জার্মানির তরুণ প্রজন্ম মেদবহুল। কারণ, বাইরে খাবার অভ্যাস। অথচ এতে অর্থক্ষয় বেশি, শরীরেরও ক্ষতি। আসলে নোলা যে বড় বালাই!
কী করে রোগা হওয়া যাবে, বাড়তি মেদ কেমন করে অপসারিত করতে হবে, তা নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় বাঘা-বাঘা পেজ-থ্রি সেলেব প্রায় নিত্য জানান, রোগা হওয়ার ফরমুলা। এবং তৎক্ষণাৎ কোনও-না-কোনও বিনোদন পোর্টাল ‘খবর’ করে দেয় তা। খুব বড় তারকার ব্যাপার হলে, প্রথম সারির সংবাদপত্র এবং টিভি চ্যানেলও মাঝেমধ্যে হামলে পড়ে। শাহরুখ খান দিনে নাকি একবার খান। বন্ধুদের বাড়ি গেলে যা হয়, তা-ই খেয়ে নেন, ডায়েট বাতিক নেই, তবে সঙ্গে হালকা ব্যায়াম করেন। ‘দঙ্গল’ সিনেমার প্রয়োজনে আমির খানকে অনেক কেজি ওজন বাড়াতে হয়েছিল। পরে সে-ওজন যখন কমাতে শুরু করলেন, তখনকার সময়ের ঘটনা।
কোনও একটি পার্টিতে গিয়েছেন। তখনও খাওয়ার সময় ধ্বনিত হয়নি, কিন্তু আমির খেতে চাইলেন। নিজের খাবার নিজেই ক্যারি করেন। গল্প করতে-করতে যখন খেতে থাকলেন, অন্যেরা বিস্মিত হয়ে বলল– ‘তুমি কি ওজন কমাচ্ছ না কি বাড়াচ্ছ?’ এর কারণ, আমির প্রচুর খাচ্ছিলেন। সাধারণের বিশ্বাস, ওজন কমানোর জন্য অল্প খেতে হয়। আমির পরে এর ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন– ‘যেসব খাবারে ওজন বাড়ে সেসব আমি খেতামই না। সারা দিনের কাজের জন্য যে-পরিমাণ শক্তি লাগে, তা সংগ্রহ করার জন্য আমি কার্বোহাইড্রেটের উপর জোর দিয়েছিলাম। সে-কারণে দেখে মনে হত, বেশি খাচ্ছি।’ অক্ষয়কুমার আবার শরীর নিয়ে এত সযত্ন ও খুঁতখুঁতে যে, বেশ কয়েক কেজি ওজন বাড়িয়ে কোনও চরিত্র করতে বললে– করবেনই না।
ওজন কমানোর জন্য ‘ওয়ান মিল আ ডে’ এখন খুব জনপ্রিয়। করন জোহর বলেছেন, তিনি ‘ওম্যাড’ ফলো করে উপকৃত। আলিয়া ভাট চিনি শুনলে অঁাতকে ওঠেন। মাধবন একই খাবার গরম করে দ্বিতীয়বার খেতে চান না। সবই শরীরের স্বার্থে। আমভারতীয় ‘রিল’ আকারে এসব অমৃতবাণী রীতিমতো দেখে, ‘লাইক’-সহ অনুসরণও নাকি করে। কিন্তু রাস্তাঘাটে স্ট্রিট ফুডের দোকানের সামনে ভিড় দেখলে, তথাকথিত ‘জাঙ্ক’ খাবারের বড়-বড় জয়েন্টে লোকসমাগম লক্ষ করলে, প্রশ্ন জাগতে বাধ্য– এমন দোরোখা বিধান কী করে মেনে চলা সম্ভব? বাড়ির খাবার বা হেলদি ডায়েটের জয়গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কি বাইরের খাবার আস্বাদনের নিরীক্ষা চলতে পারে? সবচেয়ে বড় কথা, বাইরের খাবার মনের তৃপ্তি ঘটালেও পকেটের তো তৃপ্তি ঘটায় না, বাইরে খেতে কম-বেশি অর্থক্ষয় আছেই। আবার, ঘরের পুষ্টিবর্ধক খাবার বা জিমগমন এসবেও অর্থ দরকার। তবে কি খরচ কমছে না বাড়ছে? ঘরে-বাইরে নোলা সামলাতে পকেট তো ক্লান্ত!
সাম্প্রতিক একটি খবরে জানা যাচ্ছে– জার্মানির তরুণ প্রজন্মের একটি বড় অংশ মেদবহুল। শাকসবজি খাওয়ার প্রবণতা কম। সুগার-হেভি ডায়েটে ঝুঁকে সবাই। গোদের উপর বিষফেঁাড়া: এতে খরচও হচ্ছে বেশি। ‘খাওয়ার জন্য বঁাচা, না বঁাচার জন্য খাওয়া’ এমন দ্বিমুখী সমীকরণে নোলা-রুচি ভাগ হয়ে গেলে অবশ্য ‘রিল’মেকারদের পোয়া বারো। ‘রিল’ দেখা হবে বেশি, কাজ হবে কম!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে ফলো করুন
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.