বিধান’। তবু শব্দটির সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছে অবশ‌্যম্ভাবী মৃত্যু বা দুর্ঘটনা। কিন্তু কখনও-কখনও নিয়তির নির্দেশ বা বিধাতার বিধানেই হয়তো মানুষ মৃত্যুর মুখ থেকে অবিশ্বাস‌্য উপায়ে বেরিয়ে আসতে পারে। আপৎকালীন দরজার কাছে ছিল বিশ্বাসের আসন। আকস্মিক ঝাঁকুনিতে তাঁর পায়ের তলা থেকে বিমানটা চিরে যায়। সিটবেল্ট খুলে ফেলার কারণেই সম্ভবত তিনি ছিটকে একটা হাসপাতালে গিয়ে পড়েন। ব্রিটিশ নাগরিক বিশ্বাসের সঙ্গে উড়ানে তাঁর দাদাও ছিলেন। মৃতদের পুড়ে যাওয়া স্তূপের মধ্যে তাঁকে এখনও শনাক্ত করা যায়নি। বিশ্বাস কী করে বেঁচে গেলেন– বাকি জীবনে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাবেন বলে মনে হয় না।

আরও একজন বেঁচে গিয়েছেন নিয়তি বা বিধাতার বিধানেই। তিনি ভূমি চৌহান। ওই অভিশপ্ত উড়ানেই তাঁর লন্ডন যাওয়ার কথা ছিল। ১০ মিনিট ‘লেট’ করে ফেলেন। সেই কারণে বোর্ডিং পাস পাননি তিনি। ফ্লাইট ‘মিস’ করার ফলে তিনি হতাশ হয়ে এয়ারপোর্টেই কিছুক্ষণের জন‌্য দাঁড়িয়ে থাকেন। এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে জানতে পারেন, তাঁর যে প্লেনে যাত্রা করার কথা ছিল, সেই প্লেনটাই ভেঙে পড়েছে। ভূমির লেট হওয়ার কারণ প্রথমত, শিশুসন্তানকে তৈরি করে নিয়ে বেরতে তাঁর দেরি হয়ে যায়। তার উপর যানজট। কাকে কৃতজ্ঞতা জানাবেন ভূমি? নিয়তি, শিশুসন্তান, না কি যানজট?

বিধাতার বিধান পাশাপাশি আরও এক অনিবার্য খেলা খেলল। উড়ানের পরেই আহমেদাবাদের বি. জে. মেডিক‌্যাল কলেজের হস্টেলের মেসে আছড়ে পড়ল বিমান। সেই সময় ছাত্রদের সঙ্গে দুপুরে খেতে বসেছিলেন শিক্ষকরা। মৃত্যুর সংখ‌্যা ঠিক কততে ঠেকবে শেষ পর্যন্ত, কে জানে!

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement