Advertisement
Advertisement
Judiciary

বিজেপির মুখপাত্রের বিচারপতি পদে নিয়োগ! বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতার দিকে উঠছে আঙুল

মোদি সরকারের আমলে বিভিন্ন সাংবিধানিক সংস্থাকে কুক্ষিগত করার অভিযোগ উঠেছে বারবার।

BJP spokesperson appointed as judge, fingers raised against the impartiality of the judiciary
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:August 8, 2025 4:53 pm
  • Updated:August 8, 2025 4:53 pm  

অবসরের পর সরকারি পদগ্রহণ বিচারপতিদের ক্ষেত্রে কাম্য নয়। এতে বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কিন্তু বাস্তব চিত্র অন‌্য কথা বলে।

Advertisement

নরেন্দ্র মোদি সরকারের আমলে বিভিন্ন সাংবিধানিক সংস্থাকে কুক্ষিগত করার অভিযোগ উঠেছে বারবার। সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বিরোধীদের কণ্ঠস্বর রুখে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান– পছন্দের সংঘ পরিবার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের মাধ্যমে কার্যত দখল করে ফেলেছে বলেও বিরোধীদের দাবি। ব্যতিক্রম বিচারবিভাগ। কিন্তু সেখানেও কলেজিয়াম প্রথার তীব্র বিরোধী কেন্দ্রের শাসক দল। কারণ, এই ব্যবস্থায় সরাসরি বিচারপতি নিয়োগে হস্তক্ষেপের সুযোগ কার্যত নেই।

তাই নানা সময় কলেজিয়ামের সুপারিশ খারিজ বা তাতে সম্মতি দিতে দেরি করে কেন্দ্রীয় সরকার বিচারবিভাগের সঙ্গে কার্যত অসহযোগিতা করে বলেও নানা সময় সরব হয়েছেন প্রধান বিচারপতিরা। কিন্তু ঘুরপথে বিচারবিভাগ দখল করার অপচেষ্টা বহাল রয়েছে বলে বারবারই অভিযোগ উঠেছে। তারই সাম্প্রতিক নিদর্শন বম্বে হাই কোর্টের ঘটনায়। তবে এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে খোদ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন কলেজিয়ামের সিদ্ধান্ত ঘিরেই!

বিচারপতি পদে নিয়োগ পেয়েছেন আরতি অরুণ শাঠে, তিনি বম্বে হাই কোর্টের আইনজীবী। এর আগে তিনি মহারাষ্ট্র বিজেপির মুখপাত্র এবং দলের ল সেলের প্রধান ছিলেন। তঁার বাবাও ওই হাই কোর্টেরই আইনজীবী, বিজেপি এবং আরএসএসের সঙ্গে সংযুক্ত। স্বাভাবিকভাবে সরব বিরোধীরা। তাদের মত, কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দলের একজন সক্রিয় নেতাকে বিচারপতি করে বিচারব্যবস্থাকে কলুষিত করা হচ্ছে। পালটা বিজেপির দাবি, বছর দেড়েক আগেই দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন ওই আইনজীবী।

আরও প্রশ্ন, আরতির দলীয় পদ ছাড়া কি গেরুয়া কৌশল? যাতে তঁাকে বিচারপতি করতে বাধা না থাকে! বছর দেড়েক আগে গুজরাট হাই কোর্টে এক বিচারপতির নিয়োগ ঘিরেও প্রশ্ন ওঠে। সেবার ওই বিচারপতির শপথ আটকাতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডি. ওয়াই চন্দ্রচূড় রায় দেন, আইনজীবীর রাজনৈতিক অতীত তঁার নিয়োগের ক্ষেত্রে বিবেচ‌্য নয়। শুধুমাত্র তঁার রাজনৈতিক মতবাদ, অবস্থানের প্রতিফলন বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত না করলেই হল।

সদ্য প্রধান বিচারপতি বি. আর. গভই জানিয়েছেন, অবসরের পর সরকারি পদগ্রহণ বিচারপতিদের ক্ষেত্রে কাম্য নয়। সেক্ষেত্রে বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই মন্তবে‌্যর আগেই এক বিচারপতি স্বেচ্ছাবসর নিয়ে লোকসভায় প্রার্থী হন। এর আগে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি অবসরের পর রাজ্যসভার সাংসদ হন। ফলে সক্রিয় রাজনীতি করা একজন বিচারপতি নিয়োগের প্রয়োজন হল কেন? যোগ্য প্রার্থীর কি আকাল? কলেজিয়ামের এই সিদ্ধান্তে কিন্তু বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতার দিকেই আঙুল তুলছে।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement