Advertisement
Advertisement
Repo Rate

রেপো রেট কমানো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত, আখেরে লাভ অর্থনীতির

আরবিআই যে-সুদের হারে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ দেয় তাকে ‘রেপো রেট’ বলে।

repo rate cut positive step of RBI
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:June 7, 2025 8:44 pm
  • Updated:June 7, 2025 8:44 pm  

রেপো রেট কমায় যদি ইএমআই কমে বাজারে অতিরিক্ত চাহিদা তৈরি হয়, মূলধন সস্তা হওয়ায় বাড়তি লগ্নি আসে, আখেরে লাভ অর্থনীতির।

Advertisement

বছরের তৃতীয় মুদ্রানীতি সংক্রান্ত বৈঠকে বড় চমক দিল রিজার্ভ ব‌্যাঙ্ক। তারা এক ধাক্কায় রেপো রেট ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে দিল। এতটা কারও প্রত‌্যাশায় ছিল না। এর অাগে ফেব্রুয়ারিতে রিজার্ভ ব‌্যাঙ্ক ২৫ বেসিস পয়েন্ট রেপো রেট কমিয়েছিল। এপ্রিলের মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠক থেকেও রিজার্ভ ব‌্যাঙ্ক ২৫ বেসিস পয়েন্ট রেপো রেট কমায়। সব মিলিয়ে বর্তমান বছরের প্রথম ছ’মাসেই রেপো রেট কমে গেল ১০০ বেসিস পয়েন্ট।

রিজার্ভ ব‌্যাঙ্ক যে-সুদের হারে বাণিজ্যিক ব‌্যাঙ্কগুলিকে ঋণ দেয় তাকে ‘রেপো রেট’ বলে। রেপো রেট ১০০ বেসিস পয়েন্ট কমায় এই সুদের হার সাড়ে ছয় শতাংশ থেকে কমে সাড়ে পাঁচ শতাংশ হয়ে গেল। ফলে মূলধন সস্তা হল। শিল্পের প্রধান উপাদান মূলধন। স্বাভাবিকভাবেই বাজারে মূলধন সহজলভ‌্য হলে লগ্নি বাড়ার কথা। সাধারণ মধ‌্যবিত্তর কাছে প্রাথমিকভাবে রেপো রেট কমার তাৎপর্য হল গৃহঋণ, গাড়ির ঋণে ইএমআই কমবে। অবশ‌্যই এটা খুশির খবর। ইএমআই কমলে বাড়ি, গাড়ি-সহ সমস্ত ভোগ‌্যপণ্যের চাহিদা বাড়ে। ইএমআই আজকাল মধ‌্যবিত্তর ভোগব‌্যয়ের বৃত্তটিকে অনেক বড় করে দিয়েছে। শুধু বাড়ি, গাড়ি কেন, ইএমআইয়ের দৌলতে এখন যে কোনও মহার্ঘ পণ‌্যই সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে।

আবার মূলধন সস্তা হওয়ার নেতিবাচক দিকও রয়েছে। মূলধন সস্তা হওয়া মানে বাণিজি‌্যক ব‌্যাঙ্কের তাদের সব ধরনের মেয়াদি আমানতে প্রদেয় সুদের হার কমানো। স্থায়ী মেয়াদি আমানতে সুদ কমানোর ধাক্কাও আবার একাংশ মানুষের ঘাড়ে এসে পড়ে। যাদের সংসার চলে ব‌্যাঙ্কে জমা টাকার সুদে, তাদের পক্ষে সুদ কমার ধাক্কা সামাল দেওয়া সবসময় কঠিন হয়। সুদ কমায় বিশেষ করে প্রবীণ নাগরিকদের বিপন্নতা বাড়ে। তবে এই মুহূর্তে ভারতে চাহিদা ও শিল্পের সংকট অনেক বড়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্কযুদ্ধ শুরু করায় গোটা বিশ্বের সঙ্গে ভারতের অর্থনীতিও গভীর চ‌্যালেঞ্জের মুখে।

এই সময় মূলধন সস্তা করে লগ্নিকারীদের উৎসাহ দিতে না পারলে বিপদ আরও বাড়তে পারে। বিশ্বের অনেক দেশই সুদ কমাতে শুরু করেছে। ইএমআই কমার জেরে যেমন বাজারে অতিরিক্ত চাহিদা তৈরি হবে, তেমন মূলধন সস্তা হওয়ায় বাজারে বাড়তি লগ্নিও অাসবে। রেপো রেট কমার ফলশ্রুতিতে যদি সত্যিই বাজারে এই দু’টি ঘটনা ঘটে তা হলে তা ভারতের অর্থনীতির পক্ষে ইতিবাচক। কিন্তু তাত্ত্বিকভাবে যেটা সম্ভব, সেটা বাস্তবে সবসময় হয় না। রিজার্ভ ব‌্যাঙ্কের চেয়ারম‌্যান ঘোষণা করেছেন রেপো রেটের সঙ্গে সঙ্গে ব‌্যাঙ্কের নগদ জমার অনুপাতেও পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে আগামী নভেম্বরের মধ্যে ব‌্যাঙ্কব‌্যবস্থার মাধ‌্যমে বাজারে আড়াই লক্ষ কোটি টাকা নগদ ঢুকবে। বাজারে টাকার জোগান বৃদ্ধি যদি উৎপাদন না বাড়িয়ে মুদ্রাস্ফীতি ঘটায়, তাহলে রিজার্ভ ব‌্যাঙ্কের সব উদ্যোগই মাঠে মারা যাবে।

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement