Advertisement
Advertisement
Assam

‘ল্যান্ড জিহাদ’! অসমে ভিন্ন ধর্মে জমি বিক্রি করতে লাগবে অনুমতি, কেন এমন তুঘলকি নিয়ম?

হিন্দু-মুসলিম মেরুকরণের রাজনীতি বিজেপির ডিএনএ-তে।

In Assam no one of a different religion can sell land without the permission of the administration
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:August 29, 2025 6:07 pm
  • Updated:August 29, 2025 6:07 pm  

অসমে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া ভিন্ন ধর্মে কেউ জমি বিক্রি করতে পারবে না। ‘বৈধ’ ভারতীয় নাগরিকত্ব থাকলে কেন এমন তুঘলকি নিয়ম?

Advertisement

সীমান্ত এলাকায় জনবিন্যাস বদলে যাচ্ছে। স্বাধীনতা দিবসের দিন লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে এমনই মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার আগে-পরে বিভিন্ন রাজ্যেই এ নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে। বিশেষত, বিজেপি-শাসিত রাজ্যে। এর আগে বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে ভোটার-তালিকার ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধনী’-র কাজ শুরু হয়েছিল। এবার এক ধাপ এগিয়ে বড় ঘোষণা করল অসমের হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সরকার। তাদের সিদ্ধান্ত, এবার থেকে আর প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া ভিন্ন ধর্মে জমি বিক্রি করা যাবে না।

প্রধানমন্ত্রীর ভাষণেই ‘ল্যান্ড জেহাদ’-এর মতো সমস্যা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্বেগের ইঙ্গিত মিলেছিল। সেই সূত্র ধরেই পদক্ষেপ করেছে অসম সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, রাজ্য এমনিতেই সংবেদনশীল। তাই এখানে জমি হস্তান্তরের বিষয়টিতে কড়া নজর রাখা উচিত। অসমের কোনও বাসিন্দা যদি তঁাদের জমি স্বেচ্ছায় ভিন্ন ধর্মের ব্যক্তির কাছে বিক্রি করতে চান, সেক্ষেত্রে আগে পুরো বিষয়টি সরকারকে জানাতে হবে। প্রশাসন বিষয়টিতে নজর রাখবে। খতিয়ে দেখা হবে– যিনি জমি কিনছেন তঁার রোজগারের উৎস কী। ওই জমি বিক্রি করা হলে স্থানীয় অঞ্চলে সামাজিক সংহতি বজায় থাকছে কি না, তাও পর্যবেক্ষণের আওতায় থাকবে, এবং তাতে ‘সবুজ সংকেত’ পাওয়া গেলে– তবেই ভিন্ন ধর্মে জমি বিক্রির ছাড়পত্র দেবে সরকার।

জমি-বাড়ি, সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়ের নানাবিধ সরকারি নিয়ম রয়েছে। আধার কার্ড থেকে শুরু করে অন্য নথি জমা দিতে হয় রেজিস্ট্রি করার আগে। ভারতীয় নাগরিক ছাড়া কেউ সম্পত্তি কিনতে গেলে নানা বাড়তি নথি লাগে। সেক্ষেত্রে ধরে নেওয়া যেতে পারে, এক্ষেত্রে ‘লক্ষ্য’ সংখ্যালঘু শ্রেণির মানুষ। কিন্তু কোনও ‘বৈধ’ ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে, তিনি যে-ধর্মেরই হোন না কেন, সম্পত্তি কেনাবেচায় সরকারের আগাম অনুমতি নিতে হবে কেন? এটা তো নাগরিকের অধিকার। কোনও সরকার কি ধর্মের ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে? আইনি ব্যাখ্যায় এর সমর্থন করা সম্ভব নয়। এর আগেও এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। যা খারিজ করে দিয়েছিল গুয়াহাটি হাই কোর্ট। এবং কেউ যদি আইনি সুরাহা চান, তাহলে ফের সরকারের মুখ পুড়তে পারে।

দ্বিতীয়ত, অসমের মুখ্যমন্ত্রী খোলাখুলি দাবি করেছেন, অনুপ্রবেশকারীরা জোর করে জমি কিনে বসবাস শুরু করেছে। ‘অনুপ্রবেশ’ আটকানোর দায়িত্ব তো সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফের। যা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীন। কেন্দ্রেও ক্ষমতায় হিমন্তের দল বিজেপি। তাহলে সেজন্য কেন্দ্রের উপর চাপ তৈরি না-করে কীভাবে সরকার এমন বেআইনি ও তুঘলকি সিদ্ধান্ত নিতে পারে! আদতে, হিন্দু-মুসলিম মেরুকরণের রাজনীতি বিজেপির ডিএনএ-তে। উন্নয়নের চেয়েও তাই এই ধরনের বিভেদকামী পদক্ষেপ করে ফায়দা তোলা অসম সরকারের লক্ষ্য়। এর ফলে সামাজিক তন্তু দুর্বল হয়ে পড়ছে, রক্তাল্পতায় ভুগছে– তা কি কেউ বুঝতে পারছে না।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement