Advertisement
Advertisement
London

শরণার্থী বেড়েই চলেছে ব্রিটেনে! অভিবাসন রোধে পূর্বসূরিদের পথে হাঁটবেন স্টারমার?

এ-বছরই আগমন প্রায় সাড়ে ২৭ হাজারের!

British Prime Minister upset as nearly 50,000 refugees cross English Channel into London
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:August 14, 2025 4:22 pm
  • Updated:August 14, 2025 4:22 pm   

কিয়ের স্টারমার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সমুদ্রপথে শরণার্থী এসেছে প্রায় ৫০ হাজার। যার মধ্যে এ-বছরেই আগমন প্রায় সাড়ে ২৭ হাজারের!

Advertisement

সরাসরি ধরা পড়লে এককোপে গর্দান যাবে। আপাত ‘স্বল্প’ শাস্তি অবশ‌্য দিন দশেকব‌্যাপী বিচার প্রক্রিয়া শেষে ফাঁসি। রাজদণ্ড। আর আত্মসমর্পণ করলে ‘অ‌্যাক্ট অফ গ্রেস’– গ্রেফতারি ও হাজতবাস। জলদস্যু মোকাবিলায় ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় জেমস, প্রথম জর্জের মতো প্রখ‌্যাত রাজারা এমনই সব ঘোষণাপত্র জারি করেছিলেন। এমনকী, ‘স্যর’ রবার্ট হোমসের মতো ‘প্রাইভেটার্স’-রাও রাজপুত্র কর্তৃক অনুমোদিত হন জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিরোধে। ‘দসু‌্য’– যারা মূলত কোনও দেশের সম্পদ লুট করে অন‌্য দেশে চড়া দামে বিক্রি করে মুনাফা লোটে– তাদের প্রতিরোধে সতত সক্রিয় ছিলেন সেকালের সব ‘হিজ হাইনেস’। কিন্তু মানুষ যখন স্বদেশের ঝঞ্ঝায় অস্তিত্বচু‌্যতির আশঙ্কায় ‘কর্ড লাইন’-এ পাড়ি দেয় অন‌্য দেশে, শরণাপন্ন হয় সমুদ্রর– যার সার্বভৌমত্ব আদতে কোনও রাষ্ট্রের অধীন নয়– তাদের কি ‘দসু‌্য’ বলা সমীচীন?

এ-প্রশ্নের উত্তর যেন ‘হঁ‌্যা’ ও ‘না’-এর অদৃশ‌্য সেতু কামড়ে পড়ে থাকে কোথাও। বিশ্বনাগরিকত্বের দৃষ্টিতে দেখতে গেলে যে-কোনও দেশচু‌্যত মানুষই অন‌‌্য রাষ্ট্রে ঠঁাই পাওয়ার হকদার। অন‌্যদিকে যে-দেশে সে আসছে, সে-দেশেরও নিজস্ব কিছু আর্থ-সামাজিক প্রতিবন্ধকতা রয়ে যায় বিপুল সংখ‌্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে। সোজা পথে হয় না বলেই বঁাকা পথে, অসরকারি-অবৈধ উপায়ে ইন্ডিয়া থেকে লন্ডনে অমানুষিক কষ্ট ও খরচসাধ‌্য পাড়ি জমাতে বাধ‌্য হয়েছিল হার্ডি সিং, মানু রান্ধওয়া-রা। ‘ডাঙ্কি’ সিনেমার সৌজনে‌্য কঠিন-ভয়াল-চোরাগোপ্তা অথচ নিরুপায় সফরের সঙ্গে এতদিনে অামরা সবাই কমবেশি পরিচিত। এই মুহূর্তে এই ‘ডাঙ্কি’ সফর তথা অবৈধ পথে শরণার্থীদের নিরুপায় যাত্রা বিশ্বের প্রায় সর্বত্র দৃশ‌্যমান।

যেমন, রোহিঙ্গারা। বিশ্ব রাজনীতিতে মায়ানমারের আরাকানের এই জাতি রীতিমতো একটি ‘ইসু‌্য’ হয়ে উঠেছে জলপথে বাংলাদেশ পেরিয়ে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের জন‌্য। সেই অনুপ্রবেশ সবসময় সফল হয় না; প্রাণের ভয়, রোগভোগের প্রাত‌্যহিক ছোবল সেখানে নিত‌্যসঙ্গী। প্রাণ হাতে সপরিবার তুরস্ক থেকে গ্রিসে আসতে এজিয়ান সাগরে সলিল সমাধি হয় ছোট্ট আয়লান কুর্দির। তার মৃতদেহের ‘ভাইরাল’ ছবি অস্বস্তির প্রলেপে বহুদিন জড়িয়ে রেখেছিল বিশ্বকে। অভিবাসীদের অসহায়তা ও অভিবাসনে রাষ্ট্রের সদিচ্ছা– দুয়ের সম্পর্ক বরাবরই ব‌্যস্তানুপাতিক।

নতুন করে তা চোখে পড়ছে কিয়ার স্টারমার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হওয়ার পর। অভিবাসন ইসু‌্যতে তিনি কড়া। তাই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তঁার ‘চোখ এড়িয়ে’ ইংলিশ চ‌্যানেল পার করে প্রায় ৫০ হাজার শরণার্থী লন্ডনে পা রেখেছে, যার মধে‌্য সাড়ে ২৭ হাজার এ-বছরেই! প্রক্রিয়া অব‌্যাহত। অবৈধভাবে তাদের ইংলিশ চ‌্যানেল পারে সাহ‌ায‌্য করছে ব্রিটিশ চোরাচালানকারীদের ছোট ছোট বোট। বিরক্ত স্টারমার। অভিবাসন রোধে কি এবার পূর্বসূরিদের পথে হঁাটবেন তিনি? সময়-সমুদ্রের গর্ভে লুকিয়ে উত্তর।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ