Advertisement
Advertisement

বাংলা ও বাঙালি, দামি ভাষা সস্তা জীবন

বিভিন্ন এলাকার মানুষের কথা বলার ভঙ্গি, ‘অ্যাকসেন্ট’ আলাদা হওয়াই দস্তুর।

Crisis of Bengali and Bengali language
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:August 9, 2025 4:25 pm
  • Updated:August 9, 2025 4:25 pm  

বাঙালি ও বাংলা ভাষা আক্রান্ত। শুধু অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই নয়, ‘বাংলাদেশি’ চিহ্নিত করে পরিযায়ী পশ্চিমবঙ্গবাসী শ্রমিক খেদানোর বিষয়টিও এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার মানুষের কথা বলার ভঙ্গি, ‘অ্যাকসেন্ট’ আলাদা হওয়াই দস্তুর। কিন্তু তা ‘লক্ষ‌্য ’ করে তাদের একঘরে করে দেওয়ার রাজনৈতিক মেরুকরণের কৌশল সমর্থনযোগ‌্য নয়। লিখছেন জয়ন্ত ঘোষাল

Advertisement

দিল্লিতে অফিসে ঢুকতেই হিন্দিভাষী প্রবীণ সম্পাদক রসিকতা করে বললেন, বাংলায় এখনও কথা বলছ? না কি রাজধানীতে বাংলা বলতে ভুলে গেলে? পাল্টা রসিকতা করেই বললাম, ‘বাংলা’ বলে আলাদা কোনও ভাষা এই অখণ্ড ভারতে আছে না কি? ‘বাংলা’ বলে তো কোনও ভাষাই নেই। ‘বাংলা’ মানেই তো বাংলাদেশীর ভাষা! বাঙালি মানেই তো ‘বাংলাদেশি’!
‌রসিকতাটা ওখানেই সমাপ্ত।

এই বিজেপি-সমর্থক প্রবীণ সম্পাদক-সাংবাদিক আমার দীর্ঘ দিনের বন্ধু, সাবেক বন্ধু। তবে রাজধানীর আনাচকানাচে এবার ঘুরতেফিরতে টের পেলাম ‘বাংলা’ এবং ‘বাঙালি’ নিয়ে আলোচনাটি কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই; এটি এখন সর্বভারতীয় মঞ্চে বড় আলোচ্য বিষয়।

প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া হয় সে তো নিউটন সাহেব বলেই গিয়েছেন। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখিয়ে দিলেন– প্রত্যেক রাজনৈতিক আঘাতের বিরুদ্ধে প্রত্যাঘাত সমান নয়, কয়েক গুণ বেশিও হতে পারে। অতএব রাজ্যজুড়ে জেলায়-জেলায় ভাষা আন্দোলন শুরু হয়েছে।‌ সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে সংসদে এবং সংসদের বাইরে তৃণমূল কংগ্রেস প্রচার অভিযানে নেমেছে। ‘বাঙালি’ এবং ‘বাংলা ভাষা’ আক্রান্ত। শুধু বাংলা ভাষার অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই নয়, ‘বাংলাদেশি’ চিহ্নিত করে পরিযায়ী আদতে পশ্চিমবঙ্গবাসী শ্রমিকদের বিতাড়িত করার বিষয়টিও এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

কখনও গুরগাঁও, কখনও উত্তরপ্রদেশ, কখনও খোদ রাজধানী দিল্লিতে। বিজেপি যত বলছে যে বাংলাদেশি মুসলমান অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া করতে হবে, ততই এই সংখ্যালঘু বাঙালি সমাজ আরও বেশি করে নিরাপত্তার অভাবহীনতায় ভুগছে। ভোটার-তালিকার নিবিড় সংশোধনের প্রক্রিয়া বিহারের মতো পশ্চিমবঙ্গে শুরু হবে শুনেই ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম তোলার হিড়িকও বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুণ। সব মিলিয়ে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গ এখন ‘হট বেড’-এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। তবে এই বাংলা ভাষা এবং বাঙালি জাতির পরিচয়সত্তা নিয়ে দিল্লির ভ্রান্ত রাজনীতি সম্পর্কে আমাদের অবহিত হওয়া আশু প্রয়োজন।

ভারতচন্দ্র বঙ্গদেশের ভাষাকে‌ ‘বাংলা ভাষা’ নামে চিহ্নিত না করলেও মোটামুটি তঁার সময় থেকেই এ ভাষার নাম বাংলা ভাষা হিসাবে পরিচিত। তার প্রমাণ মেলে পর্তুগিজ এবং ইংরেজদের রচনা থেকে। ভারতচন্দ্র যে বাংলা ব্যাকরণ ও শব্দকোষ রচনা করেছিলেন তাতে ‘বেঙ্গালা’ শব্দ ব্যবহার করেন। ১৭৪৩ সালে‌ এই বই মুদ্রিত হয় লিসবন শহর থেকে। ভারতচন্দ্র মারা যাওয়ার সতেরো-আঠারো বছর পরে ন্যাথানিয়েল হ্যালহেড যখন তঁার বাংলা ব্যাকরণ প্রকাশ করেন তখন তিনি এ-ভাষাকে বলেছেন, ‘বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ’।

বঙ্গদেশের ভাষার নাম কখন থেকে বাংলা ভাষা হল আর এই ভাষায় যারা কথা বলে তাদের কখন থেকে বাঙালি বলা হয় সেটা জানলে– কোন অর্থে ‘বাঙালি সংস্কৃতি’-র কথা বলি সেটা বোঝা সহজতর হয়। চর্যাপদ যে ভাষায় লেখা হয়েছিল তাকে ঠিক বাংলা ভাষা বলা যায় না। বরং বাংলা ভাষার পূর্ববর্তী ভাষা বলা সংগত। আর্যদের ভাষা নানারকমের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলে যে চেহারা পেয়েছিল, এটি ছিল সেই ভাষা।‌ ভাষাতাত্ত্বিকদের মত, আর্যদের মুখের ভাষা ছিল প্রাকৃত।‌ সেই প্রাকৃত আবার উত্তর ভারতের এক এক অঞ্চলের আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ভিন্ন নাম নিয়েছিল। পূর্ব ভারতে প্রচলিত প্রাকৃতের নাম দেওয়া হয় ‘মাগধী প্রাকৃত’।‌

বঙ্গের প্রাকৃত ‘গৌড়ী প্রাকৃত’। এই প্রাকৃত ধীরে ধীরে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যে রূপ পেল তার নাম দেওয়া হয় ‘অপভ্রংশ’। অপভ্রংশের পরের পর্যায়ে তার নাম হয় ‘অবহট্‌ঠ’।‌ মোটামুটি সেই ভাষার নমুনা চর্যাপদে‌ দেখা যায়।‌ পঞ্চদশ শতকে লেখা ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’-কে আমরা বলি অহমিয়া এবং ওড়িয়ার প্রভাবমুক্ত খঁাটি বাংলা। কিন্তু তখনও এই ভাষার নাম ‘বাংলা’ ছিল না। আসলে, ভাষাকে ধর্মের ভিত্তিতে দেখা অনুচিত। এমনকী প্রদেশের স্ফটিকেও কি ভাষাকে ভৌগলিক সীমানায় বাধা উচিত? ‘সাহিত্য অকাদেমি’-তে ‌আগে ‘প্রাদেশিক সাহিত্য’ কথাটা ব্যবহার হত। পরবর্তীকালে প্রাদেশিক সাহিত্যের বদলে চালু হয় ‘ভাষাসাহিত্য’ শব্দটি।‌ যেমন আমরা সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বলি ‘ভাষা সাংবাদিকতা’।

ভাষার কোনও ভৌগোলিক সার্বভৌম সীমানা হয় না। একজন বাঙালি বাংলার বাইরেও
থাকতে পারে। একজন হিন্দিভাষী বাংলায় বহু বছর ধরে বসবাস করতে পারে।‌ ভাষাতত্ত্ববিদ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় যেমন বলেছেন‌, যে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারে তাকেই বাঙালি বলা যেতে পারে।‌ তবু নির্বাচনী রাজনীতির উদ্দেশ্যে ধর্মের সঙ্গে ভাষার বিভাজন‌ করা হচ্ছে।‌
উনিশ ও বিশ শতকে ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবোধ নতুনভাবে গুরুত্ব পায়। তার আগে বাঙালি মুসলিম সমাজে একদিকে সৈয়দ-পাঠান-মুঘল প্রভৃতি উচ্চ আশরফ শ্রেণিভুক্ত– আবার অন্যদিকে কৃষিজীবী শেখ, তন্ত্তজীবী জোলা, মৎস্যজীবী নিকারি, তৈলজীবী কলু প্রভৃতি নিম্ন আতারফ শ্রেণিভুক্ত গোষ্ঠী-বিভাগ সামাজিক আচার-আচরণে অনেক ক্ষেত্রে হিন্দু জাতি প্রথার অনুসরণে ব্যাষ্টি এবং সমষ্টিগত পরিচয়ের একটি প্রধান বাধা হয়ে দঁাড়ালেও– পরিবর্তিত রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিতে বাঙালি হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ধর্মীয় ঐক্যবোধ আত্মপরিচয়ের মূল‌ উপাদান হয়ে ওঠে।

হিন্দুর আত্মপরিচয় ধর্মীয় নামাবলির প্রয়োজন হয়নি।‌ কেননা তারা ধর্মীয় স্বরূপ আত্মগোপনের সুযোগ পেয়েছিল তার বাঙালি নামের স্বতঃসিদ্ধতায়। অন্যদিকে ইসলাম ধর্মের বৈদেশিক উৎপত্তি এবং ভারতে মুসলিম রাজশক্তির কেন্দ্রস্থানগুলোর বঙ্গদেশের বাইরের উপস্থিতি, মুসলিম রাজপুরুষদের বৈদেশিক বংশোদ্ভব– এসব নানা কারণে বঙ্গের বহিরাগত বাঙালি মুসলমানদের সমস্যা হয়। স্থানীয় মুসলিম জনসমষ্টি মুসলমান ও হিন্দু উভয়ের কাছেই শুধু মুসলমান হিসাবে বঙ্গের আঙিনায় ঠঁাই পায় কিন্তু বাঙালি হিসাবে ঘরের দাওয়ায় উঠে আসতে পারেনি। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।‌ আর তাই ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে একিনউদ্দিন আহমেদ দুঃখ করে বলেছিলেন– কলকাতায় হিন্দুদের ‘বাঙালি’ বলে অভিহিত করেন–
এমন সব মুসলমান আরব দেশীয় মহান ধর্মগুরুর ধর্ম বিশ্বাসে‌ বিশ্বাসী হয়ে অবাঙালি হয়ে
থাকত বঙ্গদেশে।

‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে মালদহে বসবাসকারী বাঙালিদের উপর দিল্লি পুলিশের অবর্ণনীয় অত্যাচারের ঘটনা আমরা ইতিমধ্যে প্রত্যেকে জেনে গিয়েছি। দিল্লি পুলিশ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর তোলা অভিযোগকে সম্পূর্ণ অসত্য বলে বিবৃতি দেয়। আমি চল্লিশ বছর দিল্লিতে সাংবাদিকতা করছি। দিল্লি কেন– কোনও রাজ্যের পুলিশকে মুখ্যমন্ত্রীর তোলা অভিযোগ মিথ্যে– এহেন বিবৃতি দিতে দেখিনি। তা সত্ত্বেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করলেন? তিনি আক্রান্ত মালদহের পরিবারকে কলকাতা নিয়ে এসে ববি হাকিম এবং কুণাল ঘোষের উপস্থিতিতে সাংবাদিক বৈঠক করালেন। ওই পরিবার বললেন, মুখ্যমন্ত্রী সত্যি বলছেন। সুতরাং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কুশলী রাজনীতির কাছে পরাস্ত বিজেপি রাজনীতি।

নির্বাচনী রাজনীতির সাফল্য-ব্যর্থতা বর্তমান আলোচনার বিষয়বস্তু নয়। শুধু বলতে চাই– ভাষা খরস্রোতা নদীর মতো। যা যুগ-যুগ ধরে প্রবাহমান। বিভিন্ন এলাকার মানুষের কথা বলার ভঙ্গি, ‘অ্যাকসেন্ট’ আলাদা হতে পারে। এক ভাষার সঙ্গে আর-এক ভাষার অনেক সময় সংমিশ্রণ হয়– বলা যেতে পারে ভাষার অভিস্রবণ। ইংরেজি, পর্তুগিজ ভাষা থেকেও তো বাংলা ভাষায় শব্দ এসেছে। তাকে আমরা বলেছি বাংলায় ‘বর্ণীকরণ’।

হিন্দি চ্যানেলে যখন প্রথম কথা বলতাম, তখন এক হিন্দিভাষী প্রবীণ সাংবাদিক আমাকে বলেছিলেন, বাংলা ‘অ্যাকসেন্ট’-এ হিন্দি বলা নিয়ে কখনও কোনও মনের মধ্যে হীনমন্যতাবোধ রেখো না। এই চ্যানেলে কোনও কাশ্মীরি যখন তার মতো হিন্দি বলে, কোনও তেলুগুভাষী যখন হিন্দিতে কথা বলে– তার হিন্দি, অথবা হায়দরাবাদ বা লখনউয়ের হিন্দি– সবার বলার ধরন আলাদা। ঠিক সেরকম বাঙালি মুসলমানরা যে-বাংলা বলে তাতেও কিন্তু অনেক আরবি-ফারসি শব্দ মিশে যায়। বাঙালি মুসলমানদের ভাবনা কিন্তু বাংলায়।

ভাষার এই বৈশিষ্ট‌্য না-বুঝলে ভাষা সাম্প্রদায়িকতার জন্ম হয়। ভাষা সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হয়ে ওঠে। ভাষাকে সাম্রাজ্যবাদী অস্ত্র হিসাবে ক্ষমতা কায়েম করতে ব্যবহার করা হয়। এমনকী, মুসলিম এবং বাঙালির দ্বৈতসত্তার যে-বিরোধ সেটাও সঠিকভাবে বোঝা প্রয়োজন। আশরাফ প্রভাবিত সমাজে ফারসি এবং উর্দুর প্রতিপত্তি থাকায় বাংলার অবহেলা ছিল। বাঙালি মুসলিম ইতিহাসের গবেষকরা বলছেন– ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারি ‘শহিদ দিবস’ পর্যন্ত বাঙালি মুসলিমদের মাতৃভাষা বাংলার দাবিকে স্বতঃসিদ্ধ বলে মনে করা হয়নি। পরে বলা হল, ’১৬ ও ’১৭ সালের মুসলিম বাংলা পুঁথি লেখকরা বাংলা ভাষার পক্ষে চুড়ান্ত রায় দেন। বাঙালি মুসলিম জনমত ধীরে-ধীরে বিশ্বাস এবং শক্তি অর্জন করে।

মুসলিমদের মধ্যেও দিশাহারা দ্বন্দ্ব এসেছিল। দুঃখ করে অনেকে বলেছিলেন, আমাদের বঙ্গীয় মুসলমানদের কি কোনও ভাষা নেই? তাহলে বঙ্গভূমিতে বাস করতে হলে ‘বাংলা’ ভাষাকে ‘মাতৃভাষা’ বলে স্বীকার করলে দোষ কী? এখানে বাঙালি মুসলমানের মাতৃভাষা উর্দু নয়, বাংলা ভাষা। উচ্চ শ্রেণির মুসলিমের পক্ষে বাংলা ভাষা গ্রহণে আপত্তি ছিল। নিম্ন শ্রেণির মুসলমানের সঙ্গে আবার বাংলা ভাষার সম্পর্ক বেশি ছিল। নিম্ন সমাজ ফারসি এবং উর্দু‌ শিক্ষা অপারগ হয়েছিল। এখন, এত বছর পরে, এই বিবাদ উসকে দিয়ে হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িকতা সম্পূর্ণ পরিত্যাজ্য।

‘ঐতিহাসিক’ যদুনাথ সরকারের কথা দিয়ে শেষ করি। তিনি লিখছেন, “যাহারা বাঙলাকে নিজের দেশ মনে করিয়াছেন, যাহারা ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ এই শক্তি সঞ্চয় করিয়া এই সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা দেশ ভিন্ন যাহারা অনন্যামাতৃক, এদেশ ভিন্ন যাহাদের অন্যত্র গতি নাই তাহারাই বাঙালি। আর তাহাদের ভাষাই বাংলা। জাতি বা ধর্মের ওপরে ভাষা নির্ভর করে না। একপক্ষে‌ এই ভাষা বাঙালির সৃষ্টি। অপর পক্ষে ইহা বাঙালির অন্তরের পোষক। বাঙালির বিশেষ গুণ অন্তরতম ভাব, চিন্তা, তেজ এককথায় বাঙালির বাঙালিত্ব শুধুই বঙ্গ সাহিত্যের ভেতর দিয়ে আসিতে পারে। তাই আজ, পাটনা লখনউ, এলাহাবাদ, নাগপুর, লাহোর এমনকি সুদূর কুয়েত প্রবাসী বাঙ্গালীরাও বাঙালি রহিয়াছেন।”‌

খুব ভাল লাগে, যখন যদুনাথ সরকার মনে করিয়ে দেন, নদীর জন্য ইঞ্জিনিয়ারের দরকার নেই। তবে খাল কাটতে ইঞ্জিনিয়ার লাগে।‌ নদী নিজের পথ নিজে বেছে নেয়।‌ ভাষাও ঠিক তেমনই। সমস্ত বাঙালির প্রকৃতি অনুমোদিত ভাষা বাংলা। মাছকে কি সাঁতার শেখাতে হয়? ঠিক সেভাবেই আমরা বাঙালিরা বাংলা ভাষা শিখি। বাংলা ভাষার চর্চা করি। এখন সেই ভাষার
উপর আঘাত এলে আমাদের আত্মরক্ষার তাগিদে প্রতিবাদমুখর হওয়া ছাড়া আর কোনও পথ দেখি না।

(মতামত নিজস্ব)
লেখক সাংবাদিক
[email protected]

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement